“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৮

মাটির অসুখ

।। অভীক কুমার দে ।।

(C)Image:ছবি


বেপরোয়া বর্ষা জানে না কতটুকু কাঁদলে মাটির মন গলে তরল হতে পারে। জানে না, আকাশ আছে বলেই এত ঘোরাঘুরি; উড়ে উড়ে রঙ মাখতে পারলেই জীবন কোনও শিল্প হয়ে ওঠে না। কাঁদলেই সব অভিযোগ অভিমান মেনে আপন করে নাও নিতে পারে মাটি। ধরন ধারণের ক্ষমতা না বুঝে কেবল কেঁদে গেলেই ছোট শিশুর মতো কোলে ওঠা যায় না।


এখানে মাটিকে কত কি সইতে হয় ! শুধু মেঘের আনাগোনায় সাজানো উপরতলাই শেষ কথা নয়। সব ঋতুদের অপবাদ প্রতিবাদের যাবতীয় অত্যাচার সয়ে একেকটি দিন বছরের ঘরে গুছিয়ে রাখতে হয়। বছরের পর বছর, এভাবেই পাঁচ দশ করে খাঁটি হবার স্বপ্ন, তবু মাটির অসুখ ছাড়ে না।


মাটি জানে, চতুর্দিকের শূন্যতায় শুধু মায়াবী নীল। রঙ ধরে রঙিন করে রেখেছে শুধু। কোথাও কোনও রসদ নেই বেঁচে থাকার, বাঁচিয়ে রাখার। যা আছে নিজের কাছে, বুকের ভেতর। তাই বুকের তরল দিয়ে একটি আকাশ সাজাতে চেয়েছে তখন, যখন উষ্ণতায় জ্বলে যাচ্ছিল শরীর। অনেক যত্নে ঠাণ্ডা হওয়া চামড়ায় অনুভূতি জেগেছে। ভেতরে এখনও আগুন, উথালপাথাল যন্ত্রণা। বিবেক নাড়া দিলেই জেগে ওঠে পুরোনো স্মৃতি, আর ভুলে যায় সুখ।


প্রতিবারের প্রতিবাদ জমে জলাভূমির বাইরেও জলের গড়াগড়ি এখনও। নালা ডোবা নদী পুকুর কত কি উপকরণ, তবু কেন জানি জায়গা হয় না ! এত কান্না ! এত বিরোধ ! যদিও সব আবদার অনায়াসে মিটে যায় যদি না শ্যাওলাদের বাড়বাড়ন্ত শিল্পাচারে সব পথ পিচ্ছিল না হয়, থেমে না যায় নিয়মের চলাচল।


কোন মন্তব্য নেই: