“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২

প্রশ্ন

 
 

 ।। , , ,  ইকবাল॥ 

        

(C)Image:ছবি

     








কে বলেছে প্রকৃতি বিমুখ 

যার ফলে যত দুর্যোগ ?  

তাহলে কে দিয়েছে বিছিয়ে  

আকাশলীনা বিস্তৃত ছায়া 

যার তল্লাটে জেগে উঠছে 

প্রজন্ম, উত্তর প্রজন্ম  

নিভৃত নিরবচ্ছিন্ন! 

 

বিঘ্নিত করেছি আমরা 

ঘরে ঘরে ভাতের সম্ভার 

গভীর সবুজ পাহাড়গুলো 

ব্যস্ত ছিল গুহায় গুহায়    

সাজাতে আমাদের তরে  

বর্ণিল ধ্যানকেন্দ্র 

আমাদের স্বপ্ন 

আমাদের সাধনা ছিল পরিব্যাপ্ত 

মানবের তরে- 

মানুষের মতো করে ! 

আমরা করেছি সেথায় 

কংক্রিটের কলোনি পত্তন !  

 

কথা ছিল 

জগতের সকল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে  

নির্ণীত হবে সকল প্রেমের অসুখ  

কথা ছিল  

সকল ল্যাবে হবে মানবিক উৎকর্ষের প্রয়োগ  

আজ কারা বানিয়েছে তা সাধনা নিধনের কারখানা ? 

তারপরও প্রকৃতি বিমুখ ?  

 

তোমার অরির তরে 

রেখেছ তল্লাটে ভরে 

সারিসারি কামান 

সর্বাধুনিক মেশিনগান 

গোলাবারুদের ঠেক 

প্রকৃতি তার সচল অনিলে 

জং থেকে রাখছে তা সামলে 

তাই দিয়ে করেছ যুদ্ধ ঘোষণা 

প্রকৃতির বিরুদ্ধে 

কে ডেকেছে তবে কন্যা নিধনের বন্যা ? 

 

তারপরও 

আলোকিত সূর্যের বাঁশির বিভাসে 

বটবৃক্ষের অমৃত মেঠো ছায়ায় 

বাড়বাড়ন্ত মাটির কায়া 

শোষণের হাতিয়ার শিয়রে জমা রেখে

পোহাচ্ছ নির্ঘুম রাত 

স্বপ্নে দেখছ নির্মল নিষ্কলুষ প্রভাত  

সকল দায় শুধু প্রকৃতির ! 

                 ১৮-০৮-২০২২। 

 

স্বদেশ আমার

।। জাহিদ রুদ্র ।।








এখন আর কিছু ঠিক রইল না 

যতবার চললাম মানুষ হয়ে ওঠার রাস্তায়

অমানুষ হয়ে গেলাম টের পাওনি

তুমি টের পাওনি বলে, 

অর্ধমানবের মতো শিম্পাঞ্জির খেলা দেখে হাততালি দাও

তারও দুঃখ আছে, মানুষ হয়ে উঠতে পারেনি 

যে সাদা ফানুস উড়িয়েছিলে, সুতোয় বাঁধা 

দু একটা গেরুয়া ও সবুজ রং এর ও ছিল 

ওরা যে এক একটা মরা লাশ -- তা কি জানতে ?

 

প্রিয়তমা, তুমি টের পাওনি বলে

উদাসীনতা আমাকে অমানুষ করে তুলেছে

তোমার সম্মানে মৌনতা নিয়ে লালকেল্লা

তার প্রতিটা কিলায় লাইভ টেলি-কাস্ট চালায় 

বিলকিসরার স্বাধীনতা

গোধরা কনসাইন্টমেন্টে!

 

প্রিয়তমা, জানি তোমার গলা শুকিয়েছে 

মহোৎসবের অমৃত পানে

আজাদী, জল জীবন কেড়ে নেয় বিনা দ্বিধায় ---

মন্বন্তর থেকে ছিয়াত্তরতম স্বাধীনতা

ফুল এপিসোডে ফারাক অবশ্যই

ক্ষুধা মানুষ খেয়েছিল আর আজ রাজনীতি জীবন।

 

হোক না খোলা সব পতাকা

একবার তোমার মুখে হাসি দেখে যাই প্রিয়তমা ,

লিখা হোক যত মহাসভা সংবিধান 

উড়ুক যত ধর্ম পতাকা 

শিকল ভাঙ্গবে স্বদেশ আমার ।

 


মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২

প্রাণস্মিতায় বিষাদ সন্ধ্যা

 ।। মিঠুন ভট্টাচার্য।।

(C)Image:ছবি









চোখের লেপটে যাওয়া কাজলে
মনের সীমানা অবসন্ন,
চিলেকোঠায় জমে থাকা মেঘে
বিকেলটা
  ক্লান্ত,
তখন সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়ে
প্রান্তদেশে।
কোনও
 কথা হয়না......
নির্বাক সন্ধ্যা নামে শরীরে।
সন্ধ্যা আরতির স্তবকে স্তবকে নিবেদন -
সকল ব্যথা,
 যন্ত্রণা, অপমান যত
মুছে নিয়ে যাক
অমাবস্যা রাত।
 

রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২

একটি অঙ্কুরিত জীবন


।। জাহিদ রুদ্র ।।













শর্ত ছিল

জীবন্ত কবিতা নিয়ে আসলে প্রস্তাব গ্রহণ করব

প্রান্তিক কবিদের দিয়ে শুরু সব কবিকে বলেছি

স্থানীয়রা বলল,

আমি এখনো চেষ্টা করে জীবন্ত কবিতা লিখছি।

 

বিদেশীরা বলল,

কবির জীবন্ত কবিতা নেই।ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করো

মৃত মানুষকে জীবিত করা সম্ভব!

আমি চেম্বারে ধাক্কা দিলাম আর ভেতর থেকে একটা আওয়াজ হল-

জীবন্ত কবিতা নেই, ফ্রিজে আছে জীবন্ত হৃদয়

তুমি এটা দেখতে পারো।

 

 আমি অসহায় হয়ে মন্ত্রীকে বললাম,

 স্যার, আপনি জীবন্ত মানুষ বিক্রি করেন

 একটি জীবন্ত কবিতা বিক্রি করবেন?

 - ধুর! ছাই! আমি শুধুমাত্র জীবিত দেশ বিক্রি করি

 জীবন্ত নারীদের কারখানা আছে বলে ব্যবসায়ীরা

 নারী কবিতা থেকে আলাদা নয়।

 

 সবার কাছে গেলাম

 কোম্পানির মালিক থেকে দেশের মালিক

 জীবন্ত কবিতা পেলাম না

 

তাই এসব বিষয়ে খেয়াল রাখা প্রয়োজন

চরের জমি রন্টুর ছেলে মন্টুর দখলে

শোকে আমার বাবা লক্ষীবাজার রোডে নৈশ প্রহরী হিসেবে চিৎকার করে বললেন--

আমি জেগে আছি...সবাই ঘুমাতে যান।

 

দুঃখের গাড়িতে উঠে বিষণ্ণ বাতাস নিয়ে ফিরলাম

একজন পোস্টম্যান এসে আমাকে একটা চিঠি দিল

আমি দুঃখিত নই, কিন্তু আমি একটি জীবন্ত কবিতা পেয়েছি

কবি জীবন্ত কবিতা লেখেন না

আমার দেশের মৃত তারারা লেখে জীবন্ত কবিতা।

 



সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০২২

অভ্যন্তরঃ শুচি

 ।। মিঠুন ভট্টাচার্য।।

 

(C)Image:ছবি


















পৃথিবীর পাঁজর ঠেলে ভেতরে

যেতে যেতে -

হাজার অযুত বছরের

গলিত লোহার আধানে

অবিনশ্বর চিরস্থায়ী সঞ্চয়।

উপরিভাগে পড়ে থাকা

লতা-গুল্ম , চামড়া-মাংস

ক্ষণস্থায়ী যত প্রাণ 

ঘড়ির কাটার আবর্তনে

পাল্টে পাল্টে যায়।

থাকে নদী, পাহাড়, মাটি

প্রসব করে নতুন সবুজ, হলুদ,লাল

নীল পর্দা ঢাকায়।