“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৮

আবহবিদেরা বলেছিল

।। শিবানী দে।।

(C)Image:ছবি











বহবিদেরা বলেছিলঝড় হবেবৃষ্টি হবে,
এখন না হোকবিকেলেঅথবা কালকেও হতে পারে
চারিদিক ঢেকেছে ধুলোয়,
মাঠঘাট বাড়িঘর পথ ঢেকে গেছে আবর্জনায়
সব উড়ে যাবেধুয়ে যাবেপরিচ্ছন্ন হবে
যখন উঠবে ঝড়বৃষ্টি নামবে

আবহবিদেরা বলেছিলএই তো নিয়ম
যখন ধুলোয় ধোঁয়ায়
জীবন-বাতাস হয় বিষবাষ্পঅনিঃশ্বসনীয়,
শুকনো রক্তে বাদামি হতে থাকে চিরন্তন মাটি,
মরা ঘাসে হাড়গোড় গড়াগড়ি যায় ইতস্তত:
ঘোলা আকাশের নিচে বেয়নেটে বাঁধা কটা পতাকার
দম্ভের বাড়ানো হাত মাটির উপরে ছায়া ফেলে,
তখন দক্ষিণ পশ্চিম কোণে দেখা দেয় পিঙ্গল ভ্রূকুটি
অন্ধকার ছেয়ে আসেআলো ঢেকে যায়,  
ধেয়ে আসে উথাল পাথালএক লহমায়
দুমড়ে মুচড়ে সব কিছু নির্ভেদসমান করে যায়
ভাঙ্গে গাছবনস্পতিভাঙ্গে ঘরউপাসনালয়,
অট্টালিকা ধসে যায়চালাঘর ভাসে
হঠাৎ হড়কার মুখে এসে
ঝড় থেমে গেলে পর সুস্নিগ্ধ উজ্জ্বল দিন এলে
ধ্বংসের আড়াল থেকে নতুন অঙ্কুর মাথা তোলে  
সে এক সময় ছিলযখন আবহবিদেরা বলেছিল

আবহবিদের কথা পুরাতনজীর্ণ হয়ে গেছে
বহু ব্যবহারে
এই বিবর্তন-নিয়মিত অতি-ঘূর্ণমান পৃথিবীতে
ঝড়হীনজলহীনআশাহীন ধূলিধূসরিত কাল  
বাদামি মাটিতে বিষবাতাসের ঘূর্ণিচাকে নাচে অশরীরী
কঙ্কালেরা বরণীয় নববর্ষে স্বাগত জানায়



কোন মন্তব্য নেই: