“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ৪ আগস্ট, ২০১৭

কবি, কবিতা এবং সময়


।। অভীক কুমার দে ।।

(C)Image:ছবি












বি আর কবিতার ব্যবধান অনেক,
কলম তা জানে না বলেই
কাগজের অবুঝ সাদায় বুকের রক্ত ঢালে।
.
কবি লিখতে চায়--
জানি, এ চাঁদ তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে দিলে
নরম আলোয় ছায়াঢাকা সবুজ শরীর শিউরে উঠবে, 

নতজানু হবে নদীজলে...
জলছোঁয়া ভেজা হাত খুঁজে নেবো আমি,
যেখানে মায়াভরা মুক্ত বাতাস
সুর তোলে আকাশতলে।
অথচ কবি দেখছে সময়ের নড়বড়ে সাঁকো,
কবিতা চলছে একা আর বলছে--
বয়সের কানাকানি শোনা যায় বাতাসে--
জাদুঘর খোলা থাকে ঝুলে থাকা আকাশে,
কিছুকাল নিয়মিত তালে চলে বায়ুচাল,
তারপর কালের কাছে আগামীটাই ফ্যাকাসে...
.
দিনের পর দিন কেমন অচেনা লাগে ভারি !
কাগজের সাদা শরীর তখনও আঘাত নিয়ে ফেরে,
যখন এক অকালশূন্য শরীর
কোন পরিত্যক্ত আবর্জনায়
ভস্ম হবার অপেক্ষা...
কবি- তা বোঝে না,
কবি তখনও লিখে যায়--
ক'টাদিনের একটানা বৃষ্টিভেজা শ্যাওলা উঠোন,
টানা বারান্দার পাশে দোল- খাওয়া বাহারি পাতার গাছ,
বাঁশঝাড়ের তলায় নুয়ে যাওয়া ধূলিপথ অথবা
মধুফুলের ডালে ঝোলানো দোলনায় আমি আমাকে আবার ফিরে পেতে চাই...
.
কবিতা বোঝে না কবির কথা।
কবিতা শুধু জানে--
কবি আর কবিতার ব্যবধান অনেক,
তারপর 

তখন
ব্যথা, ভীষণ ব্যথা...
কোথাও বুকের কাছাকাছি...
দিনের পর দিন কেমন অচেনা লাগে ভারি !
.
সময় সম্পর্ক হারিয়ে যাবার পর
আহত কাগজের সাদা শরীর আর সাদাও থাকে না...

কোন মন্তব্য নেই: