“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

ডোপিং-এর স্বপক্ষে !!




(C)Image:ছবি
 ।। শিবানী ভট্টাচার্য দে।।

        মাঝে মাঝেই খবরে আসে, ক্রীড়াঙ্গন থেকে ডোপিং-এর জন্য কোন কোন  খেলোয়াড়কে বহিষ্কার করা হয়েছে । কেউ কিছু সময়ের জন্য, কেউ বা চিরতরে ।

        সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়টি   নিজেদের পারফরম্যান্স বাড়ানোর জন্য, জ্ঞানত: অথবা অজান্তে, কোচের ইচ্ছায় অথবা নিজের ইচ্ছায় বিশেষ কিছু  ওষুধ খায় । ধরা পড়লে প্রবল অসম্মান, মেডেল প্রাইজমানি কেড়ে নেওয়া হয়র‍্যাঙ্কিং পড়ে যায়, খেলার জগতের দরজা তার মুখের উপর বন্ধ হয়ে যায় ।

         খেলাধুলোর জগত সম্পর্কে আমি খুবই অজ্ঞ ।  টিভিতে কোন এক অলিম্পিকের আসরে দৌড়বাজ বেন জনসনকে ডোপিং-এর জন্য বহিষ্কৃত হতে দেখে এসব বিষয়ে প্রথম জ্ঞানগম্যি হয়েছিল ।

          এখন আমার ধারণা হচ্ছে, দেখতে গেলে, খেলাধুলো ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রেও কি আর এটা নেই ? মানে পারফরম্যান্স বাড়ানোর ওষুধ খাওয়া ? কেন, কমলাকান্ত আফিম খেয়ে তার দফতর লেখে নি ? কিংবা ডি কুয়েন্সি যখন 'কনফেশন অব অ্যান ইংলিশপিয়াম ইটার' লিখেছিলেন ? কমলাকান্ত নাহয় কাল্পনিক চরিত্র, বঙ্কিম কখনো আফিম খেতেন বলে শোনা যায়নি, কিন্তু ডি কুয়েন্সি তো পাক্কা আফিমখোর ছিলেন ।

           আর সেই বিখ্যাত রোম্যান্টিক কবি কোলরিজ ? আফিমের নেশার ঘোরে গোটা একখানা কবিতা পেয়ে গেলেন ! সেটা লিখতে লিখতে শেষের কাছাকাছি পৌঁছেছেন, অমনি দরজায় খট খট । ব্যস, ঘোর গেল ভেঙ্গে, কবিতা আর শেষ হল না । কিন্তু সেই অর্ধসমাপ্ত কবিতা, 'কুবলা  খান' এ কবির মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে কত সমালোচক এখনও নিজেদের মগজ ঘেঁটে ওলট পালট করছেন ।

            কোলরিজের গল্পটা শুনে আমার এক বন্ধু হাসতে হাসতে বলেছিল, তোমাদের কবি তো তা হলে একজন ডোপার । ডোপিং করে কবিতা লিখেছেন, দুনিয়া ধন্য ধন্য করছে । সে যুগে নোবেল প্রাইজ ছিল না, নাহলে কিজানি উনি আফিমের নেশায় কবিতা লিখে নোবেল প্রাইজ ও পেয়ে যেতে পারতেন ।

         আর আমাদের  অনেক সাধু সন্ন্যাসী? গাঁজা খেতে খেতে তুরীয়ানন্দে পৌছে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে পৌছে যান শোনা যায় । ডোপ করা ঈশ্বরদর্শন, নেশার মায়া ?

         কিংবা ধরুনসিগারেট টেনে নিয়ে বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া দিয়ে যে সমস্ত পুলিশ অফিসার অপরাধী ধরার হদিশ খুঁজে পান ? গোয়েন্দা ফেলুদার কথা মনে করুন, তার আঙ্গুলে ধরা চারমিনার, শারলক হোমসের মুখে পাইপ    অনেক ডাক্তার কঠিন অপারেশন করবার আগে সিগারেট খেয়ে নিজেকে ঝরঝরে রাখেন না ?

        আমার মনে হচ্ছে, বুদ্ধি বাড়ানোর এসব কৌশল ও ছোট খাটো ডোপ ।

          এবারে  জনান্তিকে বলে রাখি, কদিন ধরে 'খুশখুশে কাসি ঘুষঘুষে জ্বর' হওয়াতে আমি একদিকে অ্যান্টি- অ্যালার্জি   অন্যদিকে কাশির ওষুধ খেয়ে ঘোরলাগা মাথায় এইসব লিখছি । ডোপিং? হতেও পারে, অপরাধ নেবেন না ।








কোন মন্তব্য নেই: