স্মরণাতীত কাল থেকেই আমাদের দেশের
আদিবাসীদের নিজস্ব সামাজিক ব্যবহার, ধার্মিক আচার, উৎপাদন ও
বণ্টনব্যবস্থা ছিল। সেই ব্যবস্থাতে উৎপাদনশীলতা কম হলেও তা ছিল প্রকৃতির সঙ্গে
সামঞ্জস্যপূর্ণ, এবং মানুষগুলোর প্রয়োজন পর্যাপ্ত
পরিমাণে মিটে যেত। তারা নিজের গৃহপালিত পশুদের অরণ্য-ভূমিতে চরাত, উপত্যকাতে কিছু চাষ আবাদ
করত, বনের কন্দ, ফলমূল মধু আহরণ করত,
মাংসের জন্য জীবজন্তু শিকার করত, বনের কাঠ
পাতা দিয়ে কুঁড়েঘর বানিয়ে থাকত।আবাদকারী, যাকে মুণ্ডা
ভাষায় বলা হত খুঁটখাট্টিদার, নিজের আবাদ করা জমিতে
পুরুষানুক্রমে চাষবাস করত। অবসর সময়ে তারা নাচগান করত, নিজেদের মত করে ধর্মপালন
করত।
এই সরল জীবন যাপনে বাধা দিল ব্রিটিশের
আইন। আইন অনুসারে দেশের সমস্ত জমি সরকারের অধীনে এল। এখন থেকে সকলকেই খাজনা দিতে হবে
সরকারকে। ট্যাক্স আদায় করতে গিয়ে দেখা গেল আদিবাসী এলাকায় ট্যাক্স আদায় হয়না, কারণ আদিবাসীদের কোনো উদ্বৃত্ত
থাকেনা। ছোটনাগপুর তখন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীর অন্তর্ভুক্ত। এই বিশাল এলাকার খাজনা আদায় করতে অ-আদিবাসী জমিদার জোতদার, ঠিকাদারদের জমি ইজারা দিয়ে দেওয়া হল। শুধু জমির
খাজনা নয়, যে কোনো অজুহাতে, জমিদারের নিজস্ব প্রয়োজনে, আমোদ উৎসবে, কিংবা জমিদার সরকারের
খাজনা দিতে দেরি করলে যে জরিমানা হত, তাও আদিবাসীদের উপর থেকে উসুল
করা হত। নগদ টাকা আদিবাসীদের ছিলনা, তাই ফসল উঠলে জমিদার তার পাওনা হিসেবে ফসল তুলে নিয়ে যেত।
তখন জমিদারই মহাজন সেজে টাকা ধার দিত দ্বিগুণ সুদে, যা
আর কখনো শোধ করা সম্ভব হত
না। ওদের কেউ মামলা করলে উকিলের ধূর্ততায় জমি
জমিদারের হাতেই যেত, মামলার খরচ যোগাতে বাদীকে সর্বস্বান্ত হয়ে ‘বেঠবেগারি’তে অর্থাৎ বেগার খাটা শ্রমিক হিসেবে নিজের জমিতেই শ্রম দিতে হত। প্রকৃতির
বুকে বিচরণকারী স্বাধীন মানুষগুলো বংশানুক্রমিক
দাসে পরিণত হত। এদিকে খ্রিস্টান মিশনারিরা আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে স্কুল খুলে ধর্ম
প্রচারের কাজ ও চালাচ্ছিল। যারা খৃষ্টধর্মে দীক্ষিত হত, তাদের অনেকেই নিজেদের
প্রাচীন রীতিনীতিকে অবজ্ঞা করতে আরম্ভ করছিল। মিশন তাদের শুধু ধর্ম শিখাত আর সামান্য কিছু
খাবার যোগাত, কিন্তু অত্যাচারের কোনো প্রতিকার করতে সাহায্য করত না।
সেই অবস্থায় জমি, গরুবাছুর
বিক্রি করে তারা সর্বস্বান্ত হয়ে পিতৃপুরুষের
গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যেত। নতুন কোনো স্থানে জঙ্গল কেটে বসত করত। আরো ছিল শ্রমিকের দালাল, যারা নানা ভাবে প্রলোভন
দেখিয়ে আদিবাসীদের চা-বাগানের কুলি হিসেবে অনেককে নিয়ে যেত। সেখানে যারা যেত,
তারা পরিচয় হারিয়ে আর কখনো ফিরে আসতে পারত না।
ঠিকাদার ও জমিদারের কর্মচারীরা জমি দখল করে
নিয়মিত ট্যাক্স সরকারের কোষাগারে
জমা দেওয়ায় সরকারের নেকনজরে ছিল, তাদের অত্যাচারের খবর সরকারের কানে পৌছলেও কোনো
প্রতিকার হত না। পুলিশ প্রশাসন সবই
ছিল অত্যাচারীদের দলে। আদিবাসীরা এই বহিরাগতদের বলত ‘দিকু’।
এইরকম পরিস্থিতিতে যখন ছোটনাগপুর অঞ্চলে
বিদ্রোহের আগুন মাঝেমাঝেই ধিকি ধিকি জ্বলে উঠছে, ১৮৭৫সালের ১৫ নভেম্বর বিরসা মুণ্ডার জন্ম হয়।
আগের বিদ্রোহগুলোতে লড়াই করা, পরাজিত, পোড়খাওয়া
বয়স্ক অনেক যোদ্ধা তখন একজন নেতার অপেক্ষা করছিল যে তাদের রাস্তা দেখাবে, তাদের দুঃখের অবসান ঘটাবে। সেই নেতাই হবে তাদের ভগবান।
বৃহস্পতিবারে জন্ম বলে নাম হল বিরসা।
বাবার নাম সুগানা মুণ্ডা, মা করমি হাতু।ওদের পৈতৃক বাস ছিল উলিহাতু গ্রামে। সুগনার পূর্বপুরুষ দুই
ভাই চুটু আর নাগু যে ‘খুটখাট্টি’র
পত্তন করেছিল, সেই আবাদই তাদের নামানুসারে ছোটনাগপুর নামে
খ্যাত হয়। ‘দিকু’দের চক্রান্তে জমি
হারিয়ে কাজের খোঁজে গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে পড়ল সুগানা আর করমি, সঙ্গে
তাদের দুই শিশু ও করমির ভাই। কোথাও সুবিধা করতে না পেরে শেষপর্যন্ত বাম্বা গ্রামে
ডেরা বাঁধে তারা, কারণ করমি সন্তান সম্ভবা। এবার জন্ম হল
বিরসার। কিছুদিন পর তারা চালকদ গ্রামে উঠে যায়, বিরসা
সেখানেই বড় হতে থাকে আর পাঁচটা মুণ্ডা শিশুর মত। চালকদে এসে নিরন্ন পরিবারটি
খ্রিস্টান হয়ে যায়, খ্রিস্টান হলে যদি মিশন থেকে কিছু সাহায্য মেলে, এই
আশায়। বিরসা জঙ্গলে ছাগল ভেড়া চরায়, বাঁশীতে সুর তোলে, লাউয়ের খোলায় একগাছা তার বেঁধে
তৈরি বাদ্যযন্ত্র তুইলা বাজায় আর আখাড়ায় কুস্তি লড়ে।
দারিদ্র্যের জন্য বিরসা ও তার দাদাকে
মামাবাড়ি আয়ুভুতুতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।গরিব মুণ্ডারা চাল জোগাড় করতে পারত না, জঙ্গলে
আপনা থেকে গজানো একধরণের ঘাসের বিচি সেদ্ধ করে নুন জুটলে নুন দিয়ে, নইলে এমনিই খেত। বিরসার দাদা কোমতা আয়ুভুতুতে এক সম্পন্ন মুণ্ডা চাষির বাড়িতে গরু ছাগল চরাতে লাগে। বিরসা প্রথমটা স্কুলে
ভর্তি হয়েছিল, কিন্তু অক্ষরজ্ঞান হবার পর চলে
যায় মাসিমেসোর সঙ্গে, যেখানে খাওয়াপরার অভাব নেই। সেখান থেকে বছরদুই পর আবার আয়ুভুতুতে ফিরে
এসে এক মুণ্ডা খ্রিস্টান প্রচারকের সাহায্যে স্কুলে ভর্তি হয়। মেধাবী ছাত্র হওয়াতে
সে প্রাথমিক স্কুল সহজেই উতরে যায়, তারপর সে চাইবাসা যায় মিশনের উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি
হতে। সেখানে সে চারবছর পড়াশুনো করেছিল, এবং এই শিক্ষা তার
জীবন গঠনে অনেক সাহায্য করেছিল।
বিরসার জন্মের দুবছর পরই, ১৮৭৮ সালে প্রথম
মুন্ডাবিদ্রোহ হয়েছিল। খ্রিস্টান মুণ্ডা সর্দাররা সরকারকে লিখিত আরজি জানিয়েছিল,
ছোটনাগপুর তাদের দেশ, সে দেশে তাদের মালিকানা
কায়েম করতে দেওয়া হোক।১৮৭৯ আবার একই আরজি জানিয়ে ছিল, কোনো ফল হয়নি। ১৮৮১সালে একদল সর্দার মিশন
ভেঙ্গে বেরিয়েছিল তারা বলেছিল, ছোটনাগপুরের রাজাদের আদিম ঠাই
দোয়েসা গিয়ে ভাগ বসাবে। কিন্তু তাদের আস্ফালনে কাজ হয়নি, তাদের
জেলে ঢোকানো হয়। ছাড়া পেয়ে তারা আবার চার্চের ফাদার ডাঃ নট্রেটের কাছে একই আর্জি করে, এবারে ভয় দেখায় যে দাবি না
মানলে তারা ক্যাথলিক মিশনের ফাদার লিয়েভেন্সের
কাছে যাবে। আসলে মুণ্ডারা তখন মিশনে আস্থা রাখতে পারছিল না। তারা দেখছিল, ব্রিটিশ সরকার এবং
চার্চ---একে অপরের সুবিধা দেখছে, তাই চার্চ ও বিশ্বাসযোগ্য
নয়। ক্যাথলিক মিশন থেকে বেরোতেই তারা আবার জেলে আটক হল।৪০ জন বিচারাধীন বন্দীর
মধ্যে মারা যায় ৮/৯ জন । এই কারণে ১৮৮৮ সাল নাগাদ সর্দাররা মিশনের সঙ্গে
সম্পর্কচ্ছেদ করল। এই পশ্চাৎপট বিরসার জীবনকে প্রভাবিত করেছিল। স্কুলের ছুটিতে
বাড়ি গেলে সর্দারদের থেকে এইসব কথা সে শুনে আসত, স্কুলের মুণ্ডা
ছেলেদের সাথে আলোচনা করত। একবার সে সরকার ও খ্রিস্টধর্মের বিষয়ে বিরূপ কথা বলাতে
ফাদার নট্রট তাকে ক্ষমা চাইতে বলেন। অনমনীয় বিরসা ক্ষমা না চেয়ে স্কুলই ছেড়ে দিল।
ছোটবেলা থেকেই বিরসার একটা আকর্ষণীয় শক্তি
ছিল, সুন্দর
চেহারা ছাড়াও চারপাশ বুঝে নেবার ক্ষমতা। এই ক্ষমতা বলে সে ফলমূল কন্দ যোগাড় করতে পারত
অন্যদের তুলনায় বেশি।ঘটনাপরম্পরা থেকে পরিণাম বুঝতে পারত। লোককে বোঝাবার ক্ষমতাও
বেশি ছিল। স্কুলের শিক্ষাতে তাকে কুসংস্কার ত্যাগ করার, সু-অভ্যাস গড়ে তোলার,
স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়ম মানার বিষয়গুলো মর্মে গেঁথে গিয়েছিল। লোকে
ভাবতে শুরু করেছিল সে অলৌকিক শক্তির অধিকারী। এইসব কারণে পোড়খাওয়া যোদ্ধা
ধানীসর্দার তাকে মুণ্ডাদের নেতা হবার আহবান জানাচ্ছিল আকারে ইঙ্গিতে। কিন্তু
সদ্যতরুণ বিরসা তার মনকে বুঝে নিতে চাইছিল। সে বন্দগাঁও গয়ে সেখানকার বৈষ্ণব আনন্দ
পাণ্ডের কাছে পৈতে নেয়, তুলসীপুজো শেখে, চন্দন মাখে, রামায়ণ-মহাভারতের
কথা শোনে। কিন্তু মনে শান্তি পায় না, গ্রামে ফিরে আসে। তার
বাঁশির সুরে আকৃষ্ট হয়ে দুজন মুণ্ডা তরুণী তার সঙ্গিনী হতে চায়, সে তাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়।
এর মধ্যে সরকারের ফরেস্ট আইন চালু হয়। এখন
থেকে মুণ্ডাদের জঙ্গলে যাওয়া বন্ধ, গরুছাগল চরানো, কাঠ পাতা সংগ্রহ, মধু আহরণ, শিকার, সব অবৈধ হয়ে গেল । জঙ্গলের ভেতর যত গ্রাম ছিল, সব উচ্ছেদ হয়ে গেল।
বিরসা প্রচণ্ড রেগে গেল। সবাইকে নিয়ে আরজি
দিতে গেল ফরেস্ট অফিসে। অফিসের কর্মচারীরা আরজি দেখে খানিকটা বিদ্রূপ করে বিরসাদের
চাপাচাপিতে শেষ পর্যন্ত নিল বটে, কিন্তু বিরসা বুঝল, তাদের কোনো
অনুরোধ মানা হবেনা। বিরসা বিচলিত হয়ে আনন্দ পাঁড়ের নিকট গেল। আনন্দ পাঁড়ে বলল,
যেহেতু সে সরকারের বিরুদ্ধে আরজি করেছে, তাকে
আশ্রমে ঠাই দেওয়া যাবে না।বিরসা বুঝল, সব ধর্মই এক, অত্যাচারীর দোসর। রেগে গিয়ে সে বৈষ্ণব ধর্ম ও ছেড়ে দিল।
জঙ্গলে বসে ভাবতে ভাবতে
তার মনে হল, দুঃখিনী অরণ্যজননী তাকে প্রতিবাদ করতে ডাকছে। সে
ধরতি আবা, পৃথিবীর বাবা। তাকে তার মানুষের দুঃখ ঘুচাতে যেতেই হবে। সে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে গ্রামে ফিরে এল। মুণ্ডারা তাকে নেতৃপদে বরন করে নিল। তাকে
ডাকতে থাকল বিরসা ভগবান বলে। অনেকেই তার কাছে অসুখবিসুখ থেকে বাঁচাতে আরজি নিয়ে
আসে, সে তার স্কুলে পড়া স্বাস্থ্যরক্ষার নিয়ম মানতে উপদেশ দেয়, সেসব নিয়ম মেনে মুণ্ডারা ফলও পায় । সরল মুণ্ডারা এইভাবে কিছু প্রত্যক্ষ ফল
চাক্ষুষ দেখে অবিসংবাদিতভাবে তাকে ভগবান বলে স্বীকার করল, তার নেতৃত্বে তারা প্রাণ দিতেও
রাজি ছিল। দলে দলে মুণ্ডা খ্রিস্টান মিশন ছেড়ে চলে এল। পুরোনো বয়স্ক সর্দাররাও
বিরসার দলে যোগ দিল। বিরসার অনুগামীদের বিরসাইত বলা হত।
বিরসা তাদের
জমিদারের ট্যাক্স দিতে, বেগার দিতে মানা করল, এবং উৎসাহিত করল অন্য
ধর্ম ছেড়ে নিজেদের প্রাচীন ধর্ম পালন করতে । প্রকাশ্যে ঘোষণা করল উল্গুলান-এর, বিদ্রোহের। তাদের স্লোগান ছিল, ‘আবুজা রাজ সেতার জানা, মহারানি রাজ তুন্ডু জানা’ এখন
আমাদের রাজ শুরু,মহারানির রাজত্ব শেষ।’
ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ করতে সরকার ১৮৯৫সালে
বিরসাকে দুবছরের জন্য কারাগারে পুরল। কিন্তু মেয়াদের শেষে যখন বিরসা জেল থেকে
বেরোল, তখন সে
আরো পরিণত, আরো তেজস্বী। এখন তার নেতৃত্বে বিরসাইতরা দলে দলে বিভক্ত হয়ে কয়েকটি থানা ও চার্চ জ্বালিয়ে দিল, দুচার জন ঠিকাদার,
মহাজন, ও তাদের লোক, আর
যে সব পুলিশ কন্সটেব্ল তাদের অ্যারেস্ট করতে জঙ্গলে ঢুকেছিল, তাদের দুচার জনকে মেরে ফেলল। তারা
জঙ্গলের মধ্যে মিশে থাকত, সুযোগ মত আক্রমণ করত। সমস্ত ছোটনাগপুর এলাকা তটস্থ হয়ে গেল, ব্রিটিশ শাসকেরা ভাবতেও পারেনি শান্ত মুণ্ডাদের ভেতরে এত
তেজ আছে। সরকার সৈন্যবাহিনীকে ডাকল মোকাবিলা করবার জন্য, বন্দুক
রাইফেলের সঙ্গে তিরধনুকের অসম লড়াইয়ে সাতশ’র বেশি মুণ্ডা মারা গেল, তারা পিছু
হটতে জানত না। অনেক ক্ষয়ক্ষতির পর ৯ জানুয়ারি, ১৯০০সালে বিরসা যখন
একদিন কিছু সঙ্গীর সঙ্গে চক্রধরপুরের কাছে জঙ্গলে বিশ্রাম নিচ্ছিল, এক গ্রামবাসী তাকে
ধরিয়ে দেয়। বিরসা ব্রিটিশের কাছে এত ভীতিজনক হয়ে উঠেছিল যে তার ও তার কয়েক সঙ্গীর
মাথার দাম ধরা হয়েছিল।
বিরসা ও তার
৪৬০জন সঙ্গীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, ৩৯
জনের দ্বীপান্তর, ও ২৪ জনের ১৪ বছরের জেল হয়। বিচারাধীন থাকা
অবস্থায়ই বিরসা মারা যায়, রটানো হয় যে তার কলেরা হয়েছিল।
সন্দেহ করা হয় যে তাকে আর্সেনিক প্রয়োগে মেরে ফেলা হচ্ছিল। তখন তার বয়স মাত্র ২৫
বছর।
বিরসা্র আত্মোৎসর্গ
একেবারে বৃথা যায়নি। এই বিদ্রোহের পর আদিবাসীরা আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছিল, দেশে তাদের উপস্থিতি
সগৌরবে জানান দিয়েছিল। সরকার আইন
পালটে আদিবাসীদের জমি বহিরাগতদের হস্তান্তর বন্ধ করে দিয়েছিল। বিরসা আদিবাসীদের
গানে, উপকথায় মিশে গিয়েছিলেন। আধুনিক ভারতের সংসদের সেন্ট্রাল হলে একজন মাত্র
আদিবাসী নেতার প্রতিকৃতি আছে, তিনি হলেন বিরসা মুণ্ডা। তাঁর
নামে আদিবাসী অঞ্চলগুলোতে অনেক প্রতিষ্ঠান গঠন হয়েছে। কিন্তু বিদ্রোহের মূল যে
কারণ, ধনীর দ্বারা গরীবের শোষণ, সেটা
যেদিন শেষ হবে, সেদিন বিরসার সত্যিকারের সম্মাননা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন