“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৪

চিঠি


(C)Image:ছবি






















।। সৌম্য শর্মা ।।

কেমন আছো, নাজনীন?
তোমার শেষ চিঠি পেয়েছি
তা আজ  অনেকদিন!
ভেবেছিলাম, বুড়িয়ে গেছো
হাতের লিখা তো এখনও স্পষ্ট
ঝক্ঝক্, সুন্দর,  অমলীন!

আমার কথা? আর বলো না
বেঁচে আছি, এই আর কি!
শরীরে গভীর  ক্ষতো
বিষাক্ত  হাওয়ায় শ্বাস নিতে পারি না ;
হৃদয়ের  গোপন ক্ষত থেকে,
এখনও  স্মৃতির রক্ত বেরোয় ৷

কাগজ নিয়েও বসি না আজকাল
কতো কী যে ছাপা হয়!
চুরি, ছিনতাই,  সন্ত্রাস, দলবদল
ভালো লাগার কথা নয় নিশ্চয় ?
কোথাও যেন কান্নার শব্দ পাচ্ছি!
দাঁড়াও, দেখে আসছি……

এক পূর্ণ যুবতী, স্বপ্ন ভেঙ্গে
আত্মহত্যা  করেছে!
এইতো সেদিন,
পাশের বাড়ির বউটা, মারা গেলো
না না অসুখে নয়, পণ দেয় নি _ তাই!

কদিন আগে, পার্টি বোমায়
পাঁচটি লাশ পরে গেলো পাড়ায়
সতেজ তরুণ সবাই…
ওদের আত্মার  পোড়া গন্ধও
যেন আমরা কেউ পাই নাই !!

তাপনিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে,
নিশ্চিন্তে কফির কাপে চুমুক দিই…
পেয়ালায় তুফান তুলি, চোখ তোলে দেখি
বিজ্ঞাপিত  রমণীর উদোম নাভি !!

দিনের পর দিন, ঋণের বোঝা বেড়ে যায়
কতো সব চিন্তায়, মাথা নত হয়……

যা হোক, তোমার কথা বলো
তোমার সুখী সংসার, ছেলে- মেয়ে
কতো বড় হ লো?

জানো, তোমার লাগানো ফুল গাছটা
বেঁচে গেছে, গোলাপের ঐ চারাটাও
ক্যাকটাস ও রেখেছি কয়েকটা
তাতেও ফুল ফোটবে দেখো!

আজ সকাল থেকেই দিনটা কেমন যেন
মাথাটা ধরেছে খুব, জ্বর আসে ঘন ঘন,
পুরোনো কাশি টা ছাড়েনি  এখনো
আর, লিখছি না,
লক্ষীটি, রাগ করো না
আমাকে লিখো কিন্তু……

সবকিছু এখানে ভালো হয়ে উঠুক,
তখন নাহয়, লিখবো… …
চিন্তা করোনা, শীঘ্রই ভালো হয়ে উঠবো !!


কোন মন্তব্য নেই: