“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

সোমবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৭

দুটো অণুগল্প


(C)Image:ছবি


।। শিবানী দে।।
বয়স্ক
⚫⚫⚫
         বাসের কন্ডাক্টার স্টপেজের নাম হেঁকে বলল, ‘কেষ্টপুর---এগিয়ে আসুন।তরুণবাবু উঠে দাঁড়ালেন। গেটের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই সে বেল টিপে সুর করে হাঁকল—‘বয়স্‌কম---’।  'হ্যাঁ'। যদিও কন্ডাক্টাররা এরকম বলেনা, তরুণবাবুর কানে কথাটা এইরকমই ঢুকল। অবশ্য বেশিক্ষণের জন্য নয়। বাস ততক্ষণে স্লো হয়েছে। তরুণবাবু অভ্যাসবশত ওই আস্তে চলতি অবস্থায়ই নামতে যাচ্ছিলেন। কন্ডাক্টার বলল, ‘দাঁড়াও, কাকু’, বলে হাত দিয়ে দরজা আটকে দাঁড়াল। তরুণবাবুর লহমার মোহ ততক্ষণে ভঙ্গ হয়েছে। বাস একেবারে থামলে তিনি নামলেন, কন্ডাক্টারের দেওয়া জ্ঞান শুনতে শুনতে, ‘চলতি বাসে নামছিলে, কিছু হলে আমাদের কেস খাওয়াবে আর কী’, আর বুঝতে বুঝতে ---- কথাটা আসলে বয়স্কছিল।


ব্যারিকেড ওঠেনি
⚫⚫⚫
       কোনো রাজনৈতিক দলের ডাকে শহর বন্ধ। রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড। অফিসবাবুরা অফিস যেতে পারেনি, চেষ্টা করার ঝুঁকিও নেয়নি। সারাদিন বাড়িতে টিভি দেখে ও শুয়ে সময় কাটানোর পর বন্ধ ও রোদের তেজ কমলে পড়ন্ত বিকেলে পড়ে পাওয়া চোদ্দআনা ছুটির সুখে ফুরফুরে মেজাজে সুখেন্দুবাবু সস্ত্রীক পাড়ার রাস্তায় হাওয়া খেতে বেরোলেন। কথা বলতে বলতে এগোচ্ছিলেন, হঠাৎ দমকা হাওয়ায় রাস্তার পাশের উঁচু বট্‌ল পামগাছ থেকে একটা বড়সড় পাতা আড়াআড়িভাবে সামনে রাস্তার উপর পড়ল। রাস্তার একপাশে কাদাজল, অন্যপাশে দেওয়াল, পাতাটি না সরালে এগোনো একটু মুস্কিল। এখানেও ব্যারিকেড পড়ল, দেখলে?’ সুখেন্দুবাবু বলে উঠলেন। ও তো দুজনে ধরে সরিয়ে দিলেই হয়’, বউ বলে উঠলেন। ছাড়ো তো, সরিয়ে নিয়ে কদ্দূর যাব? ও কাল সুইপার এসে ওঠাবে। চল।দুজনে বাড়িই ফিরে গেলেন ।


কোন মন্তব্য নেই: