বিপুলকুমার দত্ত । আসামের নলবাড়িতে এই অসমিয়াভাষী কবির জন্ম ১৯৬৯
সালের ১লা মার্চ । অর্থনীতিতে স্নাতক এই কবি টেক্সটাইল টেকনোলজিতে
প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত । অত্যন্ত বাস্তবমুখী এই কবি সমাজকে নতুনরূপে নির্মাণের ইচ্ছায়
নিমজ্জিত থেকে অনর্গল কবিতা লিখে চলেছেন । কাব্যগ্রন্থটি বাংলায় লিখিত । সম্ভবত
অসমিয়াতে না-লিখে সরাসরি বাংলায় লিখেছেন । কারণ
গ্রন্থটিতে এমন কোন উল্লেখ নেই যে লেখাগুলো অসমিয়া থেকে বাংলায় অনুবাদ করা
হয়েছে । যাই হোক
গ্রন্থটি উপহার হিসেবে পেয়ে আমার খুবই
ভাল লেগেছে । তাই আমার পাঠপ্রতিক্রিয়া, তাঁর
নজরে এলে আরো ভালো লাগবে । বইটির
নাম ‘কবির বেহালা’ । খুব সুন্দর নাম । চার ফর্মার এই বইটি প্রকাশ করেছেন
শ্রীরামপুর হুগলীর সপ্তর্ষি প্রকাশন এবং সুন্দর প্রচ্ছদ করেছেন বিপ্লব মণ্ডল ।
বইটির শুরুতে গোটা চল্লিশেক কবিসাহিত্যিককে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এই অতিবিনয়ী কবি ।
ভূপেন হাজরিকা যেমন খোলামেলা কথাকেও সুর
দিয়ে হৃদয়ের করে তুলতে পারেন, নিকানোর
পাররা যেমন ‘না-কবিতা’র কথাকেও কবিতা করে তুলতে পারেন,
কবিতার সঙ্গে তেমনই একটা প্রণয়েচ্ছা
রাখার সারল্য এই কবিও বহন করেন টের পাই । আট-এর
দশকের তির্যক বাক্য ব্যবহারের যে ধারা এই সময়ে ক্রমশ বিলীয়মান লক্ষ করি, তারই কিছু তীব্রতা তাঁর রচনায় রয়েছে ।
তবে তাঁর সুন্দর চেহারার মতোই সেগুলোর ভার্জিনিটি ক্রমাগত মুগ্ধ করে রাখে । তবু
কোন কোন রচনা অনাবশ্যক ভারবহনে ক্লান্ত আর লাঞ্ছিতও মনে হয়েছে । এগুলো, মঞ্চে পারফর্মিং আর্ট হিসেবে পরিবেশিত
হবার দাবী রাখতেই পারে ।
প্রতিবাদ অতিরিক্ত পরিশীলিত হয়ে গেলে
তার মূল এসেন্স হারিয়ে যায় বলে আমার বিশ্বাস । তখন প্রতিবাদটিকেও লজ্জিত মনে হয় ।কবির
ভাষা অত্যন্ত সহজাত, সহজ আর গতিশীল । এমন
ভাষা আয়ত্ত করাও এক কঠিন সাধনার ফল । তবে অধিকাংশ রচনাই কবির সরলতাকে(innocence)
লুণ্ঠন করে স্বয়ং-ব্যাখ্যাত হয়ে গেছে বলে
কোথাও কোথাও আমার মনে হল । তবু কবির সামাজিক দায়বদ্ধতাকে সেলাম না-জানিয়ে উপায় নেই ।
সাধারণত, এখন পর্যন্ত যাবতীয় লেখালেখিই কমবেশি আমাদের
পূর্বাশ্রিত-ধারণারই (অবধারণা) ফল মাত্র, যেখানে
বিনির্মাণের ঝুঁকি বা দুঃসাহস দেখাবার তৎপরতা খুব কমই লক্ষ করা যায় । পাঠক হিসেবে
কিছুটা ক্লান্তি আসে না ? আসে
। আর তাই আমরা শুধু প্রতীক্ষা করি । ততক্ষণে বহু জল বয়ে যায় । কিছু কিছু কবি,
কবিতা আর পাঠক, সকলেই ইত্যবসরে কালোগর্তে বিলীনও হয়ে যায় । বিপুলকুমার দত্তের
কিছু কিছু কবিতার পঙক্তি আমাদের গতানুগতিক মানসিকতার পুনরাবর্তিত উঠোনেও চটজলদি
বৃষ্টির মত ছড়িয়ে যায় কিছু সবুজ বাতাস—
‘কুলোয়
ঝাড়ব
ঢেঁকিতে কুটব
অগ্রহায়ণের মাঠের
হলুদ রোদ
রাঙিয়ে দিয়ে যাবে
উঠোন
এইটুকু স্বপ্ন বুকে
বেঁধে
শুয়ে থাকে চাষীর
বউ...’ ( ওগো চাষীর বউ শুনতে পাচ্ছ)
আর একটি মজার বয়ান আছে তার একটি রচনায়—
‘বউ
বলে—বাজারে যেতে হবে
আমি শুধোই—তোমার কী চাই
বউ বলে—অসমিয়া সবজি, অসমিয়া মাছ
মা বলে—তুই কি বাজারে যাচ্ছিস
আমি বলি—হ্যাঁ
মা বলে—আমার জন্য বাঙালি ওষুধ নিয়ে এসো
আমি বলি—আচ্ছা...’
..................................................
এমন আরও আছে । এবার বাজার থেকে খালি
হাতে ফেরার পর কবির বয়ান—
‘আমি
বলি—অসমিয়া, বাঙালি জিনিস ক্রয়ের জন্য
দোকানি অসমিয়া আর
বাঙালি টাকা চায় ।
যা আমার কাছে নাই...’ (অন্য বোধ)
কবির সঙ্গে টেলিফোনিক আলাপ-পরিচয় ছাড়া
আর কোন সংবাদ গড়ে ওঠেনি । আমি জানি না কবির আশপাশ কেমন, জানি না তাঁর পায়ের তলার মাটি কেমন, জানি না তাঁর লেখায় তাঁর সততাকে (Presence)কে কীভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে । কবিতায় কবির বিদ্যমানতা, ব্যক্তিগতভাবে আমার কাছে খুব জরুরী বিষয়
। এখানে তা পেলেও চিনতে পারবো না । তাই
শুধু তাঁর রচনাগুলোই একমাত্র উপভোগ্য এবং আমার ভালোলাগা বা না-লাগার একমাত্র উপাদান
। তাই আমার বক্তব্যগুলো একপেশে যে হবে না, এমন
বলা যায় না । তাঁর রচনায় কৃষক, কৃষি, মাঠ,
চাষি বউ, এসবের দেখা পাচ্ছি বেশ ঘন ঘন । বইয়ের ব্লার্ব থেকে জানা যায়
কবি অর্থনীতিতে স্নাতক, তাই
এসব তাঁর ভাবনার ফসলও হতে পারে, আবার
চাক্ষুষ দেখারও ফলাফল হতে পারে, হতে পারে নিজে জড়িত থাকারও ঘন উপলব্ধি ।
গোটা বাংলাসাহিত্যে বা অসমিয়া সাহিত্যে
এমন কথন যে আর নেই এমন নয়, তাই
এমন উপস্থাপনা খুব একটা জার্ক দেয় না আমাকে,
বা তেমন আন্দোলিত করে না । তবু গুরুত্ব
রয়েছে এজন্যই যে, কবির কাব্যচেতনার ধারাবাহিকতায়
এরা ছাপ রেখে যাচ্ছে, বা গিয়েছে ।যদি
প্রতিবাদ হিসেবে দেখতে চাই, তবে
আমার মনে হয় এই সমাজে, এই
দেশে, এই সময়ে, এইসব বাকশিল্প, বাকপ্রতিমা বা বাকপ্রবাহ তাদের সেই চমৎকারিত্ব হারিয়ে এখন
নিভন্ত মশালের মতোই, বা রাজনৈতিক দলীয়
অফিসের এক কোণায় পড়ে থাকা লাঠিহীন পতাকার তেকোনা কাপড়ের টুকরোর মতোই !
কবির একটি বড় কবিতা আছে ‘নগরের লক্ষ্মী’ নামে ।একটি আট নয় বছরের বালিকাকে নিয়ে লেখা, যে অন্যের বাড়িতে কাজ করে ।
“ওর
বয়স আট কি নয়,
ওইটুকুই পরিচয় । দুই
হাত, দুই পা,
দুই চোখ সঙ্গে নিয়ে ও
আসছে বাড়ি ছেড়ে ।
ছেঁড়া ফ্রকটা পরে
আপনার বাড়িতে করবে গোলামি ।
কোনো কিছুতেই করবে না
ওজর-আপত্তি ।
ওর নিজের কোনো নাম
নেই ।
যে-নামে ডাকবেন সেটাই
নিজের করে নেবে,
এক ডাকে কাছে এসে
হাজির হবে, আপনার
বিদেশি কুকুরটার
চেয়েও তাড়াতাড়ি পোষ মানবে,
শেষ প্রহরে মোরগের
ডাক শুনেই বিছানা ছাড়বে
আপনারা শুয়ে পড়ার পর
মধ্যরাতে বিছানায় যাবে,
আপনার কিছুতেই
অসুবিধে হবে না,
কুকুর, বিড়ালের চিৎকার বোঝে ও, কাদা-জল চেনে
যেখানে রাখবেন,
সেখানেই থাকবে ।...
...........
ও চৌকিদারি করতে জানে,
সইতে পারে বদনাম
ঠাট্টা-মশকরা,
গালিগালাজ ওর কাছে গান
আপনি মারবেন, দুষবেন... কোনো কথা নেই
ওর মুখে ফুটবে না
শব্দ
এই যে দেখছেন,
মাথা ঝুঁকে আছে বসে, ব্যস এভাবেই থাকবে,
যাবার দিন পর্যন্ত
মুখ তুলে কথা বলবে না ।
মাপে অমিল কাপড়ে দেহ
ঢাকবে, মেঝেতে ঘুমুবে,
তবু আপনার ঘরে সুখেই
কাটাবে দিন,...
.............
ওকে নিয়ে একটুখানিও
ভয় পাবেন না,
নারী-স্বাধীনতার
দাবিদাররা ওকে চেনে না,
শিশুশ্রমিক
নিষেধাজ্ঞা আইন বলবৎকারী বাবুরা
আপনার চায়ের টেবিলে
বসে বলবেন—
‘বেশ
ভালো ঝি পেয়েছেন...’
কর্মসংস্কৃতির পক্ষে
ভাষণে অভ্যস্ত নিষ্কর্মারাও
ওর গুণকীর্তনে হবে
ব্যস্ত—‘বাঃ ! এই কচি মেয়েটি
বেকারদের মুখে মেখেছে
কালি’
আপনি নিশ্চিন্ত
থাকুন...
...................
ও কাজের মেয়ে,
নগরের লক্ষ্মী,
ওর পেশা গোলামি ।”
যতটুকু অংশ তুলে দিলাম, তাতে অনুমান করা যায় বাদ দেয়া অংশগুলো
কেমন হবে । সে নগরের লক্ষ্মী । তবে নগরের কবিরা এসব নিয়ে আর মাথা ঘামান না । আগে
ঘামাতেন, যখন শিশুশ্রম নিষিদ্ধ
করে আইন হয়েছিল । কবিতায়ও হুড়মুড় করে বয়ে গিয়েছিল শিশুশ্রমের প্রতিবাদের ঝড় । কাজ হয়নি
। খোদ বিচারক বা পুলিশের ঘরেই আজও শিশুশ্রমিক দেখতে পাওয়া যায় । প্রতিবাদে কাজ হয়নি,
তাই, এসব নিয়ে প্রতিবাদ এখন হাল-ফ্যাশনের প্রতিবাদের কাছে অচ্ছুত ।
তবে মঞ্চ-পাঠে এই রচনা তীব্র আলোড়ন তুলবে, এতে
কোন সন্দেহ নেই ।
এই লেখাটিতে ‘গোলামি’ শব্দটির
ব্যবহার আমার কাছে অধিকন্তু মনে হয়েছে । কবিতায় ‘অধিকন্তু’র
কোন প্রশ্রয় নেই, আশ্রয় নেই । হয়তো আরও
কিছু এমন ব্যাপার রয়েছে যা কবিতার স্বার্থে বাদ দিলেও হতো ।এরকম, আবেগতাড়িত অতিশয়তা একটা নির্দিষ্ট
পাঠকশ্রেণিকেই উদ্দিষ্ট রাখে, বা
প্রকৃত কবিতা-পাঠককে কিছুটা খাটো করে । নলবাড়ির সময়চেতনা, ত্রিপুরার সময়চেতনা আর কোলকাতার সময়চেতনা কখনোই এক হতে পারে না,
কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যমের কল্যাণে এখন
সন একাকার হয়ে যাচ্ছে, বা
হতে চলেছে । আজকের দিনের কবিকে হয়তো এই কথাটা মনে রাখতেই হবে, অন্যথায় হতাশা গ্রাস করতে পারে, যদি না আত্মবিশ্বাসে ভরপুর থাকেন কবি ।
কবির অপাপবিদ্ধ সরলতা আর ঠিক তেমনি অতি
সহজ ছিমছাম ভাষাবিন্যাস বার বার মুগ্ধ করে যা—
‘মানুষ
ইচ্ছে করলে অসাধ্য সাধন করতে পারে
বাবা বলতেন
ছোটবেলায় বার-উঠোনে
ভোরে শেফালি তুলে
তুলে ভাবতাম
মানুষ কি শেফালি হতে
পারে ?’... (বাবা বলতেন)
কিংবা
‘...এখন
সাঁঝবেলা
ঝুলিতে বেঁধে এনেছি
রোদ,
রান্নাঘরের উনুনে
আগুন ধরিয়ে
লিখব জীবনের কবিতা
কুয়াশার গান ।’ (কুয়াশার
গান)
প্রতিবাদ এঁর কবিতার সর্বত্র ছড়িয়ে আছে
চোর-কাঁটার মত । কখনো ব্যঙ্গে, তির্যক
বাক্যে, কখনো স্বপ্নমেদুর
প্লুতস্বরে । এক যুদ্ধহীন পৃথিবীর প্রথম দর্শক একজন
কবিই !
‘...যে-কোনো
মাঠে নির্ভয়ে দাঁড়িয়ে
তুমিই দেখতে চাও
যুদ্ধহীন পৃথিবী ।
তুমি,
তুমি আমার প্রিয় কবি
।’ (কবি)
‘তুমি
খুন করেছ খুব সাবধান,
তোমায় প্রণাম ।
তুমি খুন করেছ একজন
কবিকে,
তোমায় আরও একবার
প্রণাম ।
.......................................
তুমি খুন করেছ একজন
কবিকে,
কবি পড়ে আছে ফুলের
বাগানে ।
রাশি রাশি ফুলের
সুগন্ধিভরা আবহাওয়ায়
শেষবারের জন্য শোনা
যাচ্ছে
কবির কণ্ঠস্বর—
‘ও
আমাকে খুন করেনি, আজ মৃত্যু হয়ে উঠেছে
শিল্প’ । (যেদিন মৃত্যু হয়ে উঠেছিল শিল্প)
আরও পড়া যাক—
‘...আমি
ছিন্নমূল হতে পারব না মাটি থেকে
মাটি আমার মা,
আমি বিসর্জন দিতে পারব না
প্রিয় নদী আর আপন
গ্রামের মায়া,
আমি মুক্ত হতে চাই না
বৃষ্টি আর শিশিরের
আলিঙ্গন থেকে,
করো, আমায় বদনাম করো
................................................
আমায় বদনাম করো
যেহেতু আমার একটি নাম
আছে,
যেহেতু তোমাদের আছে
ভয়, সংশয়
যেহেতু শহরের
দেয়ালগুলোতে
এখনও লেখা হয়নি প্রেম
আর রুটির দাবি,
আমায় বদনাম করো
আমি প্রেমে পড়েছি
এক ভিয়েতনামি যুবতীর
।’ (আমায় বদনাম করো)
‘এক ভিয়েতনামি যুবতীর’ বাক্যটি এখানে কবিতার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে
লহমায় । কবিতার বিধিবদ্ধ বয়ানে হঠাৎই তীক্ষ্ণ তিরের ফলার মত এসে বিঁধে গেছে এই পঙক্তি
। সঙ্গে নিয়ে এসেছে গোটা ভিয়েতনামের সকল ইতিহাস !এমন হয়তো আসে আমাদের স্মৃতি থেকে,
আমাদের অবধারণা থেকে, যা আমরা ছুঁড়ে দিই আগামীর দিকে । হয়তো
এটাই ভাঙন, এটাই গড়ন, আবার আমাদের গতানুগতিক নালিশ-আশ্রয়ী
ক্ষোভ-আশ্রয়ী বয়ানগুলোর তাৎক্ষণিক এবং স্বয়ংক্রিয় বিনির্মাণ, যা আমরা পরবর্তীতে আর ধরে রাখতে হয়তো
পারি না, বা ভুলে যাই । এটা
কবিতার খাতায়, কবির অজান্তে তারই
কবিসত্তার এক নিভৃত
অবতরণ বলে মনে হয় আমার । যারা সচেতনভাবে কেবল মেধাচর্চিত কবিতা
লেখেন, তাদের কাছে আমার এই
বক্তব্যের কোন অর্থ হয়তো থাকবে না ।
‘...সবচেয়ে
ছোট্ট পথটায় ছিল
অসংখ্য তালাশি চৌকি,
কোনো কারণে এই পথ ধরে
যেন
চলে যেতে পারে না
স্বাধীনতা ।’ (স্বাধীনতা)
কবি বিপুলকুমার দত্ত হাতে রয়েছে সরল
বাক্যের ধারালো অস্ত্র, ব্লেডের
মত । রক্ত বেরোবার আগে বোঝা যায় না কখন কেটে গেল । তবে কোথাও কোথাও বব ডিলানের
ভঙ্গিমার ছায়াপাত যে ঘটেনি, এমন
নয় । তবে এটা এখনের সময়ে কোন রাখ-ঢাক না রেখে অনেকেই চালিয়ে যাচ্ছেন, তাই হয়তো তেমন কোন দোষণীয় বিষয় নয় । কবিকে ধন্যবাদ, এমন একটি কবিতার বই আমাকে উপহার হিসেবে পাঠানোর জন্য । তাঁর
পরবর্তী গ্রন্থের প্রতীক্ষা আমি তো বসে থাকবোই ।
****সেলিম মুস্তাফা, ০৯.১১.২০১৮
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন