“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০২০

সঙ্গরোধ


 ।। সিক্তা বিশ্বাস ।।



















ম্ভব কি সব সঙ্গরোধ!! 
চন্দ্র-সূর্য আজও উদিত--- 
আলোক দানের সেই যে বোধ! 
পৃথিবীও অবিকল তেমনি
আবর্তনে নেইকো রোধ! 
তবু কেমন  বিষাদগ্রস্ত---
বিশ্বমানব বিপদে ত্রস্ত! 
ইঙ্গিতেই বোঝায় অবরোধ! 

কেবল ভালোবাসা তেমনি আছে, 
মানে না মানা অকারণ! 
শুধু বলি হৃদয়েই থাকো , 
সম্পৃক্ততায় আজ বারণ!
ভেবে দেখ, বন্ধুত্ব হারায় নাকো 
দিন কয়েকের অন্তরালে
ঘনত্ব যে অধিক বাড়ে •••
অদেখারই পাশার চালে•••

বিশ্ব মানব খাচ্ছে খাবি! 
এসো লড়াইটাকে নিজের ভাবি
প্রতিরোধের দাবি স্বেচ্ছাবন্দী
কিস্তিমাতের  ফিকির ফন্দি!
আজ করো যদি খাতিরদারি
বিশ্ব বিপদ বাড়বে ভারি! 
এ নয়কো লড়াই তোমার আমার
 আজ আহ্বান শুধু বিশ্ব রক্ষার!!!

            ******"******

সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০২০

ফলাফল


 ।। সিক্তা বিশ্বাস  ।।





















বিষ্কারে নেইকো মানা
ছুটছে বিশ্বজুড়ে দেশ নানা
আবিষ্কারই মূখ্য বিশ্বমান
পরিচিতিতে কাম্য শীর্ষস্থান... 
যদি বিশ্ববরেণ্য দেশের মান
প্রমাণিত সে সর্ব শক্তিমান! 
সেই আশাতেই চীন ব্যতিক্রম, 
অসাবধানতায় মাত্রা অতিক্রম! 
ফলস্বরূপ নব্য ভাইরাসের হানা 
ভয়ঙ্কর সে, নামাঙ্কিত "করোনা"! 
ছোঁয়াচে সে যে মারণ-রোগ
মৃত্যু-আতঙ্কই আসল দুর্ভোগ! 
দমকা সর্দি-কাশির প্রকোপ
মূহুর্তে বিতরণ স্পর্শ কোপ!
মৃত্যু হার যদিও তুলনায় কম 
তবু আতঙ্কে বিশ্বজোড়া বন্ধ দম !
উপেক্ষা সংশ্লিষ্ট ও দূরত্ব বজায় 
একমাত্র সংক্রমণ দমনের উপায়!
ফলেন দৈনন্দিন জীবন বিপর্যস্ত 
শিক্ষা, ব্যাবসা, সর্বক্ষেত্র ক্ষতিগ্রস্ত! 
সরকার সর্ব উদ্যোগে সদা সচেষ্ট  
বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধ গবেষণা আজ কর্ম শ্রেষ্ঠ!! 
চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিভাগের নেই খামতি
আজ জীবন-ঝুঁকিতে সদা মনোবৃত্তি...
জাতি ধর্ম ভেদাভেদ হয়েছে ক্ষুন্ন! 
মানবতা মূখ্য আজ নষ্টাচার গৌণ! 
রোগের হাতে নষ্টাচার বিপন্ন 
ঈপ্সিত মানবতা হয়েছে প্রতিপন্ন...
সব কিছুরই হয় যে দুই ফল! 
কম বেশিতে সুফল ও কুফল!  
সুফলে দর্শিত মানবতার জয়, 
ঐকান্তিক কাম্য দ্রুত রোগ নিরাময়। 
         *************

শনিবার, ২১ মার্চ, ২০২০

প্রণাম জীবন দেবতা

[কবিতা দিবসে দেশের সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি ]
।।  বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ।।









কাশ পানে মাঝে মাঝেই
খুঁজে ফিরি দেবদূত,
কল্পনায় করি আঁকিবুকি
তারই পূত অবয়ব।
দেবভূম মননে সততই ঊর্ধ্বে
ব্যর্থ প্রয়াসে খুঁজে মরি তাই
দেবতা - যত হুরি, পরি, দেবদূত।

অসার প্রয়াসে ভুলে যাই বারে বারে
আছে যত স্বর্গ নরক সবই এইখানে।
মহামারীতেও বুক চিতিয়ে আগুয়ান সব
শুভ্র বসনে আবৃত যত দৃপ্ত দেবদূত
মৃত্যুর কাছে থেকে আগলে রাখে সব
মর্ত্য দেবদুলাল - বিষে অমৃতে নাজেহাল।
সাথে ফিরে যত হুরি পরি অপ্সরা
হানা দিয়ে যম দুয়ারে - তুড়ি মেরে
ফেরায় সবারে মৃত্যুকে করে আলিঙ্গন।

আজ কবিতার হাতটি ধরে
জানাই তাঁদের বুক ভরা সব
পূর্ণ হৃদয় কৃতজ্ঞতায় সাজিয়ে রাখা
শুভ্র প্রাণিপাত,
বাঁচাও ধরণীকে -
বেঁচে থাকো হে আমার জীবন দেবতা
আসুক ফিরে সহস্র সুপ্রভাত।

ন্যায়বিচার

 
 ।। সিক্তা বিশ্বাস ।।









নারী তুমি আজ অবহেলিত সারি
প্রাপ্য মানের নওকো অধিকারী! 
অবগত সতত প্রতিবাদ কদাচ নয়! 
লজ্জা ভূষণ তোমার, মস্তক যেন অবনত রয়!

তুমি জায়া, কন্যা, ভগিনী মাতা
ভবানী জগদ্ধাত্রী সদা পরিত্রাতা
অপর্ণা, বিজয়া, ক্ষমা, অপরাজিতা, 
জ্ঞাত পূজিত 'মাতৃরূপেন সংস্থিতা'।

ছিলে বিপদনাশিনী! অশিবনাশিনী! 
ত্রিতাপনাশিনী! তুমি দনুজ দলনী! 
কালের স্রোতে কুসংস্কারী দাপটে ---
কখন যে নিমজ্জিত বাস্তব চিত্রপটে! 

আজ তুমি লুণ্ঠিত নির্বল আশ্রয়ী! 
অবহেলিত পদে পদে স্খলিত পরাজয়ী! 
অশিবের হাতে ছিলে পুত্তলি চিহ্নিত!
"নির্ভয়া" নামে কেবল ধর্ষিতা! ও নিহত! 

তোমার পরিনতি টানেনি যে ইতি! 
হাহাকার আজও হায়! জ্বলন্ত স্মৃতি! 
আইনের ভরসায় বিচারের আশায়
লজ্জিত গোটা দেশ ছিল  প্রতিক্ষায়!
ফাঁসিতে হয়েছে ঘাতকের বিচার! 
ন্যায়ের তুষ্টি আজ হৃদয়ে সবার... 
অবশেষে প্রতিক্ষার  হলো অবসান , 
বিচারে উৎসর্গ তোমায় ন্যায্য সম্মান!!

             **********

বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০২০

হোক বোধোদয়

 
 ।। সিক্তা বিশ্বাস ।।









গ্রগতির চূড়ায় পৌছে 
বাড়ছে বৈজ্ঞানিক মান! 
কে কতটা এগিয়ে আছে
নির্ধারণ বিজ্ঞানের দান! 
অপপ্রয়োগে রোগের হানা
ভয়াবহ সে, নাম 'করোনা'! 
ছোঁয়াচে এ যে মারণ-রোগ
স্পর্শকোপে সংক্রমণ ও দুর্ভোগ! 
উপেক্ষা ঘনিষ্ঠতা ও দূরত্ব বজায় 
সংক্রমণ দমনের একমাত্র উপায়! 
জীবন রক্ষার্থে চাই পরিচ্ছন্নতা
রোগ মুক্তির একমাত্র সাবধানতা। 
এই দুনিয়ায় সবাই বোধি
আছে যত চিহ্নিত বিত্তবান! 
খেয়াল খুশিতে কেমন বেপরোয়া! 
হারিয়ে বোধ ও কাণ্ডজ্ঞান!
এমনি যখন বেহাল পরিস্থিতি
আলালের ঘরের দুলালের কাণ্ড কীর্তি! 
ইওরোপ ঘুরেও মেটেনি সাধ! 
'করোনা'য় আক্রান্ত হয়েও গতি অবাধ! 
নবান্ন-উৎসব ও শপিং মলে আড্ডা মেরে , 
মন ভরে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে গোটা শহরে! 
এই কি শিক্ষার সচেতনতা 
ক্ষুন্ন হচ্ছে আজ মানবতা! 
সরকারের সচেতনতার ও বলিহারি! 
এমতাবস্থায় উৎসব পালন 
বিশ্বব্যাপী যখন আতঙ্ক জারি! 
চেষ্টা সতত আজ হোক বোধোদয় ! 
অটুট থাক জীবন, যেন না হয় ক্ষয়! 
জন স্বার্থে শুধু এইটুকু বোধ, 
রক্ষা হোক জীবন ও রোগ প্রতিরোধ। 

         *************

সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০২০

সুখের ঠিকানা

 
 ।। সিক্তা বিশ্বাস  ।।













চোখেতে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ! 
বুঝেছিলাম,এইতো সেই ইচ্ছেধারা ঈপ্সিত যত আশ ....
অন্তরেতে শত শত বইছে ফল্গুধারা... 
পাষাণ যেন অনুভাবে কারণ প্রেমহারা!
জীবন-নদী শুকিয়ে যায় জাঁতাকলের চাপে
কাঠিন্য শুধু বেড়ে ওঠে আফসোসের উত্তাপে!
যত তারে দেখায় কেবল স্বচ্ছ শান্ত নীর 
ততই তার ভাব বেগতিক অন্তরে অস্থির!!
গতিরাগের ধারায় বয়ে ওমনি নাজেহাল 
অপারক  আর একাকীত্বে নিস্তেজ বেহাল!
সন্ধানী মন বাঁচার আশায় তৃষিত চাতক প্রায় ! 
ওমনি দু'টি চোখের পলক আশার নেশা ধরায়...
আশার নেশা ভাবে মেশা সুখের সীমানা
ইচ্ছেরা সব খুঁজে বেড়ায় সেই সে ঠিকানা...
           ************

গণতান্ত্রিক দাবি


     














 ।। সিক্তা বিশ্বাস ।।

কেমন গণতান্ত্রিক মান 
খামতি শুধু আন্তরিক দান! 
ইচ্ছে শুধু হাতটি পাতার 
কৃপণতা হাতটি উল্টে দেবার! 
শোনো বীর সুভাষের দেশভাই, 
বড্ড বেমানান তোমাদের কুঁড়ে  সাজাটাই!
ঝাঁপিয়ে পড়া ছিল সেই বীরের দম! 
অথৈ সাগরেও কেমন সরব গমগম! 
আজ তোমরা সার ছেড়ে অসারে ছোটো! 
মগজটা কি এমন নিরেট খাটো!? 
যত আছো জ্ঞানী গুণী অজ্ঞ বিজ্ঞ ! 
মিলেমিশে আজ সব একাকার! 
কে যে ভীতু কে যে বীর! 
মায়ের বুকে শুধুই হাহাকার! 
অম্লান রয়েছ ভুলে স্বামীজীর সেই নির্দেশ বাণী---
'হে বীর ভুলিও না, তুমি জন্ম হইতেই মায়ের জন্য বলীপ্রদত্ত'...
কেমন আজ মনে মনে কি জানি! কিংবা না জানি! 
স্বার্থবাদকেই যে সজোরে মানি!
চারিদিকে অগ্নিকাণ্ড! এ কেমন গণতন্ত্র ! 
এ যে নয়কো শিবের নয়কো শূরের ! 
কেবল অশিব স্বার্থান্বেষীদের ষড়যন্ত্র! 
ভুলো না কালের দাবি , 'হও ধর্মেতে বীর, হও কর্মেতে বীর... '
ওঠো জাগো! অবিলম্বে কর্মকাণ্ডে এগিয়ে যাও , 
চির ঈপ্সিত আনন্দময় গণতান্ত্রিক মান ফিরিয়ে দাও!

  

শনিবার, ১৪ মার্চ, ২০২০

আপনজন

 























।। সিক্তা বিশ্বাস ।।
 

প্রেম চির কাঙ্ক্ষিত যতনে রক্ষিত হৃদয়ের দ্যুতি•••
কালের ছোঁয়ায় নেই পরোয়া চির ষোড়শী যুবতী•••
******************
ফাগ-বসন্তের তনুমন
আবেশাচ্ছন্য সারাক্ষণ •••
সয় না তাঁর ক্ষণিকেরও বিরহ  বিয়োগ!! 
অভিমানী প্রশ্নে প্রশ্নে তুলে ধরে নানা অভিযোগ!! 

এ তোমার কেমন খেলা
লুকোচুরিতে নেশার ভেলা! 
মেঘলামন যে বড় উতলা! 
কি করে রয় সে একেলা!! 
কেমন সম্পর্ক আকাশ....
তোমায় বুঝি না! এ কি খেয়াল---
সকালে আবাহন তো বিকেলে বিসর্জন!! 
এ কেমন ধারা•••শুধু আত্মগোপন! 
চাই যে তোমার ছোঁয়া সর্বক্ষণ•••
বলোতো কি করে জড়াই যখন তখন!!? 
খেয়ালীমন তুমিই কি আপনজন••• 
কি বিচিত্র তোমার প্রেম-সাধন••• 
না কি সামলে থাকার প্রশিক্ষণ!! 
অনন্ত আকাশের এ কেমন রহস্যময় মন! 
বিস্ময় ঘটাচ্ছে সারাক্ষণ!!! 
তবু দেখ, তোমারই আবেশে এ মন••• 
অসীম অনন্তের দিকে কেবল চেয়ে•••আকুল হয়ে•••                    
শুধুই আকাশ ছোঁয়া••• আর আকাশ চাওয়া•••

                      ************

ভাবের ভিয়েন

 















 ।। সিক্তা বিশ্বাস ।।
 

বাজছে বিষাণ চারিদিকে 
মানবতা আজ পড়ছে ফিকে!
রাজ্যজুড়ে হিংসাত্মক বাজ
মায়ের  বুকে শোকার্ত আওয়াজ!
অহরহ সন্ত্রাসী হাতছানি
কখন রক্তগঙ্গা বয় জানি!
সন্তানের এই হানাহানি 
ভেঙে চৌচির মা'র বুকখানি!
শান্তি চায় মায়ের মন, 
ভালো থাকুক আপনজন 
অক্ষয় হোক মনের টান
মনেপ্রাণে জুড়াক পরাণ •••
মন-কড়াইয়ে হোক না ভিয়েন
হোক না ভাবের বিতরণ•••
মানবতা যাক বয়ে বাতাসে, 
ধর্মান্ধতা যাক চুলোয় ভেসে!!!
          ************

শুক্রবার, ১৩ মার্চ, ২০২০

দৈনন্দিন সমাচার

 






















।। সিক্তা বিশ্বাস ।।
 

তো কি যে বলার ছিল
শোনার জন্যে আছেই বা কে!? 
ছুটছে সবাই আপন তালে 
কে কারে যে পথে দলে! 
কতো ভাবনা আছে ভাবার
কিসে অন্ন জোটে সবার! 
রাজ্যজুড়া শুধু হাহাকার! 
কেউ নেইকো সুরাহা করার! 
সবাই রাজা সবার মনে
কে বা আছে কার সনে
হেয় করছে একে অন্যে
দেশ ভরছে শুধুই বন্যে !
কাকে বলে অগ্রগণি!? 
প্রশ্ন তোলা একটুখানি
সন্ত্রাসী আজ সংশোধক
অগ্রগতির পথ প্রদর্শক! 
কেবল বর্বরোচিত দুরাচার 
পরিপূর্ণ এই রাজ্য-সংসার ! 
ধর্ম আকড়ে  নষ্টাচার! 
 হালের দৈনন্দিন সমাচার!

             *******

বঁধুয়া














 
 ।। সিক্তা বিশ্বাস ।।

দ্মপাতায় জলের খেলা 
ঝিলমিলানো রূপোর মেলা
ষোড়শী ললনার হাসি খোলা
দেখেই কাটে সারা বেলা••••

খিলখিলানো হাসির সুর
ভেসে বেড়ায় দূর হতে দূর
এ যে কোকিল কন্ঠি মিষ্টি মধুর•••
জাদুর হাসি আমার বঁধুর•••

রেখেছি তাঁরে প্রাণের পরে•••
সোহাগী আদরে প্রাণটি ভরে•••
একার অধিকার ফলাও করে
ভীত! ত্রস্ত! যদি হারাই তাঁরে! 

শুধু ভাবি, কেমন করে আগলে রাখি! 
সে যে নীল গগনের মুক্ত পাখি
তাঁর নেশাতেই মাতাল আমি•••
চাতক চোখে  মুখিয়ে থাকি•••

          *************

বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ, ২০২০

আলোর দ্যুতি

















 ।। সিক্তা বিশ্বাস ।।
 


নিভে গেছে ঐ ঝাড়বাতি টা
হাসি ফোটাতো সব মুখের
রঙ বর্ণ নির্বিশেষে আঁধার
কাটাতো দুঃখ রাতের•••
কোথায় কত রুগ্ন আছে
মলম লাগাতো দগ্ধ ঘায়ে
আতুর ঘরে দুধের শিশু
কোন কোণেতে আছে শুয়ে•••
কোন পল্লীর নাচ ঘরেতে
মাতাল নেশার উঠছে ঝড়
কতো শবনম বেঁধেছে ঘুঙুর!
আত্ম গ্লানিতে ভেঙে চূড় চূড়!!
হিসেব কষতেই নিভলো বাতি!
আঁধার ঘনিয়ে হলো রাতি!
ঘোর কাটিয়ে জ্বালবে আলো•••
আসবে কবে সেই আলোর দ্যুতি!!!?!
            ***********

ফাগ-জোয়ার

 
                         



























 ।। সিক্তা বিশ্বাস ।।
                             

ফাল্গুন তুমি প্রাণের ছোঁয়া
হৃদয়ে গড়া প্রেমের মোয়া•••
তোমার ব্যাপ্তি আকাশ ছোঁয়া•••
তৃপ্তিতে সব বেদন খোয়া•••

তুমি যে শুধুই কালের স্রোত
হৃদয় সংযোগে ওতপ্রোত •••
এক লহমায় ক্ষিপ্ত গতি !
পলকে পলকে প্রতিশ্রুতি•••

আশা-ভরসার দে দোল দোলা•••
মুক্ত মনের পাখনা খোলা•••
আবেগ দোলায় আত্মভোলা!
ফাগ-জোয়ারের শিল্পকলা•••

টঙ্কারে তার রাগ-অনুরাগ •••
মাতাল নেশার বসন্ত-বেহাগ
রঙ-পলাশের বাহারি রাগ•••
খেপাটে মনের মাতাল ফাগ•••

             **********

মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০২০

করোনা ভাইরাস

রফিক উদ্দিন লস্কর  
____________________
প্রথম এলো চীন দেশেতে
নাম হয়েছে করোনা,   
মহামারির এই ভাইরাসটা
যে কাউকে ছুঁইওনা। 

সময় এখন নয় নিরাপদ
করোনার আছে ভয়,
হাঁচি কাশি  জ্বর আসলেই
ডাক্তার দেখাতে হয়।  

আপন পরের যে কেউবা
ঘুরে আসলে বিদেশে,
তাড়াতাড়ি পরিক্ষা করাও
ডাক্তারগনের নির্দেশে।

কত মানুষ মারছে বিশ্বজুড়ে
ঐ করোনার ভাইরাসে,
হও সচেতন থাকতে সময়    
জীবন যেন না নাশে।

বাইরে গেলে মাস্ক পরাটা
এখন খুবই দরকার,
সব দেশেতে সতর্কতার
আদেশ দিচ্ছে সরকার।    

সুস্থভাবে বাঁচতে যে তাই
পরিস্কারের জুড়ি নাই।
নিজের শরীর হাত পা সহ
ঘর পরিষ্কার রাখা চাই।

এ রোগ থেকে  বাঁচতে হলে
ফলের রস করেন পান,  
মাছ, মাংস ডিম তরকারিটা
ভালো করে সিদ্ধ করান।

ভালো করে  হাত না ধুয়ে
চোখে মুখে স্পর্শ নয়,
আর খালি হাতে বন্যপ্রাণী
স্পর্শতেও আছে ভয়।

হাট-বাজার বা শপিংমলে
নিরাপদ নয় পরিবহন,
সবখানেতে সতর্ক থাকুন
ছোঁয়াচেতে আক্রমন।  
_____________________
১০/০৩/২০২০ ইং
নিতাইনগর, হাইলাকান্দি (আসাম)

 
  

রবিবার, ৮ মার্চ, ২০২০

দা ঙ্গা


 এত রাতে কাকে পাবে সে ৷ কদিন ধরে চারদিক থেকে যা খবর আসছে ৷ পাড়ার সবাই তটস্থ হয়ে আছে ৷ দিনের বেলাও ঘর থেকে কেউ বেরুচ্ছে না ৷ রাতে তো অসম্ভব ৷ কেলাব ঘরে বিকেলে একটা মিটিন হয়েছিল পাড়ার সবাইকে নিয়ে ৷ বউয়ের এই অবস্থার কথা জানিয়ে যায়নি মিটিনে ৷ তবে সবার যা মত তাতে সে সহমত পোষণ করে বলে জানিয়েছে ৷ পাড়ার অনেকেই জানে তার সমস্যার কথা ৷ তাই তাকে রেহাই দেওয়া হয়েছে ৷
মিটিনে বয়স্ক দু-একজন সম্প্রীতির কথা বললেও কয়েকটা উটকো বহিরাগতের উস্কানিতে পাড়ার কয়েকটা ছেলে হৈ হল্লা করে সভা পণ্ড করে দিয়েছে ৷ ওরা বলেছে মিষ্টি কথায় চিরা ভিজনের দিন গেছেগা ৷ ওরা বলছে মারের বদলে মার দিতে হবে ৷
বুড়োরা যেন ঘরে গিয়ে বসে থাকে ৷ এখন জোয়ানদের দিন ৷ ওপর থেকে খবর এসেছে ওগুলোকে ঝাড়ে বংশে শেষ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই ৷ ছেলেগুলোর মিলিত চিৎকারে সন্ধ্যার পাখিগুলো কিচিরমিচির করে উঠল বাসা ছেড়ে দিয়ে ৷ পাড়ার ঘরে ঘরে একটা গুমোট আতঙ্ক ৷
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার বউয়ের শরীর আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে ৷ ব্যথায় ককিয়ে উঠছে বউটা ৷ আর অসহায় দৃষ্টি মেলে তাকাচ্ছে তার দিকে ৷ উঠে দাঁড়ায় সে ৷ একটা কিছু করতে হবে ৷
অনেক রাতে হন্যে হয়ে ঘুরে কোনো যানবাহনে দেখা পেল না ৷ হতাশ যখন ফিরে আসছে তখন একটা একটা ঝুপড়ির পাশে একটা রিক্সা পড়ে রয়েছে দেখতে পেল ৷ কাছে গিয়ে চালক বা সওয়ারি কাউকে দেখতে পেল না ৷ একটু ভেবে সে নিজেই রিক্সাটা টেনে নিয়ে চলল বাসার দিকে ৷ কাজ সেরে আবার রেখে দেবে সেখানেই ৷ সকালে মালিককে বুঝিয়ে কিছু টাকা দিয়ে দেবে ৷
পাড়ার কাছাকাছি পৌঁছুতেই দেখল পাড়ায় আগুন চারদিকে ৷ লোকজনের চিৎকার ৷ মার ৷ মার ৷ ধর ৷ ধর ৷ কাইট্টা ফালা ৷  আগুনের আলোয় দেখা যাচ্ছে একদল লাঠিসোটা দা কিরিচ নিয়ে ধাওয়া করছে ৷ বাঁচাও ৷ বাঁচাও ৷ আর্তনাদ চিৎকারে একটা থমথমে পরিবেশ ৷ ওর বুকের ভেতর মোচড় দেয় ৷ বউয়ের জন্যে ৷ আর একটা স্বপ্নের জন্যে ৷ দ্রুত পৌঁছে যায় তাদের বাড়ির কাছাকাছি ৷ আর দুএকটা বাসার পরে ওদের ঘরে লাগবে আগুন ৷ দ্রুত ছড়াচ্ছে ৷

এই....এই....খাড়অ ৷ শালার শালা ৷ কই যাইতাছচ ৷ 
ধর তারে ৷ ভাগতাছে ৷ 
  সে দাঁড়িয়ে পরে ৷ 
 -- না না ভাই ৷ আমি ভাগতাছিনা ৷
 -- ভাগতাছৎনা ৷ বাল ফালাইতাছৎ ৷ রিসকা লইয়া কিতা করতাছৎ?
-না দাদা ৷ আমার বউ ৷ ব...অ...উ... ৷
পুন্দেদা দিমু তর বউ ৷ বান তারে ৷ কাইট্টাঅই লামু আজগা তরে ৷
দাদা ৷ আমারে মাইরেননা ৷ আমি প্রাণভিক্কা চাই আপনেরার কাছে ৷ আমার কথাডা হুনেন ৷
চিৎকার চেঁচামেচিতে শোনা যায়না তার কথা ৷ পিছমোড়া বেঁধে ফেলে তাকে ৷ তার বাসার সামনে ৷ সে অসহায় চেয়ে থাকে বাড়ির দিকে 
দড়িতে টান পড়ে ৷ চল আজগা তোর শেষদিন ৷

      ঠিক এই সময় বাড়ির ভেতর থেকে কান্না ভেসে আসে দুটি মানুষেরমা মা ৷ ওঙা ওঙ্গা ৷ মা..ওঙ্গা...মা...ওঙ্গা ৷ আর আর্ত চিৎকারভরা বীভৎস রাতের আকাশ থেকে যেন প্রতিধ্বনিত হচ্ছেদাঙ্গা...দাঙ্গা...দাঙ্গা...৷