“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০১৭

মুই তর মিয়া আছি

।। মধুমিতা নাথ।।
























বাপ ----
মুই পাস দিলুম গ

তুহার হাতে হাতেখড়ি
অ আ ক খ -- তুই সিখালি
বাগানবাড়ির অঙ্গনওয়াড়ী
আঙুল ধরে তুই ত নিলি

ছকাল হলেই পান্তা ভাতে
সামাই কলা , খেজুর লালি
আদর ঢেলে কালাই থালে
গরাস করে তুই খাওয়ালি

নিজে খেলি মরিচ পুড়ে
মাই কে দিলি আধেকটা
মকাই রোটি ঠুঙায় পুরে
সাজাই দিলি 'টিফিনটা'

ভুখা পেটে জন খাটিলি
মাই ত করল বাবুর কাম
সান্ঝের বাতি জ্বলল যখন
পাইলি না তুর ঘামের দাম

কুপিবাতির আলোয় বইসে
পুঁথির পাতায় দিখাইতিস
লছমী বাই এর তলোয়ারের
ধার হামাকে বুঝাইতিস।

চিনাইছিলিস দয়ার সাগর ,
কবিগুরু , রামমোহন
তুর চুখেতে দেইখেছিলুম
তুহার বুকের বেজান জ্বলন

চিনাইছিলিস ই পিত্থিবীর
দুইটা জাতির মুনিষ সব
মালিক দলের অনেক আছে
ভুখার দলে মজুর সব

লিখা পড়ায় কম ত ছিলিস
হিসাব কিতাব বুঝিস লাই
তাই ত শপথ লিয়েছিলিস
ভুখার পেটে অন্ন চাই

মুই কে যতন কইরে ছিলিস
সপন ছিলস মন-উদাস
মিয়া হবেই লিখা পড়ায়
বি এ এম এ সবটা পাস

বারো বছর হাজার-বারো
বেজান দুঃখ ডাক দিল
বুকের খাঁচায় লাল সুরুজের
লক্ষ পিদিম জ্বলছিল

ঐ বাপ
ইবার কান্দিস কিনে ---

বারোটা ক্লাস পাস ত দিলুম
ইবার কলিজ যাবক লাই ?
দিদিমুনি হবক যে মুই
বুলছি হামি , চিন্তা নাই

আরও বড় পাস ত দিবে
তুহার বিটির লুহার জান
ভুখা পেটের দিন ফুরাবে
রাখবে বিটি তুহার মান।।

         -----------///---------

কোন মন্তব্য নেই: