।। ধ্রুবজ্যোতি মজুমদার।।
কুরুক্ষেত্র
প্রচণ্ড সংঘাতে ব্যস্ত
তোমার সত্য আর আমার সত্য
দুর্ভেদ্য বর্মে ঘনঘন আঘাত
শব্দ দূষণে ত্রস্ত চরাচর।
নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে কিছু মিথ্যা অবশেষে,
হ্যাঁ,
ওরাই তো অজর অমর।।
অবতার
হাজারো মুহূর্তের অন্ত্যেষ্টি শেষে
অস্তিত্বে আসে একটি পঙক্তি,
চিতাগ্নির ধূমে নতুন বীজ
প্রবল ঘূর্ণনেও যেমন স্থির থাকে কেন্দ্র।।
নষ্ট চন্দ্র
আঙুল বেয়ে নামা প্রেম
কী-পেড এর উত্তাপেই বাষ্পীভূত বারবার,
ডিসপ্লে তে কি আর স্পন্দন দেখা যায়?
পড়ে থাকে কিছু জারজ স্ট্যাটাস।
কিছু নিরর্থক শব্দপুঞ্জ,
মাছ বাজারের কোলাহল,
এত এত কথা,
তবু-
সবটাই দুর্বোধ্য;
অর্থহীন।।
পরিচয়
ধরা দেয়না বিভাজন রেখা
নামের আড়ালে মুমূর্ষু বেনামী আমি,
দৈহিক পরিচয়ের বাঁধাছকে
নিজের কাছেই নিজে অচেনা।
তার উপর
সু-কু এর বাড়তি খ্যাতির পরত।
কালচক্র
কালঘুমে অচেতন লক্ষ্মীন্দর
বয়ে চলে বেহিসেবি সময়,
ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে কবেই
দুরন্ত গতি ধরেছে ধ্রুবতারা।
মুচকি হাসে নেতা পদ্মা
হাসির স্ফুলিঙ্গে ক্ষতবিক্ষত শরীর
নির্বিকার বেহুলা স্থিতপ্রজ্ঞ; অচল,
জীবনের প্রমাণ শুধু আঁখিধারা।
ত্রিগুণাতীত দেখছে সব
ভাবান্তরহীন মুখে মিলেনা-
পরিকল্পনার পূর্বাভাস।
একদিন লক্ষ্মীন্দর আবার ধরবে তান
বিদায় উৎসবে,
যেদিন বানপ্রস্থে যাবে-
মহাজাগতিক অহমিকারা।।
চিরন্তন
প্রসারিত হচ্ছে মহাবিশ্ব
নিয়ত বাড়ছে দূরত্ব গ্রহ গ্রহাণুর,
নাম না জানা কত জ্যোতিষ্ক
আজই হয়ত দিয়েছিল শেষ উঁকি।
সে খবরে স্পৃহা নেই কারো
কাগজে পাবেনা ঠাঁই,
লক্ষণীয় কোনো প্রভাব পরবে না তবু
তোর আকাশে থাকবে রোশনাই।
কোনো এক ফাল্গুনী পূর্ণিমা তে যবে
নির্নিমেষ নয়নে হবে ঊর্ধ্বমুখী,
ঝলমলে আকাশে তখন
নতুনের হাট।
রাশিরাশি তারকার মনভুলানো সম্মোহনে
ভেসে যাবে ইচ্ছে ডানার সাথে,
নাকি দু’চোখ ঝরাবে নীরবে মুক্তো বিন্দু
একটি চেনা তারার খোঁজে।
অনুশোচনা গ্লানি একাত্ম হয়ে
ভাঙবে দেউড়ি কপাট?
নাকি অজ্ঞাতই থেকে যাবে আজকের মতো
নতুনের হাট জমজমাট?
লৌকিক
নিরুদ্দেশ এককৌটো কর্পূর
হদিশ জানেনা কেউ,
যতসব আঁকিবুকি সার
উপচে উঠছে বিজ্ঞান খাতা।
রসহীন রসায়নে ব্যস্ত
সদলবলে বেরসিক কেউকেটা,
‘ফর্মুলা’তে বুদ্ধির খোরাক জুটলেও
ভাবের আকাশে অনন্ত শূন্যতা।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন