“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০১৬

সুরমা গাঙর পানিঃ উজান পর্ব ১৯

(দেশভাগ এবং পরের দশকের কাছাড় সিলেটের প্রেক্ষাপটে রণবীর পুরকায়স্থের এই উপন্যাস ছেপে বের করেছে দিন হলো। ভালো লাগা এই  উপন্যাস পুরোটা টাইপ করে তুলে আমার প্রিয় কথা শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানালাম। আশা করছি আপনাদের সবার এটি পড়তে ভালো লাগবে। সম্পূর্ণ উপন্যাসের সংলাপ ভাগটি সিলেটিতে -সে সম্ভবত এই উপন্যাসের সবচাইতে আকর্ষণীয় দিক। আপনাদের পড়বার সুবিধে করে দিতে, ঈশানে এই উপন্যাস ধারাবাহিক ভাবে আসছে। আজ তার  উজান  পর্বের  অধ্যায় উনিশ  ---সুব্রতা মজুমদার।)    

উনিশ


   য় ডর নেই বৈতলের । কোনোদিন কাউকে ভয় করেনি । নির্ভয় থাকাই ক্ষীণদেহী বৈতলের জীবনীশক্তি । এতদিন পর্যন্ত বৈতলজীবনের কোনও পিছুটান ছিল না । নিজের অজান্তেই এখন বৈতলের কিছু পরিবর্তন ঘটেছে । বৈতল দুর্বল হয়ে যাচ্ছে । দুভাগ হয়ে যাচ্ছে । দুর্গাবতী আর সে, আলাদা করে দেয় বারবার, আলাদা দেখে । এ এক অবাক সম্পর্ক, জড়িয়ে গেছে দুর্গাবতী, তবু বৈতল এক হতে পারে না । পেরিয়ে যাওয়া যাবে না এমন এক বেড়ার ওপারে দাঁড়িয়ে থাকে । অলঙ্ঘ্য এক শুকনো নদী শ্যাওলা যেমন দুদেশকে আলাদা করেছে বৈতলের দিক থেকেই আশঙ্কা বেশি, বৈতল কালো বৈতল নিম্নবর্ণ আর দুর্গাবতীর দুধেআলতা রঙের উপর আছে উচ্চবর্ণের সম্ভ্রম । নৈবেদ্যের উপর কাঁঠালি কলার মতো শোভাময় । তেলে জলে কী করে মিশে খায় । তাই সীমান্ত পেরোনোর মজার কথাও শেষ পর্যন্ত পরিহাসময় থাকে না । অভিমানে বারবার আলাদা হওয়ার কথা শুনিয়ে দেয় বৈতল, বার্তা দেয় দুর্গাবতীকে । কী জানি, দুর্গা বোঝে কী বোঝে না । হয়তো বোঝে তাও বৈতলকে আতান্তরে রাখে । আর ছাঁটকলে পড়লে বৈতলও উল্টোপাল্টা করে । অকারণে হরি শুক্লবৈদ্যর সঙ্গে লড়াই করে । আর মনে মনে প্রস্তুত হয় শিবিরে ছেড়ে যাওয়ার । করুণা আর দয়ার পাত্র হয়ে শিবিরবাসী হয়ে থাকতেও চায় না বৈতল শিবিরবাসীদের প্রতি শহরবাসী মানুষের একটা দূরত্বও লক্ষ করেছে বৈতল । শহরের সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে উদ্বাস্তুদের কল্যাণে । ভিড় বেড়েছে, চুরি ডাকাতি বেড়েছে, জিনিষপত্রের দাম আকাশ ছুঁয়েছে । শৈলেন কবিরাজের সান্ধ্য আসরে হেড়ম্ব ভট্টাচার্যের মুখের তো রাখঢাক নেই, সরাসরি বিষ উগরে দেয় । পাকিস্তানে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে । আবার রাজনীতির মানুষের ঘোলা জলে মিষ্টি কথাও বলে, প্রতিশ্রুতি দেয়, হেন করার তেন করার । কেউ কেউ আবার, পয়সাওলা যারা বিশ্বস্ত বেগার শ্রমিক খোঁজে । ইটখোলা হরিৎবরণের জমিদার যমুনা প্রসাদ সিং যেদিন সদলবলে মিটিং করে যায় ক্যাম্পের বাইরে, সভা শেষে ধুতি শাড়ি বিতরণ করে । বৈতলের হাতে হাত লাগতেই চিনতে পারে । আর ছাড়ে না । আসলে বৈতল ইচ্ছে করেই ধরা দেয়, কোনও ব্যক্তিগত দয়ার দান গ্রহণ করার মানুষ নয় সে । চুরি ডাকাতি করবে, হাত পাতবে না । জমিদার তার হাত জড়িয়ে ধরে, নিয়ে যেতে চায় তার বাড়ি । প্রাণ বাঁচানোর কৃতজ্ঞতায় বেভুল মানুষের ফাৎনা ডুবতে দেয় । কাতর জমিদার বলে,
--- কত খুঁজছি রেবা ।
   খুঁজেছ তো কী হয়েছে । শুকনো কৃতজ্ঞতায় চিঁড়ে ভিজবে না । বৈতলের পাতা ফাঁদে পা দিতে হবে, তার পর দরদাম । টোপের মুখে বৈতল অনেক মধু ঢেলে রেখেছে । সাপের ছোবল থেকে বাঁচানোর খেলা এমনি এমনি খেলেনি । হাতের থেকে সোনার আংটি সরানোটা দাদন । সোনা বেচার সত্তর টাকায় বানানো রিক্সা নিয়েই বৈতলের সমস্যা । নিরাপদ জায়গা চাই । রিফ্যুজি শিবিরে অঢেল জায়গা, কিন্তু বৈতল খুব কমজনকেই বিশ্বাস করে । সবার সঙ্গে ওর মেলেও না । বাসিন্দারা সবাই তো আর এক গ্রামের নয় এক পরগণার নয়, এক বিশ্বাসের নয় । সুনামগঞ্জ বানিয়াচঙ ছাতক মৌলভীবাজার সদর সিলেট হবিগঞ্জের মানুষজনের কথা বলার ধরনও ভিন্ন । সবাই কিছু না কিছু লুকোয়, মিছে কথা বলেদেশের জমিদারির গল্প করে ধাড়ার ঘরে বসে ঘুমিয়ে । পান্তাভাতের এসব জমিদারের তাই ভরসা নেই বৈতলের । তাই হরিৎবরণের আসল জমিদার যমুনাপ্রসাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় দুর্গার । বলে,
--- আমার পরিবার ।
    বৈতলের পরিবারকে মনে ধরে জমিদারের । বৈতল জানে মনে ধরবেই, লোভ চুক চুক করবে রিফ্যুজির সুন্দরী বৌ দেখে । জমিদার পুকুরে মাছমারার চমৎকার আর সর্পাঘাত থেকে রক্ষা করা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে যুক্ত হয় দুর্গাবতীর আগুন সুন্দর । তাও জমিদারের অতিউৎসাহ নাকচ করে বৈতল । দেয় গাটানা, তার তেলাল শরীরকে করে আরো মসৃণ, পিছলে পিছলে যায় । নিরাপদ আস্তানায় ঘাঁটি গাড়ার আগে পোক্ত করে নিতে হবে ভিত । ঝড়ঝাপটার হাত থেকে বাঁচাতে হবে পদ্মপুকুর পারের একচালার ঘর । এসব বড় বড় পয়সাওলাদের বিশ্বাস নেই, এরা আজ বলবে এসো বসো নয়নের মনি হয়ে, দুদিন পরেই বলবে ভাগ । গুরু সৃষ্টিধর তাই কারো অযাচিত সম্মান গ্রহণ করেননি কখনও । গুরু বলেছেন,
--- এবার হাত থাকি বাচিয়া থাকিও বাবা । এরা বিনা কামে কিচ্ছু করে না । কাম শেষ হইলে তুমিও শেষ । এরা বড় সাংগাতিক এরারে কয় দিয়া নেওরা । এরা সব বান্দীর পাতো বইয়াখাওরা । বাঘর চউখ দি চাই থাকলে বাঘেও চউখ লামাই লায়, এরার কুনু চক্ষুলজ্জা নাই । এর লাগিউ কয় বড়র পিরিত বালির বান্দ খনে গলাত দড়ি খনে চান্দ । এরা কিচ্ছু দিতে চাইলে লেখাইয়া লইও নাইলে পাঁচজনর সামনে যেন কড়ার করে দেখিও ।
   বৈতলও জানে অনেক প্রবাদ । ধান খাইছ মুরগি যাইবায় কই । জমিদার তো প্রাণ বাঁচানোর নাটককে সত্য জানে, সত্য জেনেছে তার সুন্দরী দুর্গাবতীকেতাই জমিদার পাঁচজন নয় দশজন নিয়েই আসবে তাকে গৃহস্থ করতে । বৈতলেরও তো মন পড়ে আছে ঐ ছোট্ট জলাশয়টির পারে । এখানে এই শিবিরে বেশিদিন থাকলে সেও বদনাম হয়ে যাবে । সাধারণ মানুষের রাগ বাড়ছে রিফ্যুজিদের উপর । শহরে চুরি বাড়ছে আর সব দায় যাচ্ছে উদ্বাস্তু ক্যাম্পবাসীদের দিকে । সন্দেহ দানা বাঁধছে । অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে গেছে এই নম্বর দেওয়া ক্যাম্প । একবার এসে ঢুকে গেলে তাকে আর ধরা যাবে না, কারণ ক্যাম্প হলো সংরক্ষিত এলাকা, প্রতিবেশী দেশের নাগরিক খোঁয়াড়, দেশের মালিক এসে চাইলেই ফিরিয়ে দিতে হবে রসিদ লিখে । ওপার থেকে তাড়িয়েছে ডাণ্ডার বাড়ি দিয়ে, এবার নিয়ে যাবে থিথি হৈ করে । বৈতল শুনেছে সবাইকে ফিরিয়ে দেবে তার জমিজমা ঘরবাড়ি । নেতারা তো তাই বলে, ক্যাম্পের ভিতর বাইরে অনেক নেতা, প্রায়দিনই টিনের চোঙায় মুখ লাগিয়ে বক্তৃতা দেয় । বৈতলের ক্যাম্পের নেতা সতীশচন্দ্র দেব এর মুখে দাঁত নেই একটাও, বয়সও সত্তরের উপর, চোঙা ছাড়াই বলেন তাঁর বিশ্বাসের কথা । হবিগঞ্জ শিমূলঘরের এই দীর্ঘদেহী বৃদ্ধ এখনও বিশ্বাস করেন দেশে ফিরে যাবেন, সবাইকে বলেন প্রস্তুত থাকতে । গৃহহারা এই মানুষের দল তার কথার দৃঢ়তায় আকৃষ্ট হয় । সতীবাবু তাঁর অনুগামীদের বারবার দুটো কথাই মনে রাখতে বলেন বলেন,
--- নেতাজি আইবা, দুই বাংলা এক অইব ।
আবার কংগ্রেসি নেতারা বলেন, দেশভাগ সত্য, মেনে নিতেই হবে ।
   বিভ্রান্ত বৈতল জানতে চায় কোনটা সত্য । যদিও বৈতলের কাছে কংগ্রেসিদের কথাই মান্য বেশি, সে আর কোথাও যেতে চায় না, সম্ভব নয় বলে । দুর্গাবতীর মনের ভিতর কী আছে এখনও জানে না বৈতল, কিন্তু দুর্গার স্বপ্নে সেও বীজ বুনতে শুরু করেছে । নতুন বসতের সন্ধানে তাই তার জালের জগৎবেড় ছড়িয়েছে হরিৎবরণের জমিদার বাড়িতে । তবে হাতের পাঁচ নষ্ট করার মতো বোকাও নয় বৈতল । শিবিরের নিত্যদিনের ভাল মন্দেও মিশে থাকে । সাদা সার্টপ্যান্ট আর কোমরে কালো চামড়ার ব্যাল্ট পরা রিফ্যুজি অফিসার এলেই শুরু হয় কথা । সবার খোঁজ খবর নেয় মানুষটা আন্তরিকতা দিয়ে সবাই ডাকে আর আরও । বাবুও নয় স্যারও নয় সাহেবও নয় । শুধু আর আর ও, উদ্বাস্তু পুনর্বাসন আধিকারিক । বৈতলও ডাকে তাই । বৈতলকেও চেনে মানুষটা । সম্ভাষণ করে হাসি মুখে । বলে,
--- ভালা নি রেবা ?
   সবাইকে নাম ধরে নয় পদবি ধরে ডাকে মানুষটা । বৈতলের বেলা কেন এই তাচ্ছিল্য বোঝে না । নাকি জানে তার দুই নামের রহস্য বৈতল দাস পাটনি আর সৃষ্টিধর শর্মা নামের কথা । তাহলে কি এই লোকটাও জড়িত হরির কেরামতিতে । তাই বৈতলের জবাবও সোজা হয় না । বলে,
--- আমরার ভালা দিয়া কিতা অইত কইন, আমরা আইলাম মাগনা গরু দাত নাই, আপনার খোয়াড়ো আছি, আপনে ঘাস উস দিরা, ইতাউ কে দেয় কইন । ভালাউ আছি । তে কর্তারে একখান কথা জিগাইতাম নি ?
--- কও রেবা, তুমি শুনছি খুব রসিক মানুষ ।
--- রিফ্যুজির সব রস পেরাইয়া বার করি লাইছে গণভুটে । আর অখন সবে কাকরা কাকরি কররা । সময় থাকতে কিচ্ছু করতা পারছইন না, অখন কইন নেতাজি আইবা, ভাঙা দেশ বুলে জুড়া লাগব । সবে বুলে নিজর দেশো ফিরি যাইবা । আমি যাইমু ছাতকো, অউ সুধা দত্ত যাইবা শ্রীমঙ্গল তাইন বুলে চাঘরবাবু আছলা, কত চাকরবাকর কুলি কামিন আছিল তান, রাজার লাখান থাকতা, পারবা নি অখন । গান্ধিয়ে জিন্নায় ইতা কিতা করলা আমরার । আপনারে কই, হাচা কথাখান কইবা নি । আমরার কিতা অইব, কই যাইমু না অউ ছাপটা ঘরো থাকিয়া মরমু । শহরর মাইনষে কয় আমরা বলে চুর । আমরা কিতা চুরি করতাম কইন চাইন, কই রাখতাম লুকাইয়া আর লেংটার কিতাউবা চুরি করতাম । আমরা কিতা কইন চাইন, হিনর বাঙাল হকলে কয় বাপর দেশো যা, আইলাম । ইনর হিন্দুয়ে বাঙালে কয় রিফ্যুজি । রিফ্যুজি কিতা হিন্দু না মুসলমান না খেদাখাওরা হকলর নতুন ধর্ম । অখন যে কইরা যাইতাম আবার, গেলে মায় নিবা নি । মা অউ নাই বেটি, যাইতাম কই ।
    শেষ কথা কটি বৈতল নিজের সঙ্গেই কয় । কথা বলতে বলতে আরআরওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে । কম কথার মানুষটিকে মনে হয় বেশ সাব্যস্তের । শোনার ধরনে মনে হয় একটা সমাধান পাওয়া যাবে । কিন্তু বৈতলকে নিরাশ করে উদ্বাস্তু আধিকারিক । বলে,
--- আমি রেবা চাকরিয়ান মানুষ । ইতা সব রাজনীতির কারবার আমি কইতাম পারতাম নায়বা । তুমরার তো নেতা আছইন, তারারে জিগাইও ।
--- আর নেতা । তারা যে আমরারে নিয়া কিতা করবা, কে জানে । আমরা তো তারারে ভুটও দিতাম নায়, আমরার দেশ অউ নাই, আর ভুট । তেও আমরারে নিয়া খেলরা কেনে । নেতা ভালা অইলে নি আমরা পানিমাটি ছাড়িয়া আই । কে আছইন কইন ।
--- অউ যে আইরা দেখরায় নি, টানে জিগাও । তাইন সবর লাখান নায়, ভালা মানুষ । ভালা অইলে কিতা অইব, বড় একলা মানুষ । সবে লুটি লার, তাইন একলা রিফ্যুজির লাগি জান দিলাইরা । বড় একরুখা রেবা ।
--- তানে তো চিনি, তাইন কাকাবাবু ।
--- ইনো সব অউ কাকাবাবু । বুড়া অইলেউ কাকাবাবু । তান নাম হরিমাধব ভট । তাইন বুড়া নায় ।
--- অয় অয় জানি । তান বয়স কম, তেও তানে কাকাবাবু অউ ডাকি । তে কিতা হরিদা ডাকতাম নি । চিনইন নানি আপনার হরি চুররে । হে চুর নি, হে ডাকাইত । আমরার পয়সা মারিয়া লাল অই যার । আপনারা জানিয়াও তারে রাখচইন হিয়ালোর হাতো ছাগিবাগি দিছইন । এর লাগিয়াউ, চুরর লগে নাম মিলাইতাম না করিয়া তানে ডাকি কাকাবাবু ।
  হরি শুক্লবৈদ্যর কার্যকলাপ সব জানা আছে আরআরওর । কিন্তু করার নেই কিছু । পুনর্বাসনের নামে কত টাকা নয় ছয় হচ্ছে, হরি তো ডোলের দুচার টাকা এদিক ওদিক করে । তাই বৈতলের কথার জবাব না দিয়ে হরিমাধববাবুর পদচারণার দিকে নজর দেয় । যত তাড়াতাড়ি তাদের সামনে আসবেন তত তাড়াতাড়ি জোঁকের মুখ থেকে রক্ষা পাবে । বৈতলের সব মোক্ষম প্রশ্নের যে জবাব নেই তার । বা, জবাব থাকলেও দেওয়ার উপায় নেই । একজন আধিকারিক হয়ে এক বাস্তুহারাকে এসব বলে কী লাভ । তাই হরিমাধব বাবুর হাতে বৈতলকে সঁপে দিয়ে এগিয়ে যায় হরি শুক্লবৈদ্যের অফিসঘরের দিকে জবাব চাইতে । বিবেকবান আধিকারিক হয়ে অধঃস্তনকে একটা কড়া ধমক তো দিতে পারে আরআরও । বৈতল তার পালিয়ে যাওয়া দেখে হাসে । সে জানে ধমক টমক দেওয়া এই সাদাসিধে মানুষটার ধাতে নেই । অফিসঘরে পৌঁছতে পৌঁছতে ইচ্ছে করেই ভুলে যাবে সব ।




চলবে 
<উজান পর্ব ১৮ পড়ুন                                           উজান পর্ব কুড়ি পড়ুন> 

কোন মন্তব্য নেই: