(কিছু কিছু কবি ইচ্ছে করলেই নিজেরা লিখতে পারেন, লিখবেন না আলস্যবশত। তা না লিখুন, কিন্তু আমাদেরতো ক্ষতি হয়ে যায়। এই কবিতাটা এরকমই একটি। পূর্বোত্তরীয় কবি মানসের ইস্তাহার বললে কি ভুল বলা হয়? না পড়ালে কি আমাদেরই ক্ষতি নয়! তাই তুলে দেয়া, আশা করছি এরপর কবিকে সক্রিয় হতে গণ দাবী উঠবে।)
।।সঞ্জয়চক্রবর্তী ।। |
১
গঙ্গাপারের ছেলে, তোমার চিঠি এল উড়ে
লিখেছ, ভালো আছ, খুব গান শুনছ আজকাল;
রবীন্দ্র-দ্বীজেন্দ্র-অতুল-নজরুল।
আমার ঘরেও চুপে বাজেন, যখন করি ভুল।
তোমার আছে উৎসবের অজয়-ইন্দ্রাণী
আমার কোনো গান নেই, তোমার গানই শুনি।
২
গঙ্গাপারের ছেলে, তোমার মতো আমিও
বাংলায় খাই, বাংলায় শুই, বাংলায় কাঁদি, বাংলায় হাসি।
স্বপ্ন দেখা—সেও বাংলায়, বাংলায় ভালোবাসাবাসি।
তফাত শুধু এইটুকু—
তুমি বুক ফুলিয়ে পাড়ায় পাড়ায়, ট্রামে-বাসের ভিড়ে
আমি একা বিষণ্ণ এক ঘরে।
৩
মিলিদি প্রায়ই বলে ফোনে,
বল, ঠিক কোন কারণে, তুই পড়ে আছিস ওখানে।
গড়িমসি ছাড়, এক্ষুণি উড়ে চলে আয়
আমাদের কোলকাতায়।
হাসবি, নাচবি, গাইবি, কাঁদবি,
এমন কি মরবিও বাংলায়।
৪
ডাকলেই কি যাওয়া যায়, মিলিদি বলো...
আমারও তো ইচ্ছে করে পাখি হতে, শিস দিতে,
আমারও ইচ্ছে করে ঘর থেকে বাহির হতে
যতই তুমি ডাকো, ডাকলেই যাওয়া যায়...
৫
গঙ্গাপারের পথিক, বলতে পারো সঠিক
কোথায় আমার সাকিন!
৬
চিত্ত কোথায় ভয়শূন্য, উচ্চ কোথায় শির,
কোন ভুবনে থাকব বলো হয়ে সুস্থির।
৭
যদি এরকম হতো, আমার নিজের মতো
গুছিয়ে নেয়া যেত রাজ্যপাট
তাহলে দুয়ারে দুয়ারে আর মাথাকোটা কেন,
বালাই ষাট
৮
মিলিদি, গঙ্গাপারের ছেলে, শোন
গাঢ় সিঁদুরের ভিতর গভীর বাতাসের ধ্বনি
চিরকাল বাজাবে তার অমোঘ খঞ্জনি
একা নির্জন ঘরে বিষণ্ণ একা থাকা ভালো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন