||
কৈবল্লানন্দ ||
(C)Image:ছবি |
অদ্য আসরে রাজনৈতিক দলগুলির আর্থিক সঙ্গতি
বিষয়ে আলোচনা হইতে ছিল হঠাৎ খুড়ো চায়ে চুমুক দিয়া ‘হুম’
শব্দ করিয়া
ভানুবাবুর ভাষায় থম মারিয়া গেলেন । খুড়োর ভাবগতিক দেখিয়া সমস্ত ঘরে কালবৈশাখী ঝড়ের পূর্ববর্তী নিস্তব্ধতা নামিয়া, দ্বিতীয়বার চায়ে চুমুক দিয়া চোখ খুলিয়া
পুঁচকেকে
জিজ্ঞাসা করিলেন “কত কোটি বলিলে ?” পুঁচকে কিছু বুঝিতে না পারিয়া থতমত
খাইয়া গেল,
খুড়ো পুনরায় বিশদে
বলিলেন “আমাদের কমিউনিস্ট পার্টির তহবিল কত
বলিলে ?” পুঁচকে বুঝিতে পারিয়া বলিল “প্রায় আটশ কুড়ি কোটি টাকা” । শুনিয়া খুড়ো একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়িয়া চুপ করিয়া রহিলেন, বাকি চা ঠাণ্ডা হইয়া গেলেও খুড়োর
ভাবগতিকের কোনও
পরিবর্তন নাই ।
আমরা সবাই চুপ করিয়া আছি, পাতা পড়িলেও শব্দ হইবে এমন একটা দম
বন্ধ করা অবস্থা ।অবশেষে বলিলেন
খুড়ো “আহা আমাদের সময় যদি থাকিত!” আমরা বলিলাম “কী খুড়ো ?” খুড়ো বলিলেন “পার্টির টাকা” আমরা বলিলাম, “এখন
থাকিলে কি কাজে আসিবে না ?”
খুড়ো বলিলেন, “আলবৎ আসিবে, কিন্তু আমার তো সে বয়স নাই আর বুড়োর
কথা শুনিবে কে ?”
আমরা সবাই একসঙ্গে
বলিলাম, “খুড়ো বিশদে বলিবে ?” খুড়ো বলিলেন, “পরিকল্পনা খানা সংক্ষেপে বলিতেছি, শুন, প্রথমে ২০০ কোটি টাকা খরচ করিয়া এক খানা ইনস্যুরেন্স কোম্পানি খুলিবার
লাইসেন্স সংগ্রহ
করিতাম, পরে প্রতিটি জেলা অফিসে দপ্তর খুলিতাম, D/C মেম্বারদের D/O করিতাম, D/C সেক্রেটারিকে ম্যানেজার । ব্রাঞ্চ অর্থাৎ L/C স্তরে কমরেডদের এজেন্ট জমজমাট টাকা
সংগ্রহ শুরু হইত সঙ্গে জনসংযোগ । এরপর সেই টাকায় গ্রামে গ্রামে বিদ্যালয়, জেলায় জেলায় কলেজ, বাঘা বাঘা শিক্ষক, অধ্যাপক নিয়োগ করিয়া পাঠ দিবার ব্যবস্থা করিতাম সঙ্গে আলাদাভাবে মার্ক্সবাদের
একটা ক্লাস প্রতিদিন নেওয়া হইত । এইবার I.A.S., I.F.S., ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, শ্রমিক নেতা, কৃষক নেতা তৈরি হইয়া সারা ভারতবর্ষে
ছড়াইয়া
পড়িত, যে কমিউনিস্ট ভাবনা আমরা এত বছরেও সারা
ভারতবর্ষে গ্রহণযোগ্য করিয়া তুলিতে পারি নাই তাহা দুই দশকে সম্পন্ন করিয়া সারা ভারতবর্ষে
কমিউনিস্ট শাসন কায়েম করিতে পারিতাম । আমরা সমস্বরে বলিলাম “সাধু, সাধু ।” খুড়ো
দ্বিতীয়বার চায়ের কাপে চুমুক দিয়া থম মারিয়া বসিলেন – বুঝিলাম এবারেরটা দ্রব্যগুণ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন