( দেশভাগ এবং পরের দশকের কাছাড় সিলেটের প্রেক্ষাপটে রণবীর পুরকায়স্থের এই উপন্যাস ছেপে বের করেছে দিন হলো। ভালো লাগা এই উপন্যাস পুরোটা টাইপ করে তুলে আমার প্রিয় কথা শিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধা জানালাম। আশা করছি আপনাদের সবার এটি পড়তে ভালো লাগবে। সম্পূর্ণ উপন্যাসের সংলাপ ভাগটি সিলেটিতে -সে সম্ভবত এই উপন্যাসের সবচাইতে আকর্ষণীয় দিক। আপনাদের পড়বার সুবিধে করে দিতে, ঈশানে এই উপন্যাস ধারাবাহিক ভাবে আসছে। আজ তার উজান পর্বের অধ্যায় চব্বিশ ---সুব্রতা মজুমদার।)
চব্বিশ
সিংহ জমিদারের কুলদেবী মা মনসা । কালো পাথরের পাঁচ ফুট উঁচু
পটমূর্তি নাকি কয়েকশ বছরের প্রাচীন । মহীশূর মাদ্রাজ না তেলেঙ্গা, দক্ষিণ দেশের পটশিল্পের কারুকাজ দেবীপ্রতিমা
ঘিরে । কালো পাথরের মনসাপ্রতিমা ঘিরেই জমিদার বাড়ির আভিজাত্য । আধাআধি সর্পপট, অর্ধেক দেবীমুখ । অভিনব এই প্রতিমা । প্রাচীন
পারিবারিক বিগ্রহ ঘিরে জন্ম নিয়েছে অনেক অলৌকিককত্ব । জমিদার বাড়ির পুকুর
পদ্মদিঘীতে ঘড়া ঘড়া মনসার ধন আছে, শ্রাবণ মাসে মা মনসা নিজ হাতে
উঠিয়ে দেন সিন্দুক জমিদারের কাছারিঘরে । অতি লোভে অনেকের মৃত্যু হয়েছে দিঘীর জলে ।
হয় দেওলা টেনে নিয়ে গেছে নয় সর্পাঘাতে মরেছে । জমিদার যমুনাপ্রসাদও দৈবক্রমে বেঁচে
যাওয়ার কৃতজ্ঞ বৈতলের কাছে । তাই পুকুরের দক্ষিণ কোণে শনের ছাউনি দেওয়া ঘরে থাকতে
দেয় বৈতলকে । বলে,
--- নেও রেবা, তুমারেউ দেওলা করি দিলাম আমার দিঘীত । দেখিয়া রাখিও ।
কী দেখে রাখবে বৈতল । এ কেমন ধারা কথা । শুরু
থেকেই যমুনা জমিদারের কথায়, সুর মিলছে না, মেলাতে পারছে না বৈতল । বৈতলকে দেওলা করে
রাখবে । এতবড় সাহস । বৈতলকে দেওলা করা কর্ম নয় ইটের কারবারি জমিদারের, শ্রমিক নেতা যমুনা সিং-এর । তবু বৈতল রাগ চেপে রাখে । হাসি মুখে বলে,
--- ঘাবড়াইন না যেন । বৈতলে সব দেখিয়া রাখব । খালি চারা ফালাইবা, হারা বছর বড় বড় মাছ খাওয়াইমু । রউ কাতলা
কালিয়ারা ঘাঘট, কই মাগুরও খাওয়াইমু । বড় মাছ
আমারে দেওন লাগত নায়, পুটি মকা বালিগড়া চেঙউঙ অতা
অইলেউ আমরার চলব ।
প্রস্তুত বাড়ি পেয়ে বৈতল খুশি । অনেকদিন পর
দুর্গাবতীকেও খুশি হতে দেখে বৈতল । বৈতল দুর্গাবতীকে নিয়ে ঘরে ঢোকে । দুর্গাবতী
মাথায় ঘোমটা টেনে ঘর সামলায় । বৈতল বলে,
--- হুনলায় নি বেটার মাত । হে বুলে আমারে দেওলা
করত অত নি সাহস । অউ তুমারে কইলাম, তার পুকইরোউ তারে দেওলা বানাইমু
আমি ।
--- আইচ্ছা বাদ দেও ইতা । তাইন বড় মানুষ, কইলাইছইন এক কতা, এর লাগি অত গুসা করিও না । অখন কও ঘর তো পাইলায়, খাইবায় কেমনে ।
--- রিক্সা ইগু কেনে বানাইছি । রিক্সা চালাইমু ।
--- অয় মাইনষে জিগাইবা যাইতায় নি বা, তুই কইবায় যাইতাম নায় । বুলে কিতা । অখন আমি
গাইঞ্জা খাইয়ার । এর থাকি জমিদারর ইখানোউ কুনু কাম পাইলিবায় ।
--- আমি কিতা হিগুর চাকর অইয়া থাকতাম নি । তর
ইচ্ছা অইলে বেটি তার পাও টিপিয়া দিছ দুই বেলা । দিবনে যেতা চাছ ।
রাগের মাথায় দুর্গাবতীকে তুইতুকারি করে বৈতল
। দুর্গা বৈতলের রাগ নিয়ে খেলা করে, হাসে । বলে,
--- ঠিক নি । তে ত বালাউ, তুমি না থাকলেউ যাইমু । টিপিয়া উপিয়া দিমু । ভাদমাইয়া মাটি
পাইছ তো ঝুরঝুরা, যেতা ইচ্ছা মাতরায় ।
--- অয় হক কতা
মাতলেউ কথা হয় খুটার । হক কথা মাতলেউ মুখ বালা নায় বেটার । যাও, তোমার যেতা ইচ্ছা করো ।
--- হুন না, খালি গুসা কেনে তুমার নাকর আগাত । জমিদার এইন বালা না বাদ
ইতা দিয়া তুমি কিতা করতায় । একটু মিঠা মিঠা কথা কও লাভ অইব । আমি দেখছি তান খুব
ভক্তি । লাল চন্দনর টিকা লাগাইন, আই বিষরির পা না ছইয়া বার অইন না
। অত বড় মন্দির দেখাশুনার কেউ নাই । এক বাবনে আইয়া পূজা করি যাইন, পয়সা পাইন মাস গেলে । আমিও তো বাবনর পুড়ি
দেখাশুনা করতাম পারি । লেপলাম পুছলাম পূজার সামগ্রী সাজাই দিলাম । পয়সা আইব ।
--- কিন্তু যেদিন জানব তুমি কৈবর্তর বৌ ।
--- জানত নায় ।
--- জানত নায় তো । তে আইজ অউ আরম্ভ করি দেও ।
বাকিখান আমার কাম । কিন্তু এক কথা দিয়ার, মন্দির পর্যন্তউ থাকবায় । ভিতরে ঢুকবায় না ।
--- আইচ্ছা । অখন খালি নয় আনি দুকান থাকি একখান
লক্ষীর ফটো আনি দিও ।
--- কেনে, অতবড় আইর মন্দির থাকতে আবার কেনে ফটো ।
--- কেনে নায় । গৃহদেবতা আর মন্দিরর দেপ্তা এক
অইলা নি ।
দেবীপ্রতিমার সামনে মাথা ঘুরে যাওয়ায়
ভেতরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাবতীকে । বৈভব কখনও দেখেনি শ্মশানপণ্ডিতের মেয়ে, বৈতল পাটনির বিয়ে না করা বৌ । পাকা বাড়ির উঠোন পর্যন্ত পাকা । বৈঠকখানার
ঘরেই কত রকমের আসবাব । মস্তবড় খাটপালঙ্ক, তার উপর জাজিম, তার উপরে ঢাকনা । শুয়ে থেকেই
সুস্থ হয়ে যায় দুর্গাবতী । ঘুরতে-থাকা মাথা স্থির হয় । আবার
অস্থিরও হয় । ভাবে মানুষের জীবন, মানুষের গেরস্থালিও এমন হয় ।
সুস্থ হওয়ার পরও তাই দুর্গাবতী কাজে অকাজে ভিতর বাড়ি যায় । পাকা বেদীর উপর তুলসীতলায় জল
ঢালে, সন্ধ্যার প্রদীপ তৈরি করে দেয় ।
বৈতল দুর্গাবতীর চালচলনে সন্দিহান হয় । বলে,
--- তুমারে কইছলাম ভিতরো যাইতায় না । কেনে গেলায়
।
--- কৈ গেলাম । এমনে কুনু গেছিনি । হিদিন তো মাথা
ঘুরাই পড়ি গেলাম, তুমিও নাই কিতা করতাম । তারা লই
গেল ।
--- তারা কে ।
--- আমি কুনু দেখছিনি । তে সবে কইছইন জমিদার আছলা
।
--- আইচ্ছা, হে তো থাকবউ । হিদিন নায় মাথা ঘুরাইছিল, অখন দেখি রুজঅউ যাইরে ।
--- রাইয়ত হকলে যেতা দিয়া যায় ফলপাকড়, ধানচাউল ইতা তো নিয়া রাখন লাগে । গরিব মাইনষর
ভক্তি আছে, আইরে দেয় ।
--- ভক্তি উক্তি কিচ্ছু নায়, সাপর আর লাঠির ডর ।
--- সাপ নায় বুঝলাম, লাঠি কিতা ।
--- লাঠি অইল ঠেলা । জমিদার বাড়িত না দিয়া
হালুচায় খাইলাইত নি । ডরে, জমিদারর ডরে দিয়া যায় যেতা হয় ।
আমার মাথাত এক বুদ্ধি আইছে । তুমার তো মাজে মাজেউ ফিট অয় নানি । ইবার যখন ফিট অইব
আবার, দেখাইমু ভেল্কি । তুমারে যেতা
কইমু মানি লাইও ।
বৈতলের ভেল্কি কোনদিকে বেরোয় কেউ জানে না ।
বৈতলের সব ছক কষা থাকে । বৈশাখ মাসে গৃহপ্রবেশ-এর দিন বৈতল আর দুর্গাবতীর কর্মস্থল বিভাজিত হয় । দুর্গাবতী
মা মনসার মন্দির সাজায় সারাদিন, জমিদারবাড়ির ভিতরেও আসা যাওয়া
বাড়ে । চায়ের কাপ দিয়ে যায় বৈঠকখানায় । দুর্গাবতীর হাতের তৈরি চা এর সুঘ্রাণ ও
স্বাদে ঘনঘনই কেটলি চাপাতে হয় তাকে । ভোগের রান্নার জন্য লালপাড় নতুন শাড়ির বরাদ্দ
হয় এক জোড়া । শুদ্ধমতে চান করে ঠাকুরঘরের উনুন জ্বালায় দুর্গাবতী । সুনাম কাড়ে
দুর্গা । বৈতল সব দেখে, জমিদার আর বৈতলকে ডাকে না, যে-কোনও
কাজেই এখন বৌ । সকালের জলখাবার পেতে দেরি হলে এখন দুর্গাবতী বলেই ডাকে যমুনা
প্রসাদ বৈঠকখানার আরাম চেয়ারে হেলান দিয়ে । বৈতল রাগে, হিস্ হিস্ শব্দ করে বসে থাকে মহুয়া তলায় । ষে আর কোনও
কাজে লাগে না, সব যখন এখন দুর্গা, দুর্গাবতী নামের নানান প্রয়োগ । বৈশাখের শেষ
দিকে বৈতল দুর্গাবতীকে ডাকে । বলে,
--- দরজা বন্ধ কর । তুফানর ঝাপটায় ঘরো জাবড়া ঢুকি
যার ।
--- বালাউতো লাগের একটু ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা বাতাস ।
পুকইরো মাছেও বুড়বুড়ি দের । দেখ না ।
--- আয় অউ বুড়বুড়ি দেখিয়াউ মনো পড়ল, অউপুকইর পারোউ বেটায় আমার শরীল লইয়া বেততমিজি
মাত মাতছিল । আমি আউয়ার মতো হাসছি । তারে সাপর কামড় থাকি বাচাইছি । অখন হে উপকারির
উপকার ভুলি গেছে ।
--- কিতা করছে ।
--- তুই জানছ নানি কিতা করছে । ঠিক আছে যা জানন
লাগত নায় । খালি একখান কাম করি দিবে আমার । করবে নি ।
--- কও কিতা ।
--- তোর বেটা ইগুরে কইছ ।
--- কে আমার বেটা । আমার বেটা তো আমার সামনে ।
--- ঠিক নি । আইচ্ছা তে তোর জমিদাররে কইছ, আইজ আমার নামে খিচুড়ি ভোগ অইব মন্দিরো ।
--- আত্কা ।
--- আত্কা নায় বেটি । আত্কা !
--- জমিদারে মানতা নায় । তারার মন্দিরর ভুগউগ ইতা
তারার নামেউ হয় । তুমি কে ।
--- তুই তো দেখি বউত্তা জানছ । ঠিক আছে, তে কও তারার নামেউ অইব । লগে লাবড়া । আইজ আমি
পুথি পড়তাম । গাউআলা মানুষও আইবা হুনাত ।
--- অউ কথাউ কইয়ার, আত্কা গরমর মাঝে কেনে ।
--- কেনে কিতা আবার, কইও লখাইর বিয়া অইব আইজ ।
--- তুমি হাচাউ গাইতায় পারো নি ।
--- তুই পারবে নি বেটি ক, যেতা কইলাম ।
ভয়ডর কাকে বলে জানে না বৈতল । গুরু
সৃষ্টিধরের সঙ্গে আসবে বসেছে, দোহারকির কাজ করেছে । আর আসর
পরিচালনার জাদু দেখেছে গুরুজির গলায় । বৈতল একটু রকমফের করে । বৈতল দুর্গাবতীকে
বলে নাকে নথ লাগাতে । তাদের দুজনের সম্পত্তি টিনের ট্রাঙ্কটি বের করে, মালিরভিটার যুবতি কন্যার লাল হলুদের শাড়িটা
বের করে । বলে,
--- কথা রাখবায় নি কও ।
--- কি কথা ।
--- নথটা পিন্দবায় নি । অউ শাড়িত তুমারে দেখছি
বারবার আর পিন্দ না । পিন্দবায় নি । ঘুমটা দিবায় নি । পুরা নায় সিতার উপরে রাখিও, আমি গাইমু আর দেখমু তুমারে ।
--- ঢঙ নি কিতা ।
বৈতলের গানের ঢঙই ভিন্ন । আসরে বসার সঙ্গেই চমক । গণেশ
বন্দনা নেই গুরু বন্দনা নেই মনসা বন্দনা নেই, শুরুতেই লক্ষীধরের মুকুট । তারায় ওঠে বৈতলের গলা যখন গায়,
“ মণি ঝলকরে, জামাইর মুকুটের ম্নি-ঝলকরে ।।”
তারপর আবার নামে সুর, গায়
“কত মণি ঝলকে মুকুটের উপর
কি শোভা হইয়াছে দেখিতে সুন্দর ।।”
তারপর অনেকক্ষণ তানা নানার কালোয়াতি গেয়ে আসর
জমায় বৈতল । তারপর দন্ডবৎ প্রণাম করে মা মনসাকে । সরস্বতীর বন্দনা করে । গায়,
“তুমি কর তোমার গান উপলক্ষ আমি
সকল দেবতা বন্দি পদ্মাকে বন্দি আগে ।’’
তারপর মৎস্য কূর্ম বরাহ নৃসিংহ
বামন পরশুরাম রামচন্দ্র বলভদ্র বুদ্ধ কল্কি অবতার বন্দনা সেরে করে সর্ববন্দনা ।
গায়,
“প্রথমে বন্দির দেবনাথ নিরঞ্জন
দ্বিতীয়ে প্রণমি ব্রহ্মা তারণ
কারণ ।।
তৃতীয়ে বন্দিব বিষ্ণু ত্রিজগৎ-পতি ।
তাঁর দুই ভার্যা বন্দি লক্ষী
সরস্বতী ।।
চতুর্থে বন্দিব শিব গণেশ সহিতে ।
অর্দ্ধ অঙ্গে গৌরী শোভে গঙ্গা
শোভে মাথে ।।
পূর্বেতে বন্দিয়া গাই পূর্ব
দিবাকর ।
যেদিকে উদয় ভানু চৌদিক প্রহর ।।
পশ্চিমে বন্দিয়া গাই ঠাকুর
জগন্নাথ
প্রসাদ বলিয়া যার বাজারে বিকায়
ভাত ।
উত্তরে বন্দিয়া গাই উত্তর
তীর্থস্থান ।
ত্রিদেশের দেবগণ যাকে করে ধ্যান
।।
দক্ষিণে বন্দিয়া গাই কালীদয় সাগর
।
চান্দের চৌদ্দ ডিঙ্গা যাতে হইল
তল ।।
তল হইল চৌদ্দ ডিঙ্গা বাদের কারণ
।
সেই হতে মনসার পূজা মঞ্চয় ভুবন
।।
বন্দি হরনন্দিনী অষ্টনাগের আইগো
।
তোমার চরণ বিনে আর গতি নাই গো ।।”
বৈতল সমবেত মহিলাদের বলে উলুধ্বনি দিতে । বলে,
--- জোকর দেইন ।
‘সমাপন হইল আজি অধিবাস কীর্তন ।’ তখন আপনারা লখাইর চউখ দিয়া দেখইন বিপুলারে,
‘বেহুলা দেখি রূপবতী লখাই
সানন্দিত অতি,
বিপুলারে চাইল কটাক্ষিয়া ।’
ভাবে বিভোর হয় বৈতল । দেখে তার বিপুলা সুন্দরীর
নাকে নথ আর গায়,
‘মুকুতা জরাউট, বেশর নাকে,
ঠেক চাকি দিয়াছে কর্ণে ।।’
অতিপরিচিত দুর্গাবতীর গায়ের
কুমারী শাড়ি দেখে দেখে গায়,
‘লালনা শাড়ি, সোনার কিনারি,
কোমরে তুলিয়া পরে ।
সোনার উড়ুনা দিয়াছে গায়,
ঝিলমিল ঝিলমিল করে ।।’
কখনও বেহুলা কখনও লখাই এর সাজ ও
রূপবর্ণনায় মাতে বৈতল । গায়,
‘বিপুলারে সাজ করে সখিগণ মিলে ।
বিবাহ মঙ্গল গীত গায় কুতূহলে ।।
যতনে বান্ধিয়া দিল করিয়া যতন ।।’
জমে গেছে, বৈতলের অপূর্ব কেরামতিতে বিবাহ উৎসব জমে যায় । আর মাঝে
মধ্যেই আসর কাঁপিয়ে বোল তোলে,
‘জয় মা মনসার জয় ।’
হঠাৎ বৈতল আসরের ঐ দূরকোনে দুহাত
তুলে কাকে যেন দেখে । আসলে যে তখন লখাইকে দেখছে গানে,
‘আরে, ও তোরা দেখবি যদি আয়
নূতন সড়ক দিয়া ছাওয়াল জামাই যায় ।।’
হাতেখড়িতেই বাজিমাত করে বৈতল । ধন্য ধন্য করে
সবাই । জমিদার যমুনা সিং পর্যন্ত মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনেছে বৈতলের কীর্তন । একক
গানের ভিতর তার বিভিন্ন চরিত্রের অভিনয় দেখে অবাক হয় । আসর শেষে দশ টাকার নোট একটা
দেয় । বলে,
--- ইবার শ্রাবণীত চান্দোয়া টাঙাই দিমু । পুরা পুথি পড়বায় রেবা তুমি ।
পুরা শ্রাবণ মাস তুমার ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন