“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১৮

শুধু গল্প নয় -২

।।শৈলেন দাস।।


   
(C)Image:ছবি
         
শেষ শীতের কুয়াশা ঝাঁকিয়ে নেমেছে। বড়াইল বরাকের বুকে যেন নেমে এসেছে আকাশ। ভিজিবিলিটি একদম কম। রোজকার মত মোটর সাইকেলে সেতু পার করে আপন গন্তব্যে যাচ্ছিল সতীশ। ভোরের নরম আলোয় যতটুকু দেখা যাচ্ছে তাতে সতীশের নজরে পড়ল এক বেমানান বিষয়। পাশের নির্মীয়মাণ সেতুতে কে একজন খালি গায়ে দুহাত তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুর একদম কিনারা ঘেঁষে।
           নদীর উপর নতুন সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। সেখানে সস্তার শ্রমিকের কাজ করে সমীর। দুদিন আগে এন আর সি অফিস থেকে নোটিশ এসেছে। ঠিকাদারের মোবাইলে ফোন করে জানিয়েছে তার স্ত্রী। আজ সমীরদের বংশবৃক্ষ মিলিয়ে দেখার দিন। অজানা আশংকা জাগছে মনে। ভেতর ভেতর দানা বাধছে ভয়। চাপা উত্তেজনা অনুভব করছে সে। এ তো রামরাজ্যে সীতার অগ্নিপরীক্ষা! ধরণী দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার সময়।
           এক সপ্তাহ কেটে গেল কোন খোঁজ নেই। সাথের শ্রমিকরাও কেউ জানেনা কোথায় গিয়েছে সে। ঠিকাদার থানায় এফ আই আর করেছে সমীর নিখোঁজ হওয়ার। সেদিন সন্ধ্যা পাঁচটা পর্যন্ত এন আর সি অফিসে অপেক্ষা করেছে সবাই, আসেনি সমীর। আজ সতীশদের এনজিও অফিসে এসেছে খেটে খাওয়া কয়েকজন গ্রামীণ জনগণ, সাথে সমীরের স্ত্রী।
           পুরো ঘটনাটা বর্ণনা করেছে সমীরের স্ত্রী। স্থান, কাল, পাত্র মিলিয়ে একটা যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছে সতীশ। নিজের মধ্যে কেমন যেন অস্থিরতা অনুভব করছে সে। এক নোটিশেই সব শেষ? ব্যাপারটা নিশ্চিত হতে ফোন ধরেছে  সতীশ।

কোন মন্তব্য নেই: