“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৭

কেন্নো পোকার রেল


মূল অসমিয়া: নবকান্ত বরুয়া
বাংলা অনুবাদ: সুশান্ত কর


কেরেলুয়ার রেল’ নবকান্ত বরুয়ার প্রসিদ্ধ শিশু নাটকগুলোর একটি। মূলত ‘আকাশবাণী’র জন্যে এমন বেশ কিছু নাটক তিনি লিখেছিলেন। ফলে মঞ্চ নির্দেশনা বলে সেরকম কিছু নেই। পদ্যে লেখা হলেও অভিনয়ের সময় কখনো বা পরিচালকেরা এতে সুরসংযোজন করে গীতিনাট্যেরও রূপ দিয়েছিলেন। বাণী কটকীর মতো কোনো কোনো পরিচালক ‘মুখোশ নাটক’-এ পরিণত করে এগুলো মঞ্চেও পরে অভিনয় করান। অন্য দুই এক নাটকের সঙ্গে ‘কেরেলুয়ার রেল’ নাটকটি যোরহাট , গৌহাটিতে বেশ ক’বার অভিনীত হয়েছিল। নবকান্ত লিখেছেন, এগুলো এতোই জনপ্রিয় হয়েছিল যে এককালে ছেলেমেয়েরা পথে ঘাটেও এর সংলাপ আওড়াতো। নাটকটির পাণ্ডুলিপি লেখকের কাছে ছিল না। আকাশবাণীতে নাটকটি অভিনয় করেছিলেন ভারতী বরুয়া, তিনি বহু পরে স্মৃতি থেকে এর পুনরুদ্ধার করে ছাপা সম্ভব করেছিলেন। ‘মনত পরার শব্দ’, ‘কাগজ কলমর রণ’, ‘ গোলাপ আরু বেলি’, ‘মই টুনটুনিয়ে টুনটুনালো’ এই চারখানা নাটক সহ ‘কেরেলুয়ার রেল’ নিয়ে  শিশু নাটকের সংকলন বেরিয়েছিল প্রথমে ১৯৮৪তে  ‘মনত পরার শব্দ’ নামে। ১৯৯০তে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণে নাম হয় ‘কেরেলুয়ার রেল’। এই সবক’টি আবার সংকলিত  হয় তাঁর মৃত্যুর পর ২০০৩এ ‘অন্বেষা’ প্রকাশিত এবং গগণ চন্দ্র অধিকারী সম্পাদিত ‘ নবকান্ত বরুয়া শিশু সাহিত্য সমগ্র---প্রথম খণ্ড’-তে। যেখান থেকে আমরা অনুবাদের পাঠটি নিয়েছি। তিনি নিজে এগুলোকে ‘ননসেন্স রাইম’ গোত্রের বলেছেন। কিন্তু ‘রাইম’ বললে আমরা যা বুঝি, এর ছন্দ হবে ছড়ার--- সে নাটকগুলোতে নাটকের দাবি মেনে ‘ছড়া’র বহু কিছুই নেই, ‘ননসেন্সে’র সবটাই রয়েছে। মাত্রার বৈচিত্র্য আছে, গদ্যের চলন দেবার চেষ্টাও আছে। অন্ত্যানুপ্রাসও আছে, আছে শ্রুত্যনুপ্রাস।আবার বহু জায়গাতে নেই। অনুবাদ করতে গিয়ে আমাদের এই সব সমস্যার মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমরা প্রথমত, চেষ্টা করেছি বাংলা ছন্দের তিন রীতিরই আশ্রয় নিয়ে পদ্যের ধাঁচটা রাখতে। এবং যথাসম্ভব সর্বত্র অন্ত্যানুপ্রাস রাখতে। ফলে বহু সংলাপ ছাড়তে এবং কিছু সংলাপ জুড়তে হয়েছে বাংলায়। বহু শব্দকে নিয়েও খেলা করতে হয়েছে, তাতেই ‘বরসা, মশেলা, কিইচ্ছা’ শব্দগুলো এসেছে। যদিও নাটকের মূল গল্প কাঠামোটি অক্ষতই থেকেছে। দ্বিতীয়ত রেলযাত্রীরা বহুভাষিক হয়ে থাকে, এই কথাটি লেখক মনে রেখে শুধু অসমিয়া নয়, মাঝে মধ্যেই বাংলা, হিন্দি এবং ইংরেজি কথন ভঙ্গীরও মিশেল ঘটিয়েছেন। একটি পুরো বাংলা পঙক্তি ছিল ‘কোথায় যাচ্ছ বরের পোলা’। সমস্যা হলো -- একে কি উলটে অসমিয়া করব? তাতে পাঠক ভাবতে পারেন, আমরা অনুবাদ করতে ভুলে গেছি। তো অসমিয়া আমরা রাখিনি। কিন্তু তৃতীয় সমস্যাটি আরো জটিল। তৃতীয় জিরাফের নাম ছিল ‘চিকুট’। এটিকে যমক অলঙ্কার করে ব্যবহার করেছেন।  ‘চিকুট’-এর অর্থ অসমিয়াতে ‘চিমটি’— এবং ‘চিমটি’ ধরে এর পরে গল্প এগিয়েছে। অথচ বাংলা উচ্চারণে শব্দটি হবে ‘সিকুট’ -- যার আর অন্য কোনো অর্থ হয় না। এই সমস্যাকে আমাদের সমাধান করে এগোতে হয়েছে। কী করেছি সে যথাস্থানে পড়াই ভালো। নবকান্ত লিখেছিলেন, “এই নাটককেইখনত কোনো বিশেষ মূল্যর দাবি নাই।” আমাদেরও এই অনুবাদ নিয়ে একই কথা। একটা পরীক্ষা করা হল, এই মাত্র।


আর হ্যাঁ, ছবিগুলো এঁকে দিয়েছেন দুর্লভ ভট্টাচার্য। সুকুমার রায়ের রচনাগুলোর মতোই এই ছবিগুলো ছাড়া নবকান্ত বরুয়ার রচনাও অসম্পূর্ণ। বাংলার পাঠকের অবশ্য তাঁর রচনাগুলো পড়লে উপেন্দ্র কিশোর, সুকুমার রায়দের মনে পড়বে। রবীন্দ্রনাথ সহ এঁদের কাছে ঋণ নবকান্ত স্বীকার করেন। বর্তমান সংকলনেও ভূমিকা লিখতে গিয়ে বীরেন্দ্রনাথ দত্ত সেসব বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। আমরা যেন মনে রাখি, উপেন্দ্র কিশোর এবং সুকুমার রায়েও লুই ক্যারল সহ বহু পশ্চিমা লেখকের প্রেরণা কাজ করছিল, নবকান্তেও তার ব্যতিক্রম ঘটে নি। তার সঙ্গে শুধু তাতে বাংলার ঐতিহ্যের সংযোজন ঘটেছে। তার পরেও সুকুমার রায়েরই মতো নবকান্তের রচনা তাঁর নিজেরই রচনা, মৌলিক। ‘কোনো কবি বা কোনো শিল্পী সম্পূর্ণ এককভাবে অর্থপূর্ণ হ’ব নোয়ারে।’ বীরেন্দ্রনাথ দত্তের এই কথাটি মনে রেখে যদি এই একক অনুবাদ নবকান্তের বাকি রচনাতে প্রবেশে আগ্রহ বাড়ায় তবেই আমাদের এই পরীক্ষা, এই  শ্রম সফল।    ---অনুবাদক]       



ধুয়া:  ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক
পীঁ পীঁ পীঁ পীঁ
রেল চলে চলে রেল
             কেন্নো পোকার রেল চলে পাঞ্জাব মেল।

বিছা: মাকড়ি দি গো মাকড়ি দি;
বলছি তুমি, বাড়ি আছো কি?

মাকড়সা: না থেকে ভাই  কই বা যাব,
             তাঁত মেলানো, কই বা থুব?
বিছা: কী বা তুমি বুনছ দিদি?
মাকড়সা: আয় তোরে ভাই দেখিয়ে দি,
               ...... ফুল
বিছা: তোমার জন্যেই এনেছিলাম এক লাছি উল।
মামার  ছেলেকে দিতে  সোয়েটার চাই।
মাকড়সা: আগে কেন বলিস নি রে, ভাই?
   পরশু দেখ, লাগিয়েছি এইখানা তাঁত
   বাতাসে ছিঁড়ল কিনা সুতোটার গাঁট
             এক মাথা টানি যদি আর মাথা ছিঁড়ে
      আগেকার মতো যদি কিছুতেই জুড়ে।
বিছা:  আগের মতো লাগলে তবে,---  হবে
মাছিরাম কেরানিকে খবরটা তো দেবে।
কী দারুণ গো, কী দারুণ! নকল করা জানে
আমরা কী গো! মানুষই তো দেখে হার মানে!
মাকড়সা:  চল̖ , তবে কেন্নো রেলে ওর খবরে যাই।
মাছিরাম কেরানিটাকে কই বা গিয়ে পাই?
বিছা এবং
মাকড়সা: কেন্নো পোক ঝোঁক ঝোঁক, এই র্যা্লা!
দাঁড়াও দেখি,যাচ্ছ কোথা নবাব পোলা?
কাপলিং ছেঁড়া দেখি পাঞ্জাব মেল
ঠেল রে  গজরা, ইঞ্জিন ঠেল!
ধুয়া:   ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক
পীঁ পীঁ পীঁ পীঁ
রেল চলে চলে রেল
চলে পাঞ্জাব মেল।

                                              কেন্নো:  যাবে যদি, খোলো সাহেব
                        কালো ওভার ক’ট;
         মেমও ছেঁড়ো লাল রশি
                        লাগবে  চাকায় জট ।
                        করো না কো ঠেলা ঠেলি
                        ডান হাতে টিকিট কিনে
                                                              বাম হাতে দোয়ার মেলি
                                                              নাও গো বসার সিট চিনে।
                                                              গল্প করো, আলাপ করো,
                                                              কার পরিচয় কী?
                                                              পি পি পি!
                                                              মিষ্টি কথায় তুলে ধরো।
                                                              অচেনা কোনো প্যাসেঞ্জার
                                                             নিয়ে আমি  যাই--
                                                              এমন কোনো  কারবার
                                                             আমার তো গো নাই।
 বিছা:      ইনি মিসেস মাকড়ি দিদি তাঁত বুনেন ভালো।
চরকা নেই, মাকু নেই অন্ধকার বা আলো।
চিকন করে সুতো কাটেন,তাঁত বুনেন বসে
              পাড়া পড়শি কেউ শোনে না সাড়া শব্দ এসে।
              রান্না করা নেই, নেই তেল  মশেলা
              লিকুইড ডায়েটে  রোজ চলে  দু’বেলা।
মাকড়সা: একে তো চেনোই, নাম শ্রী বিছাধর
   গায়ে কালো সোয়েটার বরসা ঋতুভর।
  সরু গলা, যায় না খোলা
এ নিয়েই পথ চলা।
সবাই: এভাবেই যাই তবে, চলো!
কী বলো ভাই, কী বলো?
কেন্নো: যাই তবে এভাবেই
ওঠো,আছো যেভাবেই।
আগে গিয়ে বলে দিও,নেমে যাবে কই!
মাকড়সা: মাছিরাম মশায়ের বাড়িমুখে অই!
কেন্নো: কে সে মাছিরাম?
           কীই বা ভালো নাম?
             নীলচে
             না কালচে,
             বোতলা না মৌ,
            না ঐ  আদরের কুনকুনি বৌ
            ফলে ফলে ডিম পাড়ে,
                  বাকিদের বাড়িঘর ---
                    কে  চেনে  কারে!
মাকড়সা: আম ঝুলে ডালে ডালে
   নীল মাছি পালে পালে
   যেখানে মানুষ থাকে
   মাছি ঘুরে ঝাঁকে ঝাঁকে।
বিছা: এ মাছি  গো, সে মাছি না;
           কাঁঠালের আঠাতে তার পাখা লাগে না।
           আসলে কী গল্প জানো,
   বলি তবে,মানো কি মানো।
   মাছিমরা ছিল তার নাম,
   তখনো জন্মে নি তো রাম।
   যখন মরা মরা চেঁচিয়ে,
   উঁইঢিবি গুড়িয়ে
   বেরিয়ে রত্নাকর,
               লেখে রামায়ণ
               আমাদেরও মাছিবর,
   মাছিরাম কেরানিতে পেলো প্রমোশন।
কেন্নো: ঠিক আছে, ঠিক হ্যাঁয়!
দেখি, গাড়ি কই যায়!
উঠে যাও এইবার
আমিই ইঞ্জিন,আমিই ডেরাইভার!
                         ধুঁয়া নেই, ধূলি নেই
                         লাল এক রেল...
                         ঠেল রে গজরা, ইঞ্জিন ঠেল! 

ধুয়া:   ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক
পীঁ পীঁ পীঁ পীঁ
        রেল চলে চলে রেল
                        কেন্নো পোকার রেল
                        চলে পাঞ্জাব মেল!

বিছা:        আরে! এ যে আরো আছে প্যাসেঞ্জার
               রকম রকম কত রকম দেখো ফ্যাশন যার।
         ইনি মিস্টার গো বরুয়া, তাঁর ভাঙা মটর গাড়ি।
মাকড়সা: কলকাতা যাবেন বুঝি, হবে রিপিয়ারি?
কেন্নো: এ যে দেখি শিরি যুক্ত পি পিঁপড়া বাবু
             জংলি শসার বিচি লেগে হলেন বুঝি কাবু?
বিছা:        পি পিঁপড়া? নাম শুনি নি। কোথায় নিবাস?
কেন্নো:       পি কক্, পি হেন্ ---এদের পাশাপাশি বাস।
             সোনা পিঁপড়া, ডাঁই পিঁপড়া, পিঁপড়া আছে কত!
             লিখেছে এদের কথা শাস্ত্র আছে যত।
             কলহ না করে যেন কর্ম করে খায়,
             শিরি কিষ্ণ শেখালেন-- গীতাতে বাখায়!
               সব পিঁপড়া মিলে নিল পি পিঁপড়া নাম।

সবাই: বলো রাম রাম!
               উঠে যাও, উঠে যাও! কথায় কী কাম? 

ধুয়া:   ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক
পীঁ পীঁ পীঁ পীঁ
            রেল চলে চলে রেল
                        কেন্নো পোকার রেল
                     চলে পাঞ্জাব মেল!

পিঁপড়া:  কে কে শুনবে বলো, মজার কিইচ্ছা।
                রূপকথা জানি বেশ, শোনাই যত ইচ্ছা।
মাকড়সা:  কিচ্ছা জানো! বেশ!
    সেই যে রাজা ছিল, গোধার দেশ!
বিছা: নইলে,সেই যে ছিল রাজহাঁস এক,
সোনার ডিম দিত। প্যাঁক প্যাঁক প্যাঁক!
নতুবা সেই বুড়ো
কচু খেতে সারা দিন মাটি গুড়ো গুড়ো...
পিঁপড়া: সেসব কথা,কথা কি এমন
অং বং চং
এ মন তালাসি, পেয়েছি নূতন
গল্প বলার ঢং।
 গোবরে  পোকা: বলো বলো বলো! কিসের ঢং?
                        চিনের যাদু বুঝি, চিং চাং চং !
                  নাকি সেই আলাদিনের  আশ্চর্য বাতি,
                        কেঁচোমাটি সন্ধানে হাম কলকাতা যাতি।
                  দৈত্যটা শিখেছে কি নতুন কেরামতি?
                         রেডিয়েটার হয়েছে লিক, চাই মেরামতি।
পিঁপড়া:       এক ছিল বন্ধু
              তার ছিল সন্দুক।
গোবরে পোকা: সন্দুকে বন্ধু থাকা কাহানি নেই মাঙতা।
পিঁপড়া: আরে, বলা ভুল হয়েছে,
                কী যেন,প্যাঁচ লেগেছে।
                 এইবার গল্প বলি, একদম টাটকা!
                 নেই কোনো ফাটকা।
                এক ছিল বন্দুক,
                না ছিল সন্দুক।
                 বন্ধুরা প্যাঁচিয়ে দিল রাং রাং রাং তা।
                  তবে বুঝো এইবার
                 কিছু কর কানটার।
                  কালো কচু তুলে এনে কান করো সাফ।
                  চিড়িয়াখানায় যেয়ে
                 তামোল পান  খেয়ে
                  একা একা  চরছিল তিনটি জিরাফ।
সবাই: জিরাফ!
পিঁপড়া:       হ্যাঁ, জিরাফ!
স্বরটা ভীষণ রাফ।
সারাটা শরীর ভরে তুল তুলে পাফ।
কপালে রয়েছে এক ছোট ফুট নোট
ওরা যে  বংশের, তার নাম হলো কূট।
সবাই: জানি, জানি, সেতো জানি!
মাটিতে গজায় লংকা ধানি।
কূট বংশ মহা বংশ
চাণক্যের অংশ
চিত্রকূটের সরোবরে
চরে পরম হংস।
গোবরে পোকা:      প্রথম জিরাফের নাম কি বা কূট,
বিসকূট, মিসকূট না কিসকূট?
পিঁপড়া: কেবলই ই কুট!
ওর ভাই সই করে
মিস্টার বি কুট।
তারও যে ছোট ভাই
  মিস্টার চি কুট।
ইকুট বিকুট  ভাই
তামোল পান খাই
জিহ্ব দেয় পুড়িয়ে
পাণ মশলা কুড়িয়ে
পায় কই---
                        যায় তার সন্ধানে।
কেবা বলো, জুড়ায় জ্বালা  মন দানে!
বাড়িতে তখন বসে   কোন কূট?
বাতাও ভাই, বাতাও দেখি! কোন কূট?
সবাই: সিকুট  সিকুট চিকুট!
পিঁপড়া: চিকুট! অসমিয়া চিকুট ।
                     চিকুট মানে চিমটি।
                        খাও, পাও টেরটি।
                                     ( পিঁপড়া সবাইকে চিমটি কাটে।
বিছা: আরে আরে আরে! পি পিঁপড়া  চিমটি কাটো কেন?
পিঁপড়া: আকাশ কেন নীল,পাহাড় কেন খাড়া? জানো না যেন!
লবণ জলে উঠেনা কেন সাবানের ফেন্?
চিমটি দিলে বাচ্চারা হে করে ঠেন্ ঠেন্!

বিছা: খবরদার! আমায় যদি কাটো!

তবে এই যে ফুলের ঝাড়ু,
  আমার গায়ে দেখ̖ছো, গাড়ু!
ছিঁড়ব তোমার পিঠে, দেখি কেমন করে ঝাঁটো।
মাকড়সা: পি  পিঁপড়া কেটে দিল। আনো রে আনো, টিংচার।
গোবরে পোকা: গো বরুয়াকে কাটিস যদি হবি তবে পাংচার।
পিঁপড়া: এসব এখন রাখো,
     কেন্নো রেলটা দেখো।
                                                         সবাই ওকে চিমটি কাটো, কুট!
    ইকুট বিকুট চিকুট। কাট কুট কুট!
সবাই:        হেইও!  হেই! উঠ উঠ উঠ!
    চিকুট চিকুট চিকুট!
 কেন্নো: খবরদার! খবরদার!
    পিপিলিকা খবরদার!
                 খবরদার বিছাধর!
                  মাকড়িদি নট নড়াচড়!
                 এতোক্ষণ ছিলাম রেল
                 খেলছিলাম মজার খেল
                    জানো না কি, পূর্বপুরুষ আমার অষ্টাবক্র
    গা প্যাঁচিয়ে হচ্ছি দেখো সুদর্শন চক্র।
মাকড়সা: আমার সুতা ছিঁড়িল
বিছা:              আমার জামা ফাটিল
গোবরে পোকা:  আমার পাখা ঝরিল
পিঁপড়া: আমি হলাম চ্যাপেটা। এখন কী করি লো! 
সবাই: বাঁচাও ! বাঁচাও!   হে অষ্টাবক্র পুত্র।
          চক্র যদি না মেলে দাও, পালাই তবে কুত্র?
কেন্নো: বেশ!
                 তবে চিমটিও যেন হয় শেষ!
                 উঠে এসো, উঠে বসো ! চালাই আবার রেল।
                 গার্ড বাবু বাজাও হে! বাজাও হুইসেল।   
ধুয়া:   ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক ঝোঁক
পীঁ পীঁ পীঁ পীঁ
                  রেল চলে চলে রেল
                        কেন্নো পোকার রেল
                        চলে পাঞ্জাব মেল।


                         ~~~~~০০০~~~~~

 
 
    


কোন মন্তব্য নেই: