“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ১২ মার্চ, ২০১৯

আমার মা খুব অসুস্থ

।। অভীককুমার দে।।











মার মা খুব অসুস্থ, 
এক সময় ভালো হাঁটতে পারতেন,
 
দৌড়ে এসে ডাকতে পারতেন--
নিতু কইরে?
আমি বলতাম--
এই তো, রক্ত পলাশ টোয়াই। হুইনছি--
রক্ত পলাশে বলে ভঅরা রক্ত !
 
কই? রক্ত ত নাই!
 
হুলের ভি
ত্রে কেবল ইগ্যা বাঁশি
বাজাইলে চিঁ চিঁ বাজে।
 
মা চেঁচিয়ে বলতেন--
টোঅন লাইগদো ন,
 
টোয়াইলে হাইতি ন,
 
এরুম বসন্তে কদুগুন বদমাইশ
হেদিন বেক রক্ত চুই খাইছে,
 
অন পলাশের কাছে কেবল রঙ আর গপ্পি দালাল।
 
রক্ত দেখি কিয়া কইরবি?
বাদ দে, এদিকে আয়,
চল্, তোর দাদুর বাড়িত যামু।
দাদুর বাড়িত! চল চল...
 
দুই রকম দুই মাইল রাস্তা...
 
মা আমাকে সাথে নিয়ে যেতেন জন্ম স্থলের দিকে।
আজ আমরা মা খুব অসুস্থ, 
তাঁর বাবার বাড়ি থেকে আমার বাবার বাড়িতে এসে
মিশ্রণে দ্রবীভূত হতে হতে নিস্তেজ প্রায়,
 
রোজ হাঁড়ে ব্যথা
অপ্রয়োজনীয় জল এসে ফোলা পা
ভালো হাঁটতে পারেন না।
আমিও বড় হয়ে গেছি
দাদুর বাড়ি যাবার কথাও মনে পড়ে না
মাকেও আর বলতে শুনি না--
নিতু কইরে?
রক্ত পলাশে রক্ত টোয়াইস না,
 
এদিকে আয়। চল্, তোর দাদুর বাড়িত যামু।
এখনও বসন্ত আসে বছর বছর
আমিও অনেক বসন্ত পেরিয়ে এড়িয়ে চলি সেই সব।
 
এসময় সুখী পাখিরা আসে পলাশের ডালে,
 
ফুলে ফুলে ওড়ে,
 
গান গায়,
 
রক্ত পলাশের লাল ওদের কাছে শুধুই রঙ
রঙিন হবার সুন্দর উপকরণ।


কোন মন্তব্য নেই: