“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৮

সহচর

।। অভীক কুমার দে ।।

       
(C)Image:ছবি
           
ধোঁয়া নয়, শুধু ধোঁয়াশার ধোঁয়া। দূর থেকে দূরে ঘুড়িওড়া পথ, শেষ নেই। এখানে দৃশ্যের কোন চোখ নয়। অনুভবের বিবেক একা হাঁটে আজন্মকাল। অনামিকার ধোঁয়াটে আকাশ সাজিয়ে তারারা আলোয় জ্বলে, দিন রাত ভাগ করে ছায়া।
শরীর- তুমি ভুলে যেতে পারো, আমি ভুলিনি। এক বিন্দু তরল খুঁজেই একসাথে সেদিন বেঁধেছি ঘর। সব আঘাত সয়ে তোমাকেও আমি আমি করে তুলেছি। দুলেছি, ঝুলেছি, হেসেছি, কেঁদেছি আর তোমার জন্যই হয়েছি ভবঘুরে।
সহচর তুমি, আমাকেই চিতার ভাগ দেবে ! 
প্রাণ- অনুচরের মতো আমার সব দায়িত্ব নিয়ে জীবনভর ভবঘুরে তুমি। এ' পাওনা তোমার।
শরীর- তোমাকে একা ছাড়িনি কোনওদিন। আজ একাই চলে গেলে ?
প্রাণ- অদৃষ্টের অদৃশ্য উপকরণ আমি। দৃশ্য তোমায় সঁপেছিল। আমি অনুগামী। তুমি অনুগামীর অনুগামী। আমাদের অনুগমন শুধুই অনুচারীতা।
শরীর- তুমি আমি মিলে মিলনের আলো জ্বেলেছিলাম। তুমি কেবলই খেলেছিলে। এখন জ্বলন্ত আগুনে আলো দেখায় চিতাকাঠ। তুমিশূন্য আমি জ্বলি।
প্রাণ- সব উত্তাপ তোমার নয়, জ্বলনও না। চিতাকাঠ জানে, জ্বলতে জ্বলতে কতটা ভিজে যায় দাহী।
শরীর- কী এমন বেশি দিলে, কী বা কম নিলে ! অচল আমি একা একা ধোঁয়াসিঁড়ি পথে...
তোমাকেই খুঁজি।
প্রাণ- আমারই বা আছে কী ? মিলনের পথ চেয়ে ভাগে ভাগে অদৃশ্য পড়ে থাকা। তোমার কলোনিজুড়ে উড়তে থাকা আর ঘুরতে থাকা।
বরং এসো, আবার সেই শূন্যতায় পাড়ি দেবো। এসো, ধোঁয়াসিঁড়ি পেরিয়ে এলে তুমি আমি এক হবো। এখানে দৃশ্য অদৃশ্যের বিভাজিকা নদী নেই, কোনো ঢেউ নেই, কোনো স্পর্শ নেই, নেই কোনো লালসা।
শূন্যঘর !


কোন মন্তব্য নেই: