“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৭

জড় বৃক্ষের বিস্ময়

।। আবু আশফাক্ব চৌধুরী।। 
(C)Image:ছবি










দীর পাড় ভাঙা শব্দের আড়ালে করতালি
দাঁড়িয়ে আছি জড় বৃক্ষের মতো বিমুগ্ধ বিস্ময়ে
কথা ছিল চর বেঁধে দেবে নিটোল শৈল্পিক তুমি
লাস্যময় অবধূত চিত্রাঙ্কনে ব্যতিব্যস্ত উদ্বিগ্ন সময়ে...
কেন এমন হয় ধ্বস্ত মানবতার কদরূপ দর্শনে
চিৎকারবিহীন কন্ঠগুলো সারি বেধে চেয়ে থাকে উন্মুখ
কোন প্রতাপের বশে হাত পা বাঁধা সমর্পণে
জাগরূক বিবেকগুলো যেচে যায় দুর্বার জাগতিক মুখ?

বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৭

কবিতা তুমি আয়না হলে

।। অভীক কুমার দে।।

(C)Image:ছবি
























.
ভেতরে এক শিশু,
হাসে কাঁদে
জীবনপথে শব্দের খেলনা গাড়ি ছুটে
.
কবিতা তুমি আয়না হলে
বাঁচাও, বেঁচে থাকি; তুমিও...
অযথা চাই না কোন প্রলেপ বিহীন কাঁচের দেয়াল।
.
প্রলেপ বিহীন কাঁচের মুখোমুখি হলে অদৃশ্য বন্ধনী
গিলে খায় দেহভাষা
ভেতর শিশুর অসুখ বাড়ে
.
কবিতা তুমি আয়না হলে
মন মায়াবী আকাশে নিঃসীম পূর্ণতা।
..................

লুংথুং

।। অভীক কুমার দে।।
(C)Image:ছবি














.
দিকে নদীপাড় থেকে ধুলোপথের আঁচল
ধানিজমির বুক ছুঁয়ে পাড়ায় পাড়ায়,
এদিকে উচাইদের টং ঘর এড়িয়ে পাহাড় বেয়ে ওঠা,
মুহুরির হাঁটুজলের বালুবাঁক লুংথুং খোঁজে
 
.
নতুন ইস্কুল হয়েছে তখন
ষোলোআনা যুবক বয়সে ক্লাস ওয়ানের ছাত্র ছবি উচাই
কাটাধুতির সাথেই রপ্ত হয়েছে হাটের দোষ
সপ্তাহের সব ব্যথা নিয়ে হাট সেজে উঠলেই
দাগ পড়া চায়ের গেলাসে ভারি নিঃশ্বাস জমা হতো।
.
সময় পেরিয়ে হাঁটুজলের মুহুরি এখন অনেক গভীর
উল্টো স্রোতে ভেসে উঠেছিল যে রিফিউজি ঢল
সে ঢল হাটবারের একচালা ভাসিয়ে উদোম বাজার,
নদীচর জানে কতটা আঘাতে মৃত লুংথুং
জরিপের মুহুরিপুর।
..........................


সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৭

দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম

( ইন্দোনেশিয়ার বালির আগ্নেয়গিরিতে ভয়াবহ অগ্নুৎপাত,
 ধোঁয়ায় কালো আকাশ, বিমান বাতিল )


(C)Image:ছবি












।। এম রিয়াজুল আজহার লস্কর।।  
@
গ্নি পাহাড় উঠলো জেগে ধোঁয়ায় ঢাকে বালি।
মানুষ হেথা ভাগছে ভয়ে হচ্ছে বাড়ি খালি।।
হতাহত হয়নি কোনো খবর গেছে পাওয়া।
বিমান বাতিল হচ্ছে শত শঙ্কার এলো হাওয়া।।
@
( নির্ভেজাল সংবাদ পরিবেশন করে 'দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম')

২৭/১১/২০১৭

বিষদাঁত

।। কপোতাক্ষী ব্রহ্মচারী।
(C)Image:ছবি










ই বাড়িটিতে দুটো সাপ খেলা করে।
রোজ রাতে ছায়ার মতন, আসে ঘরে।
সন্তানের মুখে চুমো
  খেয়ে-
অবসন্ন দেহে একে অন্যকে জড়িয়ে,
বিষ ঝাড়ে পরস্পর, বাড়ে প্রত্যাঘাত,
ক্রমশ গভীর হয় রাত!
নবরবি প্রভাতের আগে,
সাপের খোলস ছেড়ে নরনারী মূর্ত অনুরাগে-
বলে,- সুপ্রভাত!
শিশুটির খেলাঘরে,অগোচরে জন্ম নেয় দুটো বিষদাঁত!

রক্তাক্ত চিঠি


   ।। রফিক উদ্দিন লস্কর ।।

(C)Image:ছবি














পাথরের গায়ে লাল রঙ মেখে স্মৃতিরা হাতড়ায়,
বিষণ্ণ বিকেলে অশ্রু বর্ষায় সব ধুয়ে মুছে যায়।
বিরহী পালক ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয় রাস্তার মোড়ে,
গোধূলি লগনে আত্মার চলাচল রাস্তায় ধূয়া উড়ে।
মিটমিটে আলো শ্বাপদের ভয় প্রতি পদে পদে,
ভয়ে জবুথবু সাঁতার কাটে একাকী রক্তাক্ত হ্রদে।
শিউরে উঠে বিনিদ্র রজনী পাঁজর ভাঙার চিৎকার,
ঘেঁটুবন কোলাহলে মাতে অন্ত পড়ে সব নীরবতার।
আঁধারচিত্র বসে বসে আঁকে রক্তের পেন্সিল,
কর্ণকুহরে চাপা শব্দ উতরায় করে মহা মিছিল।
 
টিপটিপ
 পায়ে এগিয়ে চলে হতাশার সকল ছাপ, 
বলাকার ভিড়ে হানা দেয় কাক, বাড়িয়ে দুই ধাপ।
                         ***********
২৭/১১/২০১৭ইং
নিতাইনগর, হাইলাকান্দি (আসাম-ভারত)

পোশাকি আলাপ

।। অভীক কুমার দে।।

(C)Image:ছবি

.
গ্রীষ্মরাগ কমাতে বর্ষার কোন ত্রুটি থাকে না।
জল ঢালে খুব। সে জল ভাসিয়ে নিয়ে যায় অনেক কিছু, এমনকি জীবনযাত্রার ধারাবাহিকতা থেকে ভাবনাও। হারানোর কষ্ট কার না থাকে ? সময়ের যেমন, মাটিরও আছে।

সব জল ঢেলে দেবার পর বর্ষা যখন ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে, শরৎ আর হৈমন্তী খুঁজে দেখে কতটা ক্ষয়ক্ষতি। খুঁজতে খুঁজতে সব জল শুষে নেয়, মাটির ত্বক ফেটে তছনছ হয়ে গেলেও মন ভরে না, যদিও অপবাদ সব শীতের ঘাড়েই চাপে। শীতের কী দোষ ?

শুষ্কতার পোশাকি আলাপ নিয়ে মিথ্যে বলে না শীত, যারা আগে ছিল সব উষ্ণতা নিয়ে লুকিয়ে আছে, অথচ বাতাসের গায়ে এই সময় জলের বড়োই অভাব, তবু বছরের হিসেব মতোই এক বসন্তসোহাগ উপহার দিয়ে চায় আগামীকে।
....................

ঋতুক্ষরণের রোদচশমায় : পাঠকথা, কবি মিলনকান্তি দত্ত

ঋতুক্ষরণের রোদচশমায় 

চিরশ্রী দেবনাথ
স্রোত প্রকাশনা
মূল্য একশ টাকা
পাঠকথা : লিখেছেন মিলনকান্তি দত্ত 

          বি চিরশ্রীর দ্বিতীয় সংখ্যক কবিতার বই। কবি স্ব বচনে লিখেছেন '...একটি ভীষণভাবে মেয়েলিভাবনা নিয়ে বড়ো হয়ে ওঠা এই আমি এবং আমার কাছে কবিতা আমার সেই স্বপ্নের পুরুষ, তাই তাকে নিয়ে যতো ভাবি ততোই ভালো লাগে, ততোই স্নান করতে ইচ্ছে হয় ...",স্বাভাবিকতা এটাই, কবিপুরুষ যখন তার কবিতাকে 'বণিতা চৈব 'ভাবতে ভালোবাসেন, সে এক কল্পনালতা ও মানসসুন্দরী, সে এক রাণীর ঘাড়,  জ্যোৎস্না রাতে ব্যবিলনের... তখন ভীষণভাবে মেয়েলিভাবনা নিয়ে বড়ো হয়ে ওঠা কবি তরুণীর কাছে কবিতাকে একটি স্বপ্নের পুরুষের মতোই মনে হবে। স্নান করার অবচেতনাময় ইচ্ছেমালায় গ্রন্থিত বালিবর্ষা, দেবী শরৎ, হেমন্ত ধান, চন্দনশীত, বসন্ত ধুলো, চূর্ণগ্রীষ্ম সিরিজে ঋতুময় একাশিটি কবিতা। অসাধারণ ভাবনা, অনুভূতি এবং প্রকল্পনা। কবির উচ্চারণে নারী আছে, বাদ নেই। দেহগন্ধ তুমুলভাবে উপনীত কিন্তু কবিতার আর্দ্রতা লঙ্ঘন করে নয়। ভালো লাগে কবির চিত্রকল্প, শব্দনির্মিতি ...হৃদয় অলকানন্দা থেকে উৎসারিত অমোঘতরঙ্গগুলোর কবিতা রূপান্তর। আলাদারকম কোনো কবিতার উল্লেখ না করে কবিতাপাঠকের কাছে প্রত্যাশা রাখছি কাব্যটি পড়ে দেখার জন্য। কেন না চিরশ্রীর কবিতা কি  অনায়াসে বলতে পারে
"গণসংগীতের সুরেও বর্ষা নামে
রবীন্দ্রগানের মতো আকুল কদম হয়তো নয় "...এমন নিযুত গন্ধরেনু, নারীময়, অথবা পৃথিবী জুড়ে পড়ে থাকা মাংসকাটার গান।
          প্রচ্ছদ তার মতো করে কবি নিজেই এঁকেছেন, অকপট সারল্যের ছোঁয়া লেগে আছে রেখাপাতে। কবির দুটো ছবিসহ দু  'মলাটে বিস্তর কথালাপের দরকার ছিল না হয়তো, কবিতাই তো কবির বক্তব্য। মুদ্রণভ্রান্তি আছে, এই প্রকাশনা থেকে যেমনটা হয়, শেষপৃষ্ঠায় শুদ্ধিতালিকা সংযোজিত ...এসব প্রকাশকের অনবধানতা বা প্রযত্নমেধার অভাবকে স্পষ্ট করেছে।

সাধারণী

।। চিরশ্রী দেবনাথ।।

মেয়েদের নিয়ে কেউ কিছু   লিখতে বললেই, আমার একটি, দুটি বা তিনটি বা আরো অনেক  মেয়ের কথা মনে হয়। তারা কেউ চাবুক নয়, শানিত নয়, তেজী নয়, মেধাবী নয়, কেউ আহামরি বিশ্রীও নয়, আকুল সুন্দরীও নয়। তারা বধূ। শুধু মুধু বধূ। আহার বানায়। ঘর গোছায়। টিভি দেখে। সন্তানকে পড়ায়। প্রিয় মানুষের জন্য সাজে। তাদের ঘাম লাগানো জামাকাপড় খুঁজে খুঁজে জড়ো করে। কাচে। হাতে বা মেশিনে। কোনটা কি ভাবে ভালো হবে নিজে নিজে ভাবে। যেন নিখুঁত থাকে কাপড়ের রঙ, সুতোর বাঁধন । 

গানও শুনে নিজের মনে গুনগুন অথবা একটু জোড়ে। এই মেয়েরা অনেকেই গভীর নয়। হৃদয়ে বাসা বাঁধেনি শিকড় ছড়ানো অবাধ্য অশ্বত্থ। সন্ধ্যার আবাহন শেষে অনেক অনেক ঘরে সুগন্ধা ধূপের মতো তারা বিকশিতা হয়।

          তাদের একটি গোপন মানি ব্যাগ থাকে। টাকা জমায়। এই টাকার কথা কেউ জানে না। এখান থেকে একটু খরচ হলে কড়ায় গণ্ডায় হাজব্যান্ডের কাছে হিসেব চায়। ঝানু ক্যাশিয়ার, একেকজন, হু, বললাম তো।

         আর পরিবারের বিপদে, প্রিয়জনের প্রয়োজনে,  এই মাঝারি নরম মেয়েগুলো নিজেদের সর্বস্ব এমনকি শরীর থেকে চোখ, ধমনি , ত্বক , কিডনি খুলে দেয়, একবারও না ভেবে, হ্যাঁ এমনি শক্ত তাদের ডিসিশন। বিনিময়ে চায় কি কিছু? মহৎ হওয়ার সোনালি সার্টিফিকেট। মনে করে আরে এতো কিছুই না। এ জীবনটাই তো দেবার। কি সাধারণ এই অসাধারণতা।

       তাদের বর্ষার দিন আছে। পেঁয়াজি মুড়ি আছে। রান্নার বই দেখে অপরিণত দক্ষতায় কেক বানানোর বহুবারের প্রচেষ্টা আছে।
বিয়েবাড়ির তত্ত্ব সাজানোর তৎপরতা আছে।
হ্যাঁ গো, তুমি গো প্রচুর ন্যাকামো, ঢলে পরা আছে।

             সারারাত ঠায় বসে থেকে জ্বরে ভোগা প্রিয়জনের নিমগ্ন সেবা আছে। পরের বা তারও পরের বহুদিন না ঘুমিয়ে কাটানোর অভ্যাস আছে। সারাদিন ঠায় কাজ চালিয়ে দেবার সাধারণ ক্ষমতা আছে। হাসি হাসি মুখ আছে। অল্প আদরে গলে গলে জল হয়ে যাওয়ার জলপ্রপাত আছে।
          বাজার থেকে ঝুটমুট জাঙ্ক জুয়েলারি, সস্তার রঙচঙে জিনিস কেনার অপরিসীম ট্যালেন্ট আছে। সব্জিওয়ালার সঙ্গে ভীষণ তর্ক করার বাগ্মিতা আছে।
তাদের স্নানঘরে দীর্ঘ স্নান আছে, নিজেকে খুলে দেখার কিশোরী অশ্লীলতা ।
  
            দুপুরে তারা ঘুমিয়ে পড়ে। 
পাশে থাকে মাঝারি মানের ম্যাগাজিন, বই, এখন অনেকেরই ফেসবুক।
 
          তারা স্বপ্ন দেখে, ঝকঝকে একটি ডিনার সেট কিনবে, আর একটু পয়সা জমে গেলে বাহারি ক্রিস্টালের হরিণ।
         সেই হরিণ থাকবে বসার ঘর আলো করে।
ঢুকলে মনেই হবে না
  মধ্যবিত্ত জীবন ।
        মনে হবে রাজ্যের পাশে একটি বন।
মেয়েটা সেই রাজ্যের রা
নি। শিকারে বেরিয়েছে।
হাতের তালুতে মুঠো মুঠো আলো। হাসির আলো,
তোমার সঙ্গে মিশে আছি’। এই কথাটি বলার আলো। যা দিয়ে সে তার বনের সব নিভৃত সুখ শিকার করে।
            যোদ্ধা মেয়ে বটে তারা, সাধারণ সাধারণ খুব সাধারণ, তারা কিছু করে না, কিছু পারে না, একদম শুধু শুধু।

সেই তাকানো

।।  চিরশ্রী দেবনাথ।। 
(C)Image:ছবি
মি কালো মেয়ে।  এ কথাটি জানতাম না ছয় বছর বয়স পর্যন্ত। আমার বাবা আমাকে প্রিন্সেস বলতো আর মা প্রজাপতি। আমি শুধু আনন্দ জানতাম। কি সুন্দর পৃথিবী ছিলো আমার।  আমি স্কুলে ভর্তি হলাম। আমাকে প্রিন্সিপাল নতুন ক্লাসে নিয়ে এসে বসিয়ে  দিয়ে গেলেন।
          চারদিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি। একটি মেয়ে এগিয়ে এলো আমার দিকে, খুব অবাক হয়ে তাকালো, তারপর বলল তুমি এরকম কেন দেখতে? আমি ক্লাসের সবার দিকে তাকালাম, আমি তাদের মতো নই, কম কালোও নই। কালো খুব কালো আমি।
আমার প্রথম কান্না।  প্রথম মনখারাপ। প্রথম আয়নায় দাঁড়ানো।  প্রথম নিজেকে দেখা। লুকিয়ে থাকা। মা  বুঝতে পেরেছিলেন, যেন এটা তার জানা ছিল। এখন মাঝে মাঝে মনে হয়কেন মা, সেদিন একসঙ্গে  আমাকে প্রকাণ্ড বাস্তবে ঠেলে দিয়েছিলেন  একটু একটু মনখারাপের জমি তো আগে থেকেই তৈরি করতে পারতেন।
আসলে মা পারেননি। মা ধবধবে ফর্সা ছিলেন।
          সেই ছয় বছরের স্কুল থেকে ফিরে আসা বর্ষার দুপুরে মা আমাকে বুকে জড়িয়ে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিতে লাগলেন। আমি মা কে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কাঁদতে লাগলাম। মাও কাঁদতে লাগলো। সেই থেকে একজন ফর্সা আর একজন কালোর একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কান্নার শুরু।

স্কুলের ফাউন্ডেশন ডে তে  নাটক হবে, "পরীর দেশে
আমাদের ক্লাসের সব মেয়েকে নেওয়া হলো, এমনকি শ্যামলা মেয়েকেও, কিন্তু আমি বাদ গেলাম, কারণ আমি নিখাদ কালো। কালো পরী কি হয় কখনো?
         মা বাবার সঙ্গে বসে নাটক দেখলাম। ভেতরে কাঁদলাম। কিন্তু বাইরে ঝরলো না। কারণ আমি তখন ক্লাস এইট।
কান্না গেলা শিখে গেছি।
       গান গাইলাম। ইংলিশ ব্যান্ডের গান। বাবা শেখাতো গান ও গিটার দুটোই। সারা স্কুল আমার সঙ্গে গাইলো। আমার কালো রঙে স্কুল ছেয়ে গেলো।

ক্লাস ইলেভেন। প্রথম ভালো লাগা। জানতাম আমাকে কেউ চিঠি লিখবে না গোলাপি চিরকুটে, শিউলির দিনে।
নাম তার সাগরকেতু। অন্য স্কুলের। কোচিং ক্লাসে দেখা হতো। ভীষণ ব্রিলিয়ান্ট।
  অগোছালো চুল। ভারী লেন্স। শুধু  মনে হয় দূরে কোথাও তাকিয়ে আছে।
আমার সঙ্গে  সব  ছেলেদের দারুণ বন্ধুত্ব। মেয়ে বন্ধুরা আমাকে খুব নিরাপদ ভাবতো। ভালোবাসা দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ভয় নেই। আমাকে ভুল করে ভালোবাসার ভুল কেউ করবে না। অতএব আমি বিশ্বাসী । ততদিনে আমি মানিয়ে নিয়েছি। এক্সপেক্টটেশন নেই আমার।
          তবু কিশোরীবেলা। অভ্রান্ত ভালোলাগা,
  কালবৈশাখীর মতো আমাকে উড়িয়ে দিচ্ছে মুহূর্ত ভেঙে ভেঙে, পড়ার টেবিল উপচে উপচে। একটি খুব অপমান পেতে সাধ হলো।
সেই ছেলেকে বলে ফেললাম, চোখ বন্ধ করে। একটি হাসি, একটি অট্টহাসি শুনলাম। আর তাকালাম না।
কোচিং ছেড়ে দিলাম। 
          বাড়ি, আমার গভীর পড়ার টেবিল, এন্ট্রান্স পরীক্ষা। মেডিকেল। ডাক্তার হলাম।
বদলে দেওয়া যায় না  মানুষের গায়ের রঙ। জানি সব বায়োলজিক্যাল মিথোস্ক্রিয়া। তবুও....। জয়েন
করেছি আজ এক সাঁওতাল গ্রামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সবাই কালো এই গ্রামের। আমি তাদের কালো ডাক্তার। যেতে পারি ইচ্ছে করলেই ঝাঁ চকচকে শহরের নার্সিংহোমে। আমার ফর্সা,
  সুদর্শন ডাক্তার বন্ধুরা জয়েন করেছে অনেকেই এখানে ওখানে।
যাবো না।
এটাকেই বলে পালানো। নিজের থেকে, ফর্সা রং  থেকে।
সব অর্জিত হলো শুধু সেই তাকানোটা সহ্য করতে পারি না। সেই যে চেম্বারে যেকোন পেসেন্ট ঢুকলেই
প্রথমেই আমার অসম্ভব কালো রঙের দিকে তাকায়। যেন মেলাতে পারে না, পারে না কিছুতেই। তাই আমি কালো মানুষদের সঙ্গে থাকি, একটি তাকানো থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে।
ন্যাশনাল কনফারেন্সে এসেছি। এপ্রিলের  দিল্লী। গনগনে দুপুর। ফিনফিনে লু । লাল শাড়ি পরেছি। টকটকে লাল। একমাত্র লাল কালোতেই যে দুলে ওঠে পৃথিবী। 
প্রতিবাদ।
জেদ।
যেন রোদে দ্রবীভূত হবো।
হোটেলের পাঁচফুট বাই তিনফুট বিশাল আয়নায় দেখছি আমাকে।  একদম আগুনের মতো লাগছে।
বলবো ।পুরো দেড়ঘণ্টা সময় বরাদ্দ আমার প্রেজেন্টেশনের জন্য।পুরস্কারও আছে। WHO এর প্রতিনিধি তুলে দেবেন হাতে।
          পলাশবন সাঁওতাল পরগণার গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিষেবার আশ্চর্য উন্নতি হয়েছে। সব বাঁধা ভেঙে আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামে গ্রামে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির ভোলও বদলে গেছে। এসবই সম্ভব হয়েছে এক তরুণী ডাক্তারের আন্তরিকতায় আর পরিশ্রমে।
আজ তাই ডা: শাল্মলী রায়  বিশেষ ভাবে আমন্ত্রিত।
তাকাচ্ছে আমার দিকে সবাই  খুব বেশি করে।
ভেতরে একটি কান্না ,  ঠাণ্ডা  বিষ ছুটছে যেন!
কোনদিন কি মেরে ফেলা যাবে  এই তাকানোকে?

বন্যসমাজ

।। সুমন পাটারী ।।
     
(C)Image:ছবি
    আ
মি জিরাফ, আদতে মরণশীল তৃণভোজী, গলা লম্বা করে যা পাই দেখি বনপ্রদেশ। এই যেমন এই শহর, এখানে বিল্ডিং পুরানো, ফাটলে পাখির বিষ্ঠা থেকে জন্মে কিছু গাছ এখন বনের ছাতা, বাকিরা তার ছায়ায়।বাঘ বেড়ালের বংশ, সিংহ এই বনে থাকেনা, কিছু শেয়াল এই বনের রাজা, বস্তুত ক্ষুদ্রমাথার প্রাণী, এদের একটা দল থাকে, দলে খুন করে, দলে বাঁচে। এই আমাদের বনে যে দল থাকে বনাঞ্চলের অন্যপ্রান্তে তাদের জায়গা নেই।  তাদের খুনের পরিকল্পনার হলগুহা পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে এখন, নকুল , সাপ , টিকটিকি তাদের বন্ধু, সহযোদ্ধা খুনি।
         বন্ধুরা সকাল হলেই বেরিয়ে পড়ে বনে, খোঁজে শ্রমিক পশু, এই যেমন বলদ, ছাগল, ভেড়া গাধা ও খচ্চরের মতো বনবাসিন্দা।এই সময়ে এদের বিষ ও শীতল খুনি মেজাজ আড়ালে রেখে ওরা মুখে চুম্বকীয় দরদ মাখে।  আরেকদল শেয়াল এই মুহূর্তে বনসভার উঁচু পাথরের জন্য লড়াই করছে। এরা আরো দক্ষ খুনি, ক্ষমতা পাওয়ার আগেই লাঠি হাতে নিয়ে নিয়েছে। বনে বনে ঘুরছে, বুক পকেটে তীক্ষ্ণ পাথরের ফলা, এরা বনশিশুদের ঘাস আহরণের কলাকৌশল শিক্ষা কেন্দ্রে হানা দিয়ে প্রচুর ঘাস লুট করে, জ্বালিয়ে দেয়, বলতে চাইছে হয়তো, আপামর মাংসভুক এক হও, আমরা এই বনসমাজের শিখরে এলেই বন্যকালীর পুজো হবে, হবে খুনের উৎসব। বাহ্ বাহ্ বাহ্ জনাব বলে হাততালি দিয়ে উঠলো একদল পাঠা।
          এভাবেই রোজ সভা হয়, বনমোরগ আসে, গাড়ি গাড়ি, গলায় চাকু, তাদের চিৎকার করতেই হবে। রক্তবর্ণ হয়ে যায় মাঠ,বন গভীর হচ্ছে, ক্রমশ গভীর, বর্ষা আসন্ন, আরো, আরো অন্ধকার হবে বাস্তুতন্ত্র, অনেক কেরানি হরিণ আরো হারাবে। খুন হবে বনের সাংবাদিক বানর, ওরা শিকারিসংকেত দিতো। সুন্দর শরীরের জেব্রা দম্পতি একে অপরের গ্রীবা চাটছে,  চাটছে, চাটছে, চেটেই যাচ্ছে....

রবিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৭

জীবনধর্ম ৫

।। সুমন পাটারী ।।
(C)Image:ছবি
কালবেলা পড়েছি অনেক দেরি হলো জানিনা কেন কাল সকাল থেকে ইচ্ছে হচ্ছিলো একবার পড়ি।বাইখোড়া পাব্লিক লাইব্রেরি, সন্ধ্যা সাতটা, আমি গিয়ে ঢুকলাম, ভেতরে বসে আছেন অমুক বাবু, পান মুখে অনেকটা বিচ্ছিরি বেলাজ ঘরজামাইর মতো বলে ওঠলেন, কী রে! এখানে কেন? আমি খুব স্বাভাবিক ভাবে বই খুঁজছি আর অমনোযোগী ভাবে নার সাথে দু-একটা কথার উত্তর দিচ্ছি। হঠাৎ-- বলে উঠলেন "এইসব কবিতা,( নাটকীয়,) কোনো লাভ নেই, চাকরি একটা ব্যবস্থা কর নাইলে কেউ মুলাইতো না, কোনো দাম নাই" চাকরি থাকবো, যে কেউ কথা কইতে চিন্তা করবো, বাকি সাকি ধারদেনা জীবনযাপন সহজ হইবো .....ব্লাহ ব্লাহ!" আমি বই খুঁজছি তখনো, আমি দুটো বই নিয়ে ইস্যু করালাম তখনো উনি বলে যাচ্ছেন, আরো অনেক কথা যা নিতান্তই সহজলভ্য ডাইলগ মনে হলো, তাই তুলিনি।
একটা কথা শুধু শেষে বলে উঠলেন,
এইসব বই পড়া কই যাইবোগা টের পাইতি না; নাটক নাটক লাগের কয়েকদিন, কবিতা, এসবে ভাত দিতো না! এখনো টের পাওনাইতো জীবন কী জিনিস? তখন যদি ভালো করে পড়তি আজ এই কাজ করতে হইতো না" মাথা নাড়া দিয়ে উঠলো, কী রে! আজে বাজে যা ইচ্ছা বলে লে যাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করি, আপনি কয়বেলা খান ভাত? পারিনা রে বাবা একবেলা খাই, সুগাররে খাইয়ালাইছে শরীর, হার্টব্লকও আছে।” আমি কিন্তু স্যার তিনবেলা ভরপেট খাই, নিয়ম করে হাগি, আর হজম ও খুব ভালো, বলে একটা হাসি দিলাম উনিও একটি সংকুচিত হাসি দিলেন চলে এলাম। আসতে আসতে ভাবছিলাম এখানে শিক্ষা শুধু জীবিকার জন্য, চাকরি করে সঞ্চয়ের জন্য, পরে খাবো, পরে খাবো করে শুধু ওষুধের জন্য জমানো হয়।
জীবন একইসাথে একটি স্বসহায়ক ও স্ববিরোধী স্বত্বা,যা তার ধারণকারীকে প্রতিনিয়ত সংরক্ষণ ও আঘাত করে। আবিষ্কারের প্রথম ডিমান্ড জিজ্ঞাসা মধ্যবিত্ত মনে যন্ত্র আবিষ্কারের ধারণা বিরল ভাতে ঘুমে জননে চলে যায় আশি বছর, বস্তুত আমরা যা দেখতে পাই তা হলো ভবিষ্যৎ নির্মাণের শিক্ষা দিয়ে থাকে প্রতিটি পিতামাতা সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ বলতে কিছু হয় না এই একটা চাকরি ও সামান্য বেতনে রুটিনমাফিক চলা সামান্য সঞ্চয়ে একমাসের তীর্থ যাত্রা এই ছক বাঁধা জীবন থেকে মুক্তি দরকার। জীবন বাঁচতে জানতে হয়; প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসে। সুখ মানুষকে বিকলাঙ্গ করে তোলে, আবিষ্কারের প্রয়োজন থাকেনা  নিশ্চয়তা মানে মৃত্যু, কোনো ভাবে ঘেমে ঘুমে রিটায়ার জীবন আসলে চুরি, জীবনের মুখোমুখি দাঁড়াতে ভয় পাওয়া
জীবন অনেকটা কপট ইন্দ্রের অহংকারী বর্ষাসেনা জীবনের ধারণকারী ব্যক্তি স্বয়ং  বাজ-বৃষ্টিতে স্থির গোবর্ধন।  যেকোনো কাজ জীবন যাপনের প্যাশন, জীবন ধারণ নয়। যে ঘাম ঝরাতে কৃপণতা করে আর যাই হোক সে অন্তত দৃঢ়চেতা ব্যক্তি নয়। যে কোনো সময় তার ফর্মুলা নিজে বাঁচলে বাপ হতে পারে। শারীরিক বা মানসিক শ্রম কখনোই মানুষের কষ্ট হতে পারে না, যারা বলেন তারা মেকি, ছদ্মবেশী মোমগাছ, কষ্ট সম্পর্কের, সম্পর্কসৃষ্ঠ।
একজন প্রকৃত শিক্ষিত লোক কখনোই একজন শ্রমজীবী ও একজন প্রফেসরের সামাজিক লেভেলের বৈষম্য দেখে না যদি আপনি দেখেন তবে আপনার শিক্ষায় ফাঁকি ছিলো। আপনি মূর্খ। দুটোই জীবন ধারণ। পার্থক্য জীবন যাপনে, আপনার শিক্ষায় জং ধরছে কি? আপনি কি যা পড়েছেন তার সামাজিক বা ব্যাবহারিক প্রয়োগ শিখেছেন, বইয়ে বন্ধ আছে কি সব? নিজের ভেতরে অক্ষরের সঠিক সচল রাখা খুব জরুরি

দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম

( সার্কাসের খাঁচা ভেঙ্গে প্যারিসের রাস্তায় নামলো বাঘ ! )















।। এম রিয়াজুল আজহার লস্কর ।।
@
প্যারিসেতে রাস্তার মধ্যে বাঘটি হঠাৎ নামলো।
ভাগলো মানুষ দলে দলে শঙ্কাতে খুব ঘামলো।।
রাস্তার মধ্যে বাঘ এসেছে যেই না উড়ে বুলি,
পুলিশ এসে তড়িঘড়ি মারলো করে গুলি !

সার্কাসেতে বাঘটি ছিলো খবর এলো খাস।
ভাগ্য লোকের ভালোই ছিলো হয়নি তো কেউ লাশ।।
ভাঙল বাঘটি কেমনে খাঁচা প্রশ্ন উঠে নানা।
তদন্ততে নামলো পুলিশ খবর গেছে জানা।।
@
( নির্ভেজাল সংবাদ পরিবেশন করে দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম ”)
২৬/১১/২০১৭


শনিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৭

ভবের পাগল


















   ।। সিক্তা বিশ্বাস ।।
হাসছো তাঁরে ক্ষ্যাপা বলে
তাঁর ক্ষ্যাপামো আপন তালে
তোমরা যারা ভবের রাজা
তাঁরে কাঁদিয়ে কি পাও মজা !
পাগল বলে হানছো আঘাত !
ছুঁড়ছো পাথর নিচ্ছ মজা !
পাগল সে যে মনের রাজা
 
দিচ্ছ তাঁরে এ কেমন সাজা !
হাসছে সেও  সবারে দেখে ,
হচ্ছে অবাক পাগলামো ভেবে !
এ কেমন খেলা ,আনন্দমেলা ---
আঘাত হেনে
  সারা বেলা !
ভাবায় তাঁরে বারে বারে 
অধিক আনন্দ বুঝি নেশার তোড়ে !
আজ জীবিত কাল সে মৃত !
তাই বুঝি এই
  সুধামৃত
থাকোনা যে যাঁর মত ভালো
আঁধার কেটে হবে আলো
 
পাগলামো সব যাবে চলে
 
আত্মতুষ্টির আপন তালে
##ঝোড়োমেঘ সংকলন ##
      শিলং l

দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম

( কাছাড় জেলায় ১.৭৫ লক্ষ এনআরসির নথিতে গরমিল,
শিলচরে ছুটে এসে ভেরিফিকেশন নিয়ে অভয় দিলেন আরজিআই )
(C)Image:ছবি

  










।। এম রিয়াজুল আজহার লস্কর ।।
@
নআরসিতে শঙ্কা হরেক মানুষ কাঁপে ভয়ে।
হিংসা রুখতে আসছে পুলিশ বাঘের মত হয়ে।।
কাছাড় জেলায় নথিপত্রে অমিল নাকি বড়ো।
বৈঠকে তাই এসপি ডিসি সবাই হলো জড়ো।।

শিলচরেতে আরজিআই যে নামেন উড়ে এসে।
সার্কিট হাউসে মিটিং হলো অভয় দিলেন শেষে।।
কেরেপুর দল আনাচ্ছেন যে বাতাস পেয়ে বোধ।
নথি সব ফের হচ্ছে দেখা বলেন তিনি খোদ।।

হপ্তা পরেই এনআরসির লোক যাচ্ছে বাড়ি বাড়ি।
অমিল নথির সমাধানটা হচ্ছে তাড়াতাড়ি।।
এনআরসির সব কেন্দ্রের মধ্যে থাকবে পুলিশ বল।
হিংসা হানা করলে বা কেউ ভুগতে হবে ফল।।

শান্তি নীতি বজায় রেখো বলেন তিনি শোনো,
উঠছে নামটি ভারতীয়র শঙ্কাটি নেই কোনো।
@
( নির্ভেজাল সংবাদ পরিবেশন করে দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম ”)
২৫/১১/২০১৭


দুধের হাসি।। - আবু আশফাক্ব চৌধুরী।

বাছুরের মুখের উদ্বৃত্ত ফেনা
সকালের সোনালী রশ্মিতে
চকচক করে ওঠছে-
দোহনের স্বাদ নিতে গোয়ালিনী
গলায় গুনগুন সুরে
টানছে স্তনের বোঁটা

মাছি তাড়ানোর লোকটা
গাভীর মুখ ধরে মাতৃ আদরে
বুলিয়ে যাচ্ছে কোমল হাত

বাছুর চেয়ে আছে কাতর নয়নে
কবে ছাড়া হবে বাট
গোয়ালিনী চায় ঘট  দুধে পূর্ণ হোক...

কে ছিনে নেয় কার অধিকার
বাছুর না দোহক
কার বেশি দরকার
দুধ না বুঝেই হাসে বোকার হাসি।

শুক্রবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৭

দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম

( আন্তর্জাতিক চাপে নত আন সাং স্যুকি !
 দু'মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ফিরছে নিজ দেশে,
 মায়ানমার ও বাংলাদেশের চুক্তি)
















।। এম রিয়াজুল আজহার লস্কর।।
@
মায়ানমারে নরক জ্বলে বিশ্ব গোটাই কাঁদে !
নিন্দার ঝড়ে নেত্রী স্যুকি পড়ে ভীষণ ফাঁদে !!
চাপটা খেয়ে হচ্ছে নত হিংসা হানার রানি !
রোহিঙ্গাদের জন্যে হঠাৎ তুললো ঠোঁটে বাণী !!

শরণার্থী রোহিঙ্গারা যাচ্ছে ফিরে দেশে।
বাংলাদেশ ও মায়ানমারের চুক্তি হলো শেষে।।
বাংলা মায়ান মিটিং হলো খবর গেছে জানা।
নথিটা কী চাচ্ছে তারা প্রশ্ন উঠে নানা।।
@
( নির্ভেজাল সংবাদ পরিবেশন করে
" দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম ")
২৪-১১-২০১৭


দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম

( জেলে রাজার হালতে কুখ্যাত যৌন সন্ত্রাস রাম রহিম,
 দাবি সদ্য মুক্তি পাওয়া এক বন্দির )














——এম রিয়াজুল আজহার লস্কর——
@
ধর্ষণের দায় বিশটা বছর পেয়েছেন যে সাজা।
যৌন সন্ত্রাস জেলের মধ্যে আছেন হয়ে রাজা।।
জেলের মধ্যে জামাই আদর যাচ্ছে পেয়ে রোজ।
জেল মানুষরা ঘন ঘন নিচ্ছে যে তার খোঁজ।।

সদ্য মুক্তি পাওয়া বন্দি রাহুল এসে বলে,
নিয়ম ভেঙ্গে জেলেতে তার খাতির যত্ন চলে !
ইচ্ছে মতই পাচ্ছে সবই খাচ্ছে বাবা খানা !
বাবার জন্যে জেলের মধ্যে নিয়ম নীতি নানা !!

বাবা যখন হাঁটেন ফেরেন কাজটা দিয়ে ফাঁকি,
পারবে না বের হতে তখন বন্দি যারা বাকি  !
অ-লি-খি-ত  নি-র্দে-শি-কা জারি বাবার জন্যে !
বাকীরা সব পাচ্ছে আজাব বাঁচছে হয়ে হন্যে !!
@
( নির্ভেজাল সংবাদ পরিবেশন করে দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম ”)
১৫/১১/২০১৭


বৃহস্পতিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৭

দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম

( ইরাকের তুজ খুরমাতু শহরে ভয়াবহ বোমা হামলা, 
হত ২০ , আহত অনেক হাসপাতালে )

 ।। এম রিয়াজুল আজহার লস্কর ।।

(C)Image:ছবি













রাকেতে ফাটলো বোমা বিশটা মানুষ হত।
অনেক আরো হাসপাতালে সারা শরীর ক্ষত।।
খবর পেয়ে অকুস্থলে নামলো সেনা এসে।
কাপুরুষের হামলা এটি নিন্দা সারা দেশে।।

খুরমাতু তুজ জেলার মধ্যে কাণ্ড এটি ঘটে।
শহর দখল করলো সেনা কুর্দি পুলিশ হঠে।।
ভয়ংকর এই জেলার মধ্যে হিংসা সারা বর্ষ।
আমজনতা পড়ছে ফাঁদে পায়না হাসি হর্ষ।।
@
( নির্ভেজাল সংবাদ পরিবেশন করে দৈনিক ছড়া সংবাদ আসাম ”)
২৩/১১/২০১৭