(C)Image:ছবি |
।। শিবানী ভট্টাচার্য দে।।
মাঝে মাঝেই খবরে আসে, ক্রীড়াঙ্গন থেকে
ডোপিং-এর জন্য কোন কোন খেলোয়াড়কে বহিষ্কার করা হয়েছে । কেউ কিছু সময়ের জন্য,
কেউ বা চিরতরে ।
সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়টি
নিজেদের
পারফরম্যান্স বাড়ানোর জন্য, জ্ঞানত: অথবা অজান্তে, কোচের ইচ্ছায় অথবা নিজের ইচ্ছায়
বিশেষ কিছু ওষুধ খায় । ধরা পড়লে
প্রবল অসম্মান, মেডেল প্রাইজমানি কেড়ে নেওয়া হয়, র্যাঙ্কিং পড়ে যায়, খেলার জগতের দরজা তার মুখের উপর বন্ধ হয়ে যায় ।
খেলাধুলোর জগত সম্পর্কে আমি খুবই অজ্ঞ । টিভিতে কোন এক অলিম্পিকের আসরে দৌড়বাজ বেন জনসনকে ডোপিং-এর জন্য বহিষ্কৃত হতে দেখে এসব বিষয়ে প্রথম জ্ঞানগম্যি হয়েছিল ।
এখন আমার ধারণা হচ্ছে,
দেখতে গেলে,
খেলাধুলো ছাড়া
অন্যান্য ক্ষেত্রেও কি আর এটা নেই ? মানে পারফরম্যান্স বাড়ানোর ওষুধ খাওয়া ?
কেন, কমলাকান্ত আফিম খেয়ে তার দফতর লেখে নি ? কিংবা ডি কুয়েন্সি যখন 'কনফেশন অব অ্যান ইংলিশ ওপিয়াম ইটার'
লিখেছিলেন ?
কমলাকান্ত নাহয়
কাল্পনিক চরিত্র, বঙ্কিম কখনো আফিম খেতেন বলে শোনা যায়নি, কিন্তু ডি কুয়েন্সি তো পাক্কা আফিমখোর
ছিলেন ।
আর সেই বিখ্যাত রোম্যান্টিক
কবি কোলরিজ ? আফিমের নেশার ঘোরে গোটা একখানা কবিতা পেয়ে গেলেন ! সেটা লিখতে লিখতে শেষের
কাছাকাছি পৌঁছেছেন, অমনি দরজায় খট খট । ব্যস, ঘোর গেল ভেঙ্গে, কবিতা আর শেষ হল না । কিন্তু সেই অর্ধসমাপ্ত কবিতা, 'কুবলা খান' এ কবির মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে
কত সমালোচক এখনও নিজেদের মগজ ঘেঁটে ওলট পালট করছেন ।
কোলরিজের গল্পটা শুনে আমার এক বন্ধু হাসতে হাসতে বলেছিল, তোমাদের কবি তো তা হলে একজন ডোপার । ডোপিং করে কবিতা লিখেছেন, দুনিয়া ধন্য ধন্য করছে । সে যুগে নোবেল প্রাইজ ছিল না, নাহলে কিজানি উনি আফিমের নেশায় কবিতা লিখে নোবেল প্রাইজ ও পেয়ে যেতে পারতেন ।
আর আমাদের অনেক সাধু
সন্ন্যাসী? গাঁজা খেতে খেতে তুরীয়ানন্দে পৌছে ঈশ্বরের সান্নিধ্যে পৌছে যান
শোনা যায় । ডোপ করা ঈশ্বরদর্শন, নেশার মায়া ?
কিংবা ধরুন, সিগারেট টেনে নিয়ে বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া দিয়ে যে সমস্ত
পুলিশ অফিসার অপরাধী ধরার হদিশ খুঁজে পান ? গোয়েন্দা ফেলুদার কথা মনে করুন, তার আঙ্গুলে ধরা চারমিনার,
শারলক হোমসের মুখে
পাইপ । অনেক ডাক্তার কঠিন অপারেশন করবার আগে সিগারেট খেয়ে নিজেকে ঝরঝরে রাখেন না ?
আমার মনে হচ্ছে, বুদ্ধি বাড়ানোর এসব কৌশল ও ছোট খাটো ডোপ
।
এবারে জনান্তিকে বলে রাখি, কদিন ধরে 'খুশখুশে কাসি
ঘুষঘুষে জ্বর' হওয়াতে আমি একদিকে অ্যান্টি- অ্যালার্জি ও অন্যদিকে কাশির ওষুধ খেয়ে ঘোরলাগা মাথায় এইসব লিখছি । ডোপিং? হতেও পারে, অপরাধ নেবেন না ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন