“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০১৭

তিনটি কবিতা

~~ সুমন পাটারী~~
(C)Image:ছবি















।। বাবার হাতে আমার হত্যা ।।

বাবা আমাকে বাড়ি করে দিয়েছে
পড়া লেখায় খারাপ বলে অনেক সঞ্চয় দিয়েছে।
তাই সে দিকে প্রথম
থেকেই ভাবতে শিখিনি,
একদিন বাবা অবসর নিলেন,
সারারাত জেগে সেদিন বাবাকে গালি দিয়েছি,
আমার জীবন নষ্ট করার অপবাদ ও--
কাঁধে না নিয়ে আঙুল দিলে
আজ হয়তো রোবট না হয়ে মানুষ হতাম
ডুবে ডুবে বেঁচে না থেকে সাঁতার দিতাম।
বস্তুত আমার বাবাই আমার অভিযোজন ক্ষমতা নষ্ট করে দিয়েছে,
আমার ভেতরের বিপ্লব কে খুন করেছে।

।। কবির সাথে আড্ডা ।।

বির সাথে সেদিন সন্ধ্যায় জম্পেশ আড্ডা হলো,
আড্ডার শুরুতে অনেক গুলি বিক্ষিপ্ত মালভূমি,
তিব্বতি ঘর, সাইবেরিয়ান বারান্দা,
আমাজন আর সাহারায় বেঁচে থাকার সংঘর্ষ।
কবির চোখ গুলি খুব সাধারণ ছিলো!
সাহস করে কবির শরীরে হাত বুলিয়ে দেখলাম
না বুক আছে না উদর,
শুধু একটি নগ্ন হৃদযন্ত্র, ভেতরে শব্দের বিদ্রোহ,
কবি সেটা আগলে ধরে রেখেছে দুহাতে।
আগুনচূড়া শান্ত হতে হতে একসময় দেখলাম
সন্ধ্যার তপোবন,
নিঃশব্দে চলা দামোদর,
বালুশীতল জ্যোৎস্নায় কবি বাজায় নির্জন রাখালের বাঁশি।
বিষাদের এক পরম তৃপ্তি সেদিন কবির কাছে পেয়েছিলাম। 

।। ভালোবাসি বলেই দূরত্ব চাই ।।

তোমাকে ভালোবাসা ছাড়া কী আর করতে পারি
শুধু ভালোবেসে যাওয়া ছাড়া কী করতে পারি,
আমি প্রেমিক বলেই হয়তো কথায় কথায় তলোয়ার অথবা মলম দুটোই হয়ে যাই,
কিন্তু এ আমাকে ব্যাখ্যা করে না,
তোমার জন্য যা আছে তা নিরাকার,
এর বর্ণনা প্রেম অথবা ঘৃণায় সম্ভব নয়,
রাগ অথবা ভালোবাসা বলে কোনো আলাদা সময় নেই
যখন একে অপর কে গালাগাল দিচ্ছি
তখনও জড়িয়ে ধরে আদরের ইচ্ছে হয়।
আরো চাই বলেই যা পাই তা পাই না,
তাই আমাদের এতো খুনসুটি,
এর মাঝেও খুব ভালোবাসি,
ভালোবাসি বলেই দূরত্ব চাই।

কোন মন্তব্য নেই: