“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০১৭

অনুগল্প ...এক ডজন





।। চিরশ্রী দেবনাথ।।
(C)Image:ছবি
                         
এক
একটি অপরাধবোধ কুঁরে কুঁরে খাচ্ছে, অনুসূয়াদেবীকে , অথচ রাতদিনের এই যাপন থেকে উনি সরে আসতে পারছেন না কিছুতেই, কি যে অমোঘ নেশা, এ বয়সে, এ প্রান্তে এসে এ কী ঘোর! 
      এক সন্ধ্যায় অনুসূয়াদেবী ঘর গোছাচ্ছিলেন।
 
          হঠাৎই স্বামীর ভুলবশত রেখে যাওয়া মোবাইলে, মেসেজের "টুং ",নিছকই খেয়ালের বশে মেসেজটি খুললেন অনুসুয়া....ওহ্, একমূহূর্তে সব অপরাধবোধ, শরীর পেরিয়ে মাটিতে চলে গেলো তার, ফুরফুরে মেজাজে আশ্চর্য আনন্দ ডানা মেলে  উঠল চেনা ঘরে...
দুই
সন্ন্যাস নিয়েছিলেন  সপ্তমেঘ বন্দোপাধ্যায়, আজ বহু বছর পর, সংসারের কথা আবছা মনে হয়, মা বাবা, ভাই বোন নিয়ে তেল হলুদে মাখামাখি, আমিষ গন্ধের এক অসহনীয় দুপুর।  পঞ্চাশ পেরিয়ে পঁচিশ বছর পর এসেছেন আপন শহরের আশ্রমে। সন্ধ্যার ধর্মসভা শেষ হওয়ার পর প্রণামের পালা, সুঠাম,  দীর্ঘনয়না এক জ্বলজ্বলে প্রৌঢ়া স্পর্শহীন আলগোছে প্রণাম সেরে, শ্লেষ হাসি যেন ছুঁড়ে দিয়ে গেলো, স্বামী অহনানন্দকে, টালমাটাল দুলে উঠলো গৈরিক বসন, মেছো গন্ধ ক্রমাগত ছাপিয়ে যেতে লাগলো চন্দনচর্চিত প্রসাদী সময়কে....
তিন
স্কুল থেকে  ফিরলো মেয়ে, মুখে লেগে আছে অনন্ত বিষাদ, মেঘনা চিবুক তুলে জিজ্ঞেস করলো, কি হয়েছে মা, তাপ্তি বলল মা আমি এতো কালো কেন, তুমি তো টকটকে ফর্সা, সবাই আজ হাসছিল যে, মেঘনার শরীর থেকে যেন ঝরে যেতে চাইলো সব ফর্সা রং, এই মেয়ে তার আত্মজা, নয়মাসের গর্ভছেঁড়া ধন, এতো অবিচার কেনো ভগবান?  বার বার মনে হতে থাকে, সেই রাতেই কি সন্দীপক ধর্ষণ করে এসেছিল, অফিসের ঐ আদিবাসী কালো মেয়েকে, দীর্ঘ বিচারের পর যার জন্য সন্দীপক আজো জেলে. ...
চার 
অবিবাহিতা বয়স পেরিয়ে যাওয়া মেয়েদের গায়ে একধরনের গন্ধ থাকে, দীর্ঘ কৌমার্যের পবিত্রতা, আজ সেই গন্ধকেই অনুভব করছিলো ত্রিনয়নী, মাঝে মাঝে মনে হয়, এই নামের জন্যই বোধহয় বিয়ে হলো না তার, কেমন যেন অমানুষিক দেবী করে রেখেছে তারে। শ্বেতরাতের মতো শরৎ আসে, হলুদরঙা শাড়ি পরে অষ্টমীর অঞ্জলি দিতে যায় ত্রিনয়নী, অঞ্জলি শেষে, সদ্যবিবাহিতা ছোট বোন তাকে বলে, তোর নাকি কুমারী পুজো হয়েছিল, খুব সুলক্ষণযুক্তা ছিলি বলেই,
কিন্তু তুই তো আইবুড়োই থেকে গেলি রে
  !
মণ্ডপ পেরোতে থাকে ত্রিনয়নী, মনে মনে ভাবে, বিবাহই তাহলে দেবীকে সুলক্ষণা করেছে, দেবীত্ব নয়...



পাঁচ
কোন কোন বাড়িকে দেখলে অট্টহাসি মনে হয়। বিরাট গেট, বিশাল দোতালা। বহু রঙের সমাহার, জানলা দরজায়, থামে। সবজায়গায় নানান ঘর সাজানোর জিনিস ঠেসে ঠেসে রাখা। টেরাকোটার মূর্তির পাশে রঙচঙে প্লাস্টিকের ফুল, নেতাজী সুভাষচন্দ্রের বিশাল ছবি,  তার সঙ্গেই শাহরুখ খানের পোস্টার ইত্যাদি ইত্যাদি।  
এমনি এক বাড়ি "যদু ভবন "। ইনি চতুর্থ পুরুষ এ বাড়ীর, ষাট সালকা নো জওয়ান। এর আগে এই বাড়ির কোন নাম ছিল না, লোহালক্কড়ের বিজনেসে দারুণ ধনী হয়ে যাবার পর ইচ্ছেমত টাকা খরচ করে যদুবাবু এই বাড়ি বানিয়ে,  নিজের নামে নাম দিয়েছেন। পেছনে বিশাল  গোডাউন, সেখানে সারাদিন মাল আসা, নেওয়া  চলতেই থাকে, বারান্দায় দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য দেখে ভারী তৃপ্তি হয় তার, পাশে থাকে তাঁর দুই ছেলে, বড্ড স্বাস্থ্যবান, দেখলেই মনে হয় খাতাপিতা ঘরকা বেটা। পুত্রবধূরা মোটা মোটা গয়না লাগিয়ে, পান খায়, টিভি দেখে, আর প্রচুর খাবার বানায়। একদিন নীচে নেমে বাড়ীর চারপাশ ভালো করে ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন যদুবাবু, কি যে ভালো লাগছে এই রাজ্যপাট, হঠাৎ থমকে গেলেন, এই পাশের বাড়িটা নতুন মনে হচ্ছে, আগে তো দেখেননি, না খেয়াল করেননি, কাঠাদুয়েক জায়গায়  সাদা আর ছাই রং মিশিয়ে, টিনের চাল দেওয়া একটি ছোট্ট বাড়ি , যেন সাদা পায়রা জিরিয়ে নিচ্ছে অবেলার দুপুরে। নিরাবরণ  বারান্দায়, ঝুলন্ত টবে পাতা বাহারের ঝাড় অল্প অল্প দুলছে হালকা বাতাসে,  বাড়ির গায়ে ওড়নার মতো ,সবুজ কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া  বাড়িটির সামনে কাঠের তৈরি একটি ছোট্ট গেট,  বোগেনভেলিয়ার সমারোহে লকেটের মতো সেঁটে আছে। বাড়ির নাম "কাশবন "।
একজন সুঠাম চেহারার যুবক, সামনের রুমালের মতো উঠোনে পলকা এক কচি নিমগাছের তলায় বেতের চেয়ারে বসে বই পড়ছে আর সাদা মোমবাতির শিখার মতো একটি তিরতিরে হলুদ শাড়ি, সরু দুখানি  শাখা পরা হাতে, ঝিরঝির জল ঢালছে সার সার চন্দ্রমল্লিকায়, মুহূর্তে বুকের বামদিকে, তীব্র ব্যথা সমেত একটি অচেনা নদীর উপস্থিতি অনুভব করলেন যদুবাবু, এই নদীটির নাম "ঈর্ষা নদী "...
ছয় 
.......
একমাস ধরে আর্টিস্ট দ্যুতিময় চক্রবর্তী ভীষণ ব্যস্ত। তার অনেকগুলো কাজ নিয়ে প্যারিসে একটা প্রদর্শনী হবে। ওখানে ছবিগুলো বিক্রির ব্যবস্থাও থাকছে, খ্যাতি এবং অর্থ একইসঙ্গে দুটোর  সোনালী হাতছানি , এদিকে যাদের ব্যবস্থাপনায় হচ্ছে, তাদেরই তিনজনের একটি দল, আজ দিল্লী পৌঁছুবে, আগামীকাল আসছেন দ্যুতিময় বাবুর স্টুডিওতে, কাজগুলো একটু দেখতে, বেশ কয়েকটি কাজ ইনকমপ্লিট এখনো, বিশেষ করে সেই অরণ্যের ছবিটি, যেখানে তিনি গভীর অরণ্যের মধ্য দিয়ে একটি আলোকরশ্মির অনিবর্চনীয় গতিপথ দেখাতে চান কিন্তু কিছুতেই মিলছে না, শেষ পর্যন্ত একপ্রকার বাধ্য হয়েই আজ তার প্রিয় ছাত্র অনিকেত কে আসতে বলেছেন, ওকে ছবিটার উপর কিভাবে ফিনিশিং টাচ  দেওয়া যায় ভাবতে বলে, নিজে লাঞ্চে গেলেন, লাঞ্চ থেকে ফিরে ঘরে ঢুকে চমকে উঠলেন, একটি হরিণ তাকিয়ে আছে তার দিকে, আশ্চর্য সুন্দর, হলুদে সাদায় এক হরিণশিশু, পৃথিবীর যাবতীয় বিশ্বাস এবং বিস্ময় তার চোখে, গভীর অরণ্য হরিণটির পেছনে আস্তে আস্তে দূরে সরে যাচ্ছে যেন, সম্বিৎ ফিরে এলো দ্যুতিময়ের,দেখলেন অনিকেত তাকিয়ে তার দিকে, চোখেমুখে টেনশন, অস্ফুটে বলল, "কেমন হয়েছে স্যার? ",স্যার চুপ করে রইলেন, তারপর একটু পরে বললেন, "আজ তবে এসো "বাকিটা আমি করবো। অনিকেত চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, কালো রঙে তুলি ডুবিয়ে, দ্যুতিময় ঢেকে দিতে লাগলেন সেই হরিণ শাবককে, ক্যানভাস থেকে হারিয়ে গেলো বিস্ময়, বিশ্বাস...চাপ চাপ অন্ধকার জমে উঠলো শুধু...
সাত
একটু আগেই মারা গেছেন, সুনয়নী সিংহরায়। এই মৃত্যু কাঙ্ক্ষিত ছিল, দীর্ঘ রোগযন্ত্রণা তাকে ধীরে ধীরে সে পথেই নিয়ে যাচ্ছিল। ময়ূর খোদাই করা খাট ভেঙে ফেলা হচ্ছে, সাতচল্লিশ বছরের শয্যা সুনয়নীর, এই খাট এখন আর নাকি থাকবে না এ ঘরে, তোষকের তলায় ভাঁজে ভাঁজে জমে আছে বছরের হিসেব, সবশেষে মিলল একটি গোলাপি কাগজ, লেখা, "তোমার দেওয়া চুনির আংটি, আমি কাউকে দেবো না, ছেলেমেয়ে, নাতি নাতনী বৌমা কাউকেই না, তাই খেয়ে নিয়েছি, আমার সঙ্গেই যাবে, মৃত্যুর পরও "...
আট
..........................
আজ বড়ো ফাঁকা লাগছে, বিখ্যাত সাহিত্যিক অনিন্দ্যসুন্দর চক্রবর্তীর, পুজোর লেখা শেষ হবার পর আয়েশ করবেন কদিন খুব, এরকমই ভেবেছিলেন, কিন্তু আজ কেমন শূন্যতা গ্রাস করেছে, আধো অন্ধকার বিকেলে কি মনে করে লেটার বক্স খুললেন, এ কাজ সাধারণত সেক্রেটারি রথীনই করে, দুদিন পর পর, আজ নিজেই করলেন, খুব সাধারণ একটি সাদা খামের ওপর, যেন চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়া কয়েকটি
অভিজাত শব্দ, দ্রুত ছিঁড়ে ফেললেন খাম, ভেতরে কেঁপে ওঠলো একছত্র অগরু গাছ, "আর কত উপন্যাসে আমাকে নায়িকা হতে হবে? দীর্ঘকাল লিখিত হতে হতে, আমি নিঃশেষিত, হয়তো আমাকে ফেলে না গেলে, তুমি এতো লিখতে পারতে না!! "...


নয়
.........
পুরনো রঙচটা  শাড়িতেও মানুষকে এতো সুন্দর লাগবে জানলে, মিসেস সান্যাল, বিলাসীকে এই 
শাড়ি দিতেন না, কেমন ঈর্ষার মতো ফুটে উঠেছে আনাচকানাচ, রঙচটা জর্জেটে। নিজের মাংসল থপথপে সাদা শরীরের দিকে তাকিয়ে ঐ কালো শরীরকে বড্ড প্রতিযোগী মনে হলো। বিকেলবেলা মিঃ সান্যাল আর তাদের ছেলে অফিস থেকে আসার আগে বিলাসীকে ডেকে পাঠালেন মিসেস সান্যাল, একটি ঢলঢলে ম্যাক্সি দিয়ে বললেন এটা পর
তো, বিলাসী গদগদ হয়ে চটপট পরে নিলো, টিভি থেকে চোখ সরিয়ে একঝলক তাকালেন মিসেস সান্যাল, ধকধক করে উঠলো হৃদয়, হলুদে কালোয় ছোপছোপ ম্যাক্সিতে যেন এক আহত বাঘিনী মনে হচ্ছে বিলাসীকে ...
দশ
.........
দেশে বিদেশে ক্রমাগত শিকর ছড়ানো বিখ্যাত প্রাইভেট ব্যাঙ্কটির কর্ণধার রূপঙ্কর আগরওয়াল
ভীষণ ভালো মানুষ। অধস্তন অফিসার থেকে আরম্ভ করে সাধারণ কর্মচারী সবার মধ্যেই তিনি বিপুল জনপ্রিয়। এবার ফরেনে গিয়ে এই জিনিসটি তার দুর্দান্ত ভালো লেগেছে, সবাইকে সারপ্রাইজ দেবেন বলে ব্যাঙ্কের হেডঅফিসে রবিবার থেকে এনাকে প্রতিষ্ঠিত করলেন, ইচ্ছে সোমবার সবাই দেখে অবাক হোক, হলোও তাই, সবাই স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে, কিন্তু কেউ হাসলো না যে, ম্যানেজার থেকে আরম্ভ করে সাধারণ ক্লার্ক পর্যন্ত ...
পিনড্রপ সাইলেন্স হলে, হঠাৎ সিকিউরিটি গার্ড
রামশরণ হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো, আমার কাজ তবে এখন থেকে এই যন্তরমানুষ করবে ! 
আমার কি হবে স্যার...
এগারো
........
জনমেজয়, ফাইনাল ইয়ার ডাক্তারির ছাত্র, যেমন মেধায়, তেমনি ব্যক্তিত্ব, তেমনি সৌন্দর্য। সিনিয়র, জুনিয়রদের মধ্যের সেরা  সুন্দরী মেয়েটিকে নিয়ে ফ্লার্ট করতেও তার জুরি নেই, সবই সে উপভোগ করে। সবাই তার একটু মনোযোগ পাওয়ার জন্য ব্যাকুল। বাদ সাধে শুধু,  একজোড়া চোখ, তাকিয়ে তাকিয়ে তাকে দেখে, অবিশ্রান্ত, তীব্র, অসহনীয়, অনমনীয়, দাবিহীন। দীর্ঘ করিডরে হঠাৎই ভেসে ওঠে
মেঘের মতো। 
নার্সিং এর ছাত্রী মেয়েটি, একই ইয়ারের, শ্যামলা, দীর্ঘ। কেন তার চোখের সামনে এলে গুটিয়ে যায় জনমেজয়। সে কে? কোন জন্মের স্ত্রী...
বারো 
কাজল
............
রাত বারোটায় চোখে ঘন করে কাজল পড়ছে মধুমতী, এর একটা  কারণ আছে।  সকাল বেলায় যখন মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হবে, তখন চোখ জুড়ে ছড়িয়ে থাকবে আবছা কাজলের ঘন ক্ষেত, এটা হলো মধুমতীর সেরা মেককাপ। ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপস্টিক, ভীষণ চেপে বসা,  উচ্ছৃঙ্খলের মতো। সকালে স্নানের পরও মিশে থাকে সেই লিপস্টিক, মধুমতীর  ঠোঁটে, যেন লালাভ বিষণ্ণ এক জোড়া তুঁতে ফল । তারপর  আরো যা কিছু সাজ হবে সেটাও সুনিপুণ, মনে হবে হেলায়, আসলে তা নয়, এ এক অনন্য দক্ষতা, মধুমতীর আনমনা সাজের অভিনয়। এই সাজটাই তাকে অজস্র মুগ্ধদৃষ্টি উপহার দেয় প্রতিদিনের কর্মক্ষেত্রে। এ হলো সেই  লোভ যা  প্রতিদিন মধুমতীকে গিলে ফেলে সাপের মতো।
নিম্ন মধ্যবিত্ত গৃহহীন বিধবার সুন্দরী মেয়ে মধুমতী  বিয়ে  হয়েছে সুপ্রতীম, নামের যুবকটির সাথে।  সচ্ছল মা বাবার একমাত্র সন্তান, সাজানো বাড়ি, মা সেই বাড়িতে কাজ করতো, মধুমতীর পড়ার খরচ জুগিয়েছে সুপ্রতীমের মা বাবা, পড়াশোনায় ভালো মধুমতীর চাকরি পেতেও অসুবিধে হয়নি, শুধু সে জানতো না, তার পড়াশোনা, চাকরি সবকিছুর বিনিময়ে একটি শর্ত আছে, সুপ্রতীমকে বিয়ে করতে হবে। মেয়ের, বিস্মিত, হতবাক, শ্মশানের মতো, বিষাদমুখটি বোধহয়,  মা, দেখতে পারেননি আর, এক ঝড়ের মতো অপরাধ বোধ নিয়ে হৃদযন্ত্রটি অচল হয়ে গেলো দ্রুত।
দু বছরের মধ্যে সুপ্রতীমের মা বাবাও পৃথিবীর পাট শেষ করলেন । আজ দশবছর হতে চলল। প্রতিদিন রাতে তাই সাজে মধুমতী..... জড়, অন্ধ, সুপ্রতীম শুয়ে থাকে পাশের খাটে, এক অসীম, অচল বর্তমান মধুমতীর।  পাশের ঘরে দিন রাত্তিরের আয়া, মোবাইলে অর্ধেক রাত পর্যন্ত কথা বলে তার স্বামীর সঙ্গে,
মধুমতীর কাজল তাকিয়ে থাকে এক বাকহীন যুবকের দিকে...


কোন মন্তব্য নেই: