“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

কবিতার জন্ম

।। সুমন পাটারী ।।

(C)Image:ছবি












গোটা বই মুখস্থ করতে পারিনি বলে
ক্লাসের মাঝে বসতাম,
স্যার কখনোই আগ্রহ অথবা সম্মান জানান নি--
শুনতে চাননি আমি কি বলতে চাইছি,
আমি মুখস্থ করতে পারিনা, আমাকে সাঁতারের কৌশল বলে দিন
একথা বলার আগেই প্রথম বেঞ্চের ছাত্ররা
দমকলের মতো মুখস্থ জল বমি করে
স্যারের মন জয় করে নিতো,
আমি আর কিছুই বলতে পারিনি,
সেদিন থেকে বলার ক্ষমতা হারিয়ে গেছে।
বাবার ছিলো সোনার ব্যবসা আমি ছিলাম বেসরকারি কলেজে
আমার প্রেমিকা ছিলো হাজার হৃদয়লালিত,
ওর কোনো ভয় ছিলোনা--
আমার যতো দোষ, আমার বলার সুযোগ ছিলোনা,
হয়তো সেও কেঁদে দিতো তার দেওয়া সুখ দেখে;
আমি বেকারের মিছিলে ছিলাম
পদস্থ কাকু লড়াই করছিলো নিজের মতো করে
আমি শুধু শ্লোগানে গলা মিলানো ছাড়া
আর কিছুই বলতে পারিনি, আমার বলার সুযোগ হয় নি।
আমি বেকার, বাবা প্রধানমন্ত্রী, ঋণের জন্য যেতে হতো
হাড় মাংস অস্থি বন্ধক রেখে, আমি টিউটর,
বদলা দিতাম, মাসের শেষে চাতকের মতো হাত পেতে থাকতাম,
আমি সংসারের ঘানি কাঁধে নিয়েছি, বাজারের ব্যাগ ভরে না
বাবার কালে যে সুখ ছিলো তার অভিযোগে কান বন্ধ,
আমি কাউকে খুশি রাখতে পারিনি,
আমি কখনো খুলে আমার কথা বলতে পারিনি।
তাই আমি কবিতার আশ্রয় নিয়েছি,
অক্সিজেন পাইপের মতো সারাদিন মুখে লাগিয়ে ঘুরি উশৃঙ্খল ভাতের পেছনে।

কোন মন্তব্য নেই: