( এক )
।। সুমন
পাটারী ।।
(C)Image:ছবি |
দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যার দিকে যাচ্ছে। এই বছর টিউশন নেই তেমন। সব পিতা
মাতারাই চাইছে স্কুলের শিক্ষক পড়াক। তার উপরে বেসরকারি স্কুল ব্যাঙের ছাতার মতো
মাথা তুলছে সর্বত্র। তার একটা কারণ হয়তো সরকারি স্কুলের প্রতি ভরসা উঠে যাচ্ছে
অথবা পিতামাতারা ভাবছে সরকারি স্কুলে দুষ্ট ও অবাধ্য ছেলেরা পড়ে। তাদের সাথে আমার সোনামণি
খারাপ হয়ে যাবে।অথবা বন থেকে সদ্য উঠে আসা আধুনিক হতে চাওয়া বর্বররা স্ট্যাটাস
মেনটেইন করে বেসরকারি প্রেশারকুকারে সন্তানদের সেদ্ধ করে। বা হয়তো ঘটনাটি এমন
ফুটপাতের দোকান ও কাঁচ লাগানো দোকানে একই জামা ফুটপাত থেকে কাঁচওয়ালা দোকানে দাম
বেশি হলেও লোকে সেখান থেকেই কিনছে কারণ সেই
দোকান টি ঝকঝকে, দরদাম হয় না, স্টাফগুলো বেশ
বাবুয়ানা মার্জিত হাসি ও পোশাকে অভিবাদন জানায়। তাছাড়া আরেক দিকে দেখা যায় যে
ছেলেটা সরকারি স্কুলে ষাট শতাংশ আনছে সেই ছেলেটাই বেসরকারি স্কুলে আশি শতাংশ পাচ্ছে।
বেসরকারি স্কুলগুলোতে বেকাররা খুব কম বেতনে খাটে, সারাদিন দু’টো টিউশনের জন্য। স্কুলের পঠনপাঠন এমন হয়ে গেছে স্কুলের শিক্ষক দিয়ে
পড়ালেই চমৎকার! মা বাবা নম্বরবিলাসী। সেক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সিলেবাস থেকে অনেক
কমিয়ে সাজেশান দেওয়া হচ্ছে।চাক চাক নম্বর আসছে। তাই যেসব ছেলেমেয়ে গুলো কোথাও
শিক্ষকতা করে না তারা অনেকটা সারমেয় হয়ে গেছে।জীবনের মালিকানাহীন। টিউশন এখন টিউশন
নেই, গৃহশিক্ষক অনেকটা কেনা গোলামের মতো হয়ে গেছে। যদি আপনার লোকপ্রচারিত
রেপুটেশান না থাকে আপনাকে ছাত্র ছাত্রীর মূর্খ মা কীভাবে পড়াতে হবে তা বলবে, আদেশ করবে নোট নিজের হাতে
লিখে দিতে, আর ভাগ্যক্রমে কখনো যদি ওদের বাড়িতে কোনো আত্মীয়
ও আপনার আসার সময় মিলে যায় তবে এককাপ চা ও পাবেন, মাস শেষ
হলে আপনাকে চৈত্রের দুপুরে চাতকের মতো হা করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে,
অবশেষে দশ তারিখ পেরুলে লাজ বাদ দিয়ে আপনাকে চাইতে হবে মাইনে টা।
এসব ভাবছিলাম শুয়ে শুয়ে, জীবন কোন রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছে,
হঠাৎ মিঠুন এসে ঘরে ঢুকলো, সান্তু আছিস?
হুম আয়। জানিস শনি মন্দিরের সামনে ভীষণ কাণ্ড শুরু হয়েছে।
চলবে....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন