“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭

সঞ্চিত শৈশব ও বরাক

(C)Image:ছবি





















।।   পিঙ্কি চন্দ্রানী পুরকায়স্থ।।


ময়টা শৈশব, দিন তারিখ, সনের হিসেবটা,
লিপিবদ্ধ কোন এক জলফড়িঙের রঙিন পাখার অন্তরালে। 
বাবার হাত ধরে রোজ বিকেলে,
ঘুরে বেড়াতাম বরাকের তীরে।
মধুরামুখ কি মিষ্টি নাম বলতো।
তার চেয়েও বেশী মিষ্টি সেই মুহূর্তেরা।
বাবা যখন শৈশবের আনন্দে মশগুল,
সবচেয়ে প্রিয় অসমবয়স্ক বন্ধুটির সাথে।
কখনো ছুটে বেড়াচ্ছেন।
বালু দিয়ে তৈরি করছেন খেলা ঘর।
কখনও বা চিনিয়ে দিচ্ছেন , এটা দ্রোণ ফুল।
ওটা বিশ কাঁটালি, ওদিকে যাসনে মেয়ে।
নৌকোর পর নৌকো আর,
মহাজালে মাছের সম্ভার দেখে অবাক হচ্ছি আমি।
হারিয়ে যাচ্ছি বারবার কুমির,জলদস্যু, মৎস্যকন্যার গল্পে।
আশ্চর্য নদী প্রেমিক লোক আমার বাবা।
এতো বছরের শিক্ষকতা দুধপাতিল ।
অন্নপূর্ণা ঘাট, সকাল বিকেল নদী পেরিয়ে।
তবু নিজের ছোট্ট মিনির হাত ধরে,
সূর্যকে বিদায় জানানো নদীরই কিনারায়।
শেষ বেলায় সুপুরি গাছে বাবুই পাখির বাসা দেখে,
যখন আমরা ফিরে আসতাম,
তখন আকাশের জানালায় উঁকি দিচ্ছে দু একটি তারা।
সেই তারারা আজও কথা বলতে আসে,
আমার রুক্ষ ব্যাল্কনির ওপারে।
নমামি উচ্ছ্বাসে ভাসছে শহর,
খবরটা এই মাত্র জানিয়ে দিয়ে গেল ,
এক নীল নয়না মাছরাঙা ।
ভালোবাসা বরাক,
আসলেই বাবা সঞ্চিত রেখেছেন আমার শৈশব,
দিগন্ত বিস্তৃত বরবক্রের গহীন বুকে।


কোন মন্তব্য নেই: