“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বুধবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৮

স্বাধীনতা

।। সুপ্রদীপ দত্তরায়।। 









তকাল মেয়ে প্রশ্ন করলে
বাবা স্বাধীনতা কী ?
আমি থমকে ভাবি, সত্যি তো , 
স্বাধীনতা কারে কয় ।
স্বাধীনতা মানে কি মুক্তি,
অপশাসনের অবলুপ্তি 
নাকি ভয়টাকে জয়।
স্বাধীনতা মানে কি সম্মানে বাঁচা 
নির্ভয়ে চলা, খোলা মনে বলা,
সার্বিক উন্নতি, নাকি সংঘবদ্ধ দুর্নীতি ।
মানবিকতার অবক্ষয়।
স্বাধীনতা আসলে আমার কাছে 
হেমন্তের বিকেলে একমুঠো দখিনা বাতাস 
শরতে ভোরের শিশির, সারি সারি কাশ
প্রচণ্ড গরমে একপশলা বৃষ্টি 
রিক্সাওয়ালার আত্মতুষ্টি  
আর ভিখারিটির প্রত্যয় ও বিশ্বাস ।
স্বাধীনতা আমার কাছে
লাল মেঠো পথে রাখালিয়া বাঁশি ।
অসময়ে তোমার ফোন কল,
প্রজাপতির মুক্ত ডানা , ভোরের স্বপ্ন 
নোংরা শিশুটার স্বর্গীয় হাসি,
আর বসের সাবাসি ।
স্বাধীনতা আমার কাছে 
সকালের প্রভাতফেরি, মাঠে কুচকাওয়াজ 
পথে ঘাটে দোকানে "সারে যাঁহা সে" আচ্ছা গান
জেলে, হাসপাতালে ফল বিতরণ 
তাও রোগীর প্রয়োজন বা ডাক্তারের পরামর্শে নয় 
সবটাই দাতার সৌখিনতায়।
স্বাধীনতার সুস্পষ্ট ছবি 
বড়লোকের হাসি আর বদান্যতায় ।
স্বাধীনতা আমার প্রথম প্রেম।
চায়ের দোকানে কাজ করা ছেলেটির
প্রথম মাইনে। দেশ পত্রিকার উপন্যাস, 
পরকীয়ায় প্রথম রাত্রিবাস । আর ---
আর, বাঙালির জন্য  দুঃসময়ের শুরু 
দাঙ্গা, দেশভাগ, শরণার্থী ---
মনে মনে সুকুমার - মমতাজ ।
স্বাধীনতা আসলে আমার কাছে 
যাত্রা পালার সাজ।
সবটাই রঙ্গ, পালাওয়ালার কাজ ।


কোন মন্তব্য নেই: