“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৮

বাজার


 ।। সুপ্রদীপ দত্তরায় ।।













বাজার বাজার বাজার
বিশ্বায়নের বাজার
বিশ্বায়নের বাজারেতে
রসদ হাজার হাজার
পড়ার বই লেখার কলম
কিংবা আছে দাদের মলম
টেবিল চেয়ার দাঁতের মাজন
হকি স্টিক আর গরুর পাজন
বেলুন রুটি পীজার মজা
হুকুম দিলে আসছে সোজা
চাই কি তোমার আচার
তারও আছে বাজার
বিশ্বায়নের বাজার রে ভাই
বিশ্বায়নের বাজার ।
বিশ্বায়নের বাজারেতে
ভোজবাজিরই খেলা
চড়ছে পারদ নারদ নারদ
জীবন নাগর দোলা
যেথায় যত পাটের দড়ি
বিকছে তারাও কাড়ি কাড়ি
ভাঙা লোহা ঝাড়ু কুলা
চাই কি সোনা কিংবা তুলা
মাথার তেল গরম জামা
ঠোঁটের কালি আর পাজামা
সেপ্টিপিন আর আলপিনেতে
বাজার চমৎকার
রঙ মেখেছে রঙবাজেরা
সবাই আড়ৎদার ।

বিকছে গাড়ি, বিকছে বাড়ি
বিকছে পুরুষ বিকছে নারী
বিকছে শিষ্য বিকছে গুরু
বিকছে শিশু হাজার গরু
বিকছে নূপুর বিকছে টুপুর
বিকছে সোহাগ অম্লমধুর
যেথায় যত মোল্লা , মুনি
জলের দরে বিকছে জানি
শ্রমিক নেতা বাবুর দল
হাঁকছে বুলি অনর্গল
বলছে আমি পণ্য এখন
চড়াও বুলি মাদারী দল
বিশ্বায়নের বাজারেতে
বেজায় গন্ডগোল
কার আগে কে বিকতে পারে
তারই হুলুস্থুল ।

ঝর্ণা নদী মুক্ত আকাশ
কিনতে পারেন খোলা বাতাস
চাই যদি চান একটু শ্বাস
নাহয় উঠলো নাভিশ্বাস
বাজার ঘুরলে পাবার আশা
দিলাম আমি সে আশ্বাস
ভালবাসা কাকের বাসা
বাজার দাম পাচ্ছে না যে
সুখের সাথে জুড়ে দিলেও
এখন কেউ আর নিচ্ছে না হে
বিকছে ন্যায় বিকছে নাম
বিকছে রাজার গোলকধাম
বিকছে কলা শিল্পীগুলা
বিকছে যেন জলের দাম
বিকছে লজ্জা সোহাগ শয্যা
বিকছে বিচার নির্বিচার
বিকছে শিক্ষা ভয় ভিক্ষা
ন্যায় নীতি ব্যভিচার
বিকছে বিদ্যা মেধা ক্ষুধা
বুদ্ধিজীবীর কলম সার
বিশ্বায়নের বাজারেতে
নতুন এই আবিষ্কার।

তথাপি এই বিশ্বায়নের বাজারে
হে বন্ধু, রুদ্র কান্ডারী
তুমি ভয় পাও না জানি
তোমার জন্য আগলে রেখেছি
আমার বিবেক খানি ।


কোন মন্তব্য নেই: