“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

সোমবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

নদী ও নারী

।। সুপ্রদীপ দত্তরায় ।।

(C)Image:ছবি











ই নদীটিকে আমি চিনি
উচ্ছল, চঞ্চল, আবেগ প্রবণ 
গলাতে তার অদ্ভুত সম্মোহন
চলার পথে যত কঠিন বাঁধা 
ক্ষিপ্রতর করে তার বঙ্কিম পথ।
লোকে বলে চপলা সে, অপলকাও বটে
গায়ে পড়ে  প্রেম ঢেলে যায়।
সে চঞ্চলা, না চাইতেই কারো বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে, 
কারো ভাসে বুক, তাই মনে ধুকপুক, 
কখন কি অঘটন ঘটায়।
শুনেছি ঘাট তাকে বলেছিল, কেন যাই যাই?
নদী বলে, আমি যে নগ্ন, তাইতো পালাই।
এই মেয়েটিকেও আমি চিনি 
উদ্দাম তার যৌবন, উচ্ছল তার গতি
চঞ্চল পদে যখন সে যায়
রক্তে উঠে জেগে সহস্র সুনামি ।
ভালোলাগা আর ভালবাসাতে যে পার্থক্য 
ভুল না করা অবধি তার ভুল ভাঙেনি ।
ভালবাসার লোকটা যেদিন আবেশের বশে বলে
তোমার মধ্যে নেই শ্রাবস্তির উন্মাদনা---
প্রথম সেদিন সে কুল হারাল ।
তারপর ---। তারপর দীর্ঘ সে কাহিনী, 
গোলাপের কাঁটাতে ক্ষত বিক্ষত সে
বঁধু নয়, তার আজ বারবধূতে পরিণতি ।
এখন তার অনেক নাম, জুঁই, চম্পা , মালতী ।
অথবা বেবুশ্যে, মাগী, এইতো পরিচিতি। 
আমি ওকে অনেক দেখেছি
মলের দরজাতে দাঁড়িয়ে 
সন্ধ্যায় সান্নিধ্যের আশায়
কিংবা রাত্রির অন্ধকারে অবগাহনের পথে
চোখে নিয়ে রক্তিম বিষণ্ণতা ।
রাত্রি গভীর হয় , জনপদ জনহীন, 
মেয়েটি ত্রস্ত পায়ে ব্যস্ত থাকে বন্ধুত্বের খোঁজে, 
ঠোঁটে জাগে রাত জাগা  হিমেল উষ্ণতা ।
দ্বারে দ্বারে  প্রশ্ন করে, কে আছো, বন্ধু হতে চাও ?
অর্থতে বিজিত হয়, নারীর নগ্নতা ।
নদী আর নারী তাই দুইই কাঁদে --- , অতল বিষণ্ণতায়
কারো বুক ভাসে জলে , কেউ কেঁদে বুক ভাসায়।


কোন মন্তব্য নেই: