“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৭

আমি সাধারণ মানুষ

।। সুমন পাটারী ।।
(C)Image:ছবি













মি এ পাড়ার সাধারণ মানুষ,
বড় শহর থেকে উপনদীর শাখা ছড়ার মতো রাস্তা এসেছে,
এসেছে সেলাই মেশিন, দমকল ও কীটনাশক,
সাইকেল করে বাজারে যাই
কেনা বেচা হয়, তিন বেলা খেতে পারি।
এখন ভালো আছি বেশ।
কখনো এমন ছিলো--
ছোট বোন ছোট বলে ওর কাপড় লাগতো না,
বড় বোন বড় বলে ওর ক্ষুধা হতো না,
চার জন সন্তান বলে শেষের দুজনের অন্নপ্রাশনের শুভ অনুষ্ঠান হয়নি,
বাবা অসুস্থ বলে আত্মীয়রা ভুলে গেছে আমাদের গ্রামের রাস্তা,
লক্ষীছাড়া পলি নিয়ে চলে গেছে পড়শির ক্ষেতে--
আলু দিনের ক্লান্ত মুখে সস্তার ব্যাকারি বিস্কুট--
আহা হাসিতে লাফিয়ে উঠতো শ্রমের পাওনা,
সেখান থেকে বিশ বছর পর
আজ বোনের জন্মদিন, ধুমধাম করে পালন হলো, প্রথম বার,
খুব হেসেছে সে,
বাবাকে কাঁদতে দেখিনি খুব কাতরতায়,
আজ কেঁদে উঠলো চোখ,
সে জল দেখে মনে হলো এখন বেশ ভালো আছি।
এভাবেই একটু একটু কর জড়ো করি জীবন
এভাবেই একটু একটু সঞ্চয় করি চোখের জল,
খুশির এক দিনে কেঁদে নেবো বলে।
আমি এভাবেই বড় হয়েছি, আমার সাধারণ প্রজন্মও হবে,
এভাবেই থাকবো আমরা সাধারণ,
এই দেশ ও দেশের বৃহৎ সংবিধানের
অসংখ্য আইন ততোটা প্রভাব ফেলছেনা এই জীবনে।
কারণ এর মাঝে আইন ভেঙে কেউ আমাকে খুন করলে
দেশ আমার পাশে বিচারের নামে একজীবন সময় কেড়ে নেওয়া ছাড়া
আর কিছুই দেবে না।


@ সুমন পাটারী

কোন মন্তব্য নেই: