“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১৮

ক্ষুধা

  ।। সুপ্রদীপ দত্তরায়।।


(C)Image:ছবি










কটা সর্বনাশা - সাত সমুদ্র ক্ষুধা তার অন্তরে ।
সামনে যা পাচ্ছে, তাই খাওয়া চাই ।
হাঁড়ির পান্তাভাত , দোকানের মিষ্টির থালা 
ফেরিওয়ালার ফল, পূজার ধূপ দীপ মালা
জগতের যা কিছু আছে, সব চাই
যেন মন্বন্তরের শতবর্ষ পূর্তি শেষে  
এবারে এসেছে উপোষ ভাঙ্গার পালা।
সামনে যে ফুলের বাগানটি ছিল 
ঐ কৃষকের ক্ষেত, কাগজের কল
ঝোপ, জঙ্গল, নদীর বাঁধ , বাঁধের জল
কাপড় ছাপার ছাঁচ, কবিতার খাতা 
আবর্জনা প্লাস্টিক ক্যাকটাস পাতা
সব, সব চাই তার ক্রমে ক্রমে ।
গৃহস্থের শান্তি, তুলসীতলায় সন্ধ্যা প্রদীপ 
নিঝুম দুপুরে পুকুর ঘাটে ছেলেটির ছিপ 
মায়ের বুক ভরা দুধ , সদ্যোজাতের  হাসি
মেঠোপথের গাছতলে রাখালিয়া বাঁশি
ঠাকুরদার স্নেহ , সাথে ঠাকুরমার ঝুলি
কবির কল্পনা, পাণ্ডুলিপি, মন্দিরের কাঁসি
কিছুই আর বাকি নেই এই মুহূর্তে ।
নারীর লজ্জা,  পুরুষের সাহস, প্রতিবাদী ভাষা 
শিক্ষার পাঠ,  উন্মুক্ত চিন্তা, স্বপ্ন, আশা, ভালবাসা
কবেই সুস্বাদু উপাদেয় হয়ে চলে গেছে পেটে
শ্রমিকের ভবিষ্যৎ নিধি, ব্যাঙ্কের মূলধনের টাকা 
বুদ্ধিজীবীর কলম, রাষ্ট্রতন্ত্রের চাকা
সব কিছু গ্রাস করেছে সেই  সর্বগ্রাসী ক্ষুধায়
এবার এসেছে সবশেষে,  বিবেকের পালা ।
বিবেক --- যিনি সত্যের পূজারী।
হে সত্যের পূজারী , 
হে মানব সমুদ্র মাঝে শক্তির আঁধার 
জাগতে রহো ---
আবারো বলি, সাধু --- সাবধান ।
 




কোন মন্তব্য নেই: