(দক্ষিণ আফ্রিকীয় লেখক জে এম কোয়েটজি-র
লেখা 'এজ অব আয়রন'- উপন্যাসের বাংলা অনুবাদের অষ্টম ভাগঃ -- শিবানী দে )
আমি
ভাবলাম, লোহার ছেলেমেয়ে ! ফ্লোরেন্স নিজেও কি কিছুটা
লোহার মানুষ নয় ? এখন যুগই হল লোহার । তারপর আসবে ব্রোঞ্জ যুগ?
কত যুগ, কত যুগ ধরে এই শক্ত যুগ পেরিয়ে নরম যুগ,
কাদামাটির যুগ, পৃথিবীর প্রথম বয়সের যুগ ফিরে আসবে ?
ফ্লোরেন্স হল স্পার্টার* নারীদের মত, লৌহহৃদয়,
জাতির জন্য যোদ্ধাপুত্রের জন্মদাত্রী । তাই সে বলছে, 'আমরা
এই সব ছেলের জন্য গর্বিত ।' আমরা ! যোদ্ধা ছেলেরা, তোমরা
হয় তোমাদের যুদ্ধের ঢাল নিয়ে, কিংবা ঢালের উপর শুয়ে বাড়ি ফিরবে ।
আর আমি ? এই
সবের মধ্যে আমার হৃদয় কোথায় ? আমার একমাত্র সন্তান হাজার মাইল দূরে
নিরাপদে আছে । শিগগিরই আমি ধোঁয়া এবং ছাইয়ে পরিণত হব । এই সময়ে, এই
যুগে, যখন শৈশব ঘৃণিত, শিশুদের
হাসতে কাঁদতেও নিষেধ, শেখানো
হচ্ছে শুধু হাতুড়ির মত করে মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে তুলতে, এই
সময় এলে আমার কিই বা এসে যায় ? এই সময়টা কি কালস্রোতেরও বাইরের কাল,
পৃথিবীর ভেতর থেকে ফুঁড়ে ওঠা, প্রমাদজাত, দানবিক
? কিসে জন্ম হল এই লোহার যুগের,যদি এর আগের
গ্রানাইট যুগের দ্বারা নয় ? এদেশে আগেও কি প্রজন্মের পর প্রজন্ম
ফুরট্রেকাররা** ছিল না, যাদের
ছেলেমেয়েরা গম্ভীরমুখ, ওষ্ঠবদ্ধ আফ্রিকানার ছেলেমেয়ে, তারা
মার্চ করত, দেশপ্রেমের গান করত, পতাকা
অভিবাদন করত, শপথ করত পিতৃভূমির রক্ষার্থে প্রাণত্যাগ করতে
প্রস্তুত হবার ? এখনও কি শ্বেতাঙ্গ যুদ্ধবাজরা জুতোর ফিতেও
বাঁধতে না পারা বাচ্চাদের সেই পুরোনো ঔপনিবেশিক সরকারের নিয়মানুবর্তিতা, কাজ,
আজ্ঞানুবর্তিতা, আত্মোৎসর্গের আদর্শ, মৃত্যুর
আদর্শ প্রচার করছে না ? প্রথম থেকে শেষ অবধি এ কী দুঃস্বপ্ন !
জেনিভার ভুত আফ্রিকায় জয়োল্লাস করছে । কালো পোশাক পরা ক্যালভিন***, তরলরক্ত
সদা শীতল ক্যালভিন পরলোকে তাঁর তাঁর বরফ
হাসি হেসে হাত ঘষছেন । ক্যালভিন এখন বিজয়ী, দুই
সামরিক দলের স্বমতগর্বী এবং ডাইনিসন্ধানী লোকেদের মধ্যে পুনর্জন্ম নিয়েছেন । তুমি
সৌভাগ্যবতী যে এই সব কিছু পেছনে ফেলে চলে গেছ ।
ভেকির বন্ধু ছেলেটা একটা আকাশীনীল টায়ারওলা লাল
বাইসাইকেল চড়ে এল ।গত রাতে যখন আমি শুতে যাই, তখন
বাইসাইকেলটা উঠোনেই ছিল, চাঁদের আলোয় চকচক করছিল । সকাল সাতটায়
যখন আমি জানালা দিয়ে তাকালাম, তখনো সেটা ওখানেই ছিল । আমি সকালের
ওষুধগুলো খেয়ে আরো এক ঘণ্টা ঘুমোলাম ।
স্বপ্ন দেখলাম যে আমি ভিড়ে আটকে পড়েছি । কারা যেন আমাকে ধাক্কা দিচ্ছে, মারছে,
গালি দিচ্ছে যেসব শব্দে, তা ঠিক বুঝতে না
পারলেও নোংরা এবং ভয়ধরানো । আমিও মারতে হাত তুলেছি, কিন্তু
আমার হাতগুলো যেন শিশুর হাত । আমার আঘাতগুলো 'ফু'
'ফু' শব্দে হাওয়াতে মিলিয়ে যাচ্ছে ।
আমি ফ্লোরেন্স ও আর কারো উঁচু গলার আওয়াজে জেগে
ওঠলাম । বেল বাজালাম, একবার, দুবার, তিনবার----শেষ
পর্যন্ত ফ্লোরেন্স এল ।
'কেউ কি দরজায় এসেছে, ফ্লোরেন্স
?'
ফ্লোরেন্স মেঝে থেকে লেপটা তুলল, ভাঁজ
করে বিছানার পায়ের দিকে রাখল । বলল, 'কেউ না ।'
'তোমার ছেলের বন্ধু কি রাত্রে এখানেই
ছিল ?'
'হ্যাঁ । অন্ধকারে সে তো আর সাইকেল
চালিয়ে যেতে পারে না । এতে খুব বিপদের সম্ভাবনা ।'
'কোথায় শুল সে ?'
ফ্লোরেন্স নিজেকে একটু গুছিয়ে নিল । বলল,
'গ্যারেজে । সে ও ভেকি গ্যারেজে শুয়েছিল ।'
'কিন্তু গ্যারেজে ওরা ঢুকল কি করে ?'
'ওরা জানালা খুলেছিল ।'
'এরকম কাজ করবার আগে তারা আমাকে একবার জিগ্যেস
করতে পারে নি ?'
ফ্লোরেন্স চুপ করে ট্রে তুলল ।
'এই ছেলেটাও কি এখানে থাকবে, আমার
গ্যারেজে ? ওরা কি আমার গাড়ির ভেতর ঘুমোচ্ছে, ফ্লোরেন্স?'
ফ্লোরেন্স মাথা নাড়ল । 'আমি
জানি না । আপনি নিজেই ওদের শুধোন ।'
দুপুরবেলা পর্যন্ত সাইকেলটা ওখানেই রইল । কিন্তু ছেলে দুটোকে দেখা গেল না । কিন্তু আমি
যখন চিঠির বাক্স দেখতে গেলাম, রাস্তার অন্য প্রান্তে একটা পুলিশ
ভ্যান দেখতে পেলাম,তাতে দুজন উর্দিপরা পুলিশ, কাছের
দিকের জন কাচের জানালায় গাল ঠেস দিয়ে ঘুমোচ্ছে ।
চালক লোকটাকে আমি ইশারায় ডাকলাম । ইঞ্জিন চালু
হল, ঘুমন্ত লোকটাও জেগে উঠল, ভ্যান ফুটপাথের
দিকে একটু উঠে ইউ টার্ন নিল, আমার কাছে এসে থামল ।
আমি ভেবেছিলাম ওরা নামবে, কিন্তু
ওরা নামল না , বরং চুপচাপ বসে আমার কথাবলার অপেক্ষা করতে লাগল
। একটা ঠাণ্ডা উত্তর-পশ্চিমা বাতাস বইছিল, আমি আমার পরনের ড্রেসিং-গাউনের গলা হাতে এঁটে ধরলাম
। ভ্যানের রেডিওতে শব্দ শোনা গেল,-----একটি নারীকণ্ঠের
কথা, নীল উর্দিপরা লোকদুটো মনোযোগ দিল না ।
আমি বললাম, 'আমি
কি কোনো সাহায্য করতে পারি ? আপনারা কি কারো অপেক্ষা করছেন ?'
'আমাদের সাহায্য করবেন ? জানি
না, ভদ্রমহিলা, আপনিই বলুন আপনি কি সাহায্য করবেন ।'
আমার মনে পড়ল, আমাদের
সময়ে পুলিশের লোকেরা মহিলাদের সঙ্গে সম্ভ্রমপূর্ণভাবে কথা বলত । আমাদের সময়ে
ছেলেরা স্কুলে আগুন লাগাত না । 'আমাদের সময়ে' এই
বাক্যবন্ধটা এখন শুধু খবরের কাগজের সম্পাদকের কাছে চিঠি লিখতে ব্যবহার হয়, যখন
বয়স্ক পুরুষ মহিলা রাগে কাঁপতে কাঁপতে হাতের শেষ অস্ত্র হিসেবে কলম ব্যবহার করে । 'আমার
সময়' এখন শেষ ; আমার জীবন এখন অতীত ।
'তোমরা যদি ওই ছেলেদের খোঁজে এসে থাক,
তাহলে যেন আমার অনুমতি নিয়ে ঢুকবে ।'
'কোন ছেলেরা, ভদ্রমহিলা
?'
'সেই ছেলেরা যারা এখানে বেড়াতে এসেছে ।
গুগুলেতু থেকে, স্কুলের ছাত্র ।'
আবার রেডিও থেকে জোরে আওয়াজ হল ।
'না, ভদ্রমহিলা
। গুগুলেতুর কোন ছেলের সম্বন্ধে কিছু জানি না । তুমি কি চাও আমরা ওদের খুঁজি ?'
ওরা দুজন চোখ চাওয়াচাওয়ি করল । ওদের দৃষ্টি
দেখে মনে হল ওরা মজা পেয়েছে , আমি গেটের পাল্লা ধরে নিজেকে সামলালাম
। গায়ের ড্রেসিং গাউনের ফাঁক দিয়ে ঠান্ডা বাতাস আমার গলা বুকে লাগল, শীত
লাগছিল । আমি কাটা কাটা উচ্চারণে সেই পুরোনো, বহুব্যবহারে
অর্থহীন বাক্যাংশ দিয়ে শুরু করে বললাম, 'আমার সময়ে
পুলিশের লোক কোনও মহিলার সঙ্গে এভাবে কথা বলত না ।' আমি
পেছন ফিরে চললাম ।
রেডিওটা তোতাপাখির মত গ্যাক গ্যাক শব্দ করতে
লাগল,অথবা তারা নিজেরাই ইচ্ছে করে শব্দ করাতে লাগল, আমি
আর ফিরে দেখলাম না । একঘণ্টা পরেও হলুদ ভ্যানটা গেটের বাইরে দাঁড়িয়েছিল ।
'আমার নিশ্চিত মনে হচ্ছে, এই
অন্য ছেলেটাকে তুমি বাড়ি পাঠিয়ে দিলে ঠিক হবে,' আমি
ফ্লোরেন্সকে বললাম । 'সে তোমার ছেলেকে ঝামেলায় ফেলবে ।'
ফ্লোরেন্স বলল, 'আমি
তো তাকে বাড়ি পাঠাতে পারি না । সে যদি যায়, ভেকিও
তার সঙ্গে যাবে । ওরা এইরকমই ।' সে একটা হাত তুলে দুটো আঙ্গুল একসঙ্গে
জড়ো করে দেখাল । 'এদের জন্য এখানেই নিরাপদ । গুগুলেতুতে সবসময়ই
গণ্ডগোল লেগে থাকে, তারপর পুলিশ আসে, গুলি
চালায় ।'
গুগুলেতুতে গুলিচালনা : ফ্লোরেন্স এবিষয়ে যা
জানে, তুমি দশ হাজার মাইল দূরে থেকে যা জান, আমি
তা জানি না । যে খবর আমার কাছে আসে, তাতে গোলমালের,
গুলিচালনার কোনও উল্লেখ নেই । আমার কাছে দেশের যে ছবি উপস্থাপিত হয়,
তাতে সব প্রতিবেশী প্রীতিপূর্ণ হাসি বিনিময় করে ।
'তারা যদি লড়াইয়ের জায়গা থেকে পালাবার
জন্যই এখানে আছে, তাহলে পুলিশ ওদের পেছনে কেন?'
ফ্লোরেন্স দীর্ঘশ্বাস ফেলল । বাচ্চাটার জন্মের
পর থেকেই ওর মধ্যে একটা হতাশ ক্রোধের ভাব এসেছে যেটা মাঝে মাঝেই চাপা থাকে না । 'ম্যাডাম,
এ প্রশ্ন আমাকে জিগ্যেস করবেন না ।' সে
জোর দিয়ে বলে, 'কেন পুলিশ অল্পবয়সী ছেলেদের ধাওয়া করছে,
ওদের গুলি করছে, ওদের জেলে পুরছে, এইসব
ব্যাপারে আমাকে জিগ্যেস করবেন না ।'
'ঠিক আছে, আমি
বললাম ।'আমি এই ভুলটা আর করব না । কিন্তু শহরের সব
ছেলেদের পালিয়ে এসে আমার বাড়িটাকে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত করাকেও আমি হতে দিতে
পারি না ।'
'কিন্তু কেন নয় ?' ফ্লোরেন্স
একটু ঝুঁকে জিগ্যেস করল, 'কেন নয় ?'
আমি স্নান করবার জন্য গরম জলের কল খুললাম,
আস্তে আস্তে ব্যথা সহ্য করে বাথটবে বসলাম । মনের মধ্যে ফ্লোরেন্সের
প্রশ্ন বাজতে লাগল, 'কেন নয় ?' মাথা
নিচু করলাম, চুলের ডগা মুখের উপর দিয়ে ঝুলে জল স্পর্শ করল ।
আমার ছোপধরা, নীলশিরা বেরোনো পাগুলো লাঠির মত, সামনের
দিকে । একটা বুড়ি, অসুস্থ, বিচ্ছিরি,
যা কিছু বাকি আছে তা-ই আঁচড়ে খাবলে নিয়ে বেঁচে আছে । মৃত্যুর
দীর্ঘসূত্রিতার জন্য অধৈর্য জীবন ।আবার জীবনের প্রতি ঈর্ষান্বিত মৃত্যু । একটা
কুৎসিত দৃশ্য---- এটা তাড়াতাড়ি শেষ হোক ।
বাথরুমে কোনো কলিংবেল নেই । আমি গলা পরিষ্কার
করে ফ্লোরেন্সকে ডাকলাম । অনাবৃত নল ও সাদা দেওয়ালে কেমন একটা শূন্যগর্ভ
প্রতিধ্বনি । ফ্লোরেন্সের শোনা অসম্ভব, আর যদি শোনেও,
সে কেন আসবে ?
হে মা, আমি মনে মনে
প্রার্থনা করলাম, আমার দিকে তাকাও, তোমার
হাত একটু বাড়াও ।
আমার মাথা থেকে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত কাঁপুনি
ধরল । চোখ বন্ধ করে আমার মাকে দেখলাম সেই চেহারায়
যেভাবে দেখি সবসময়, সেই বুড়োমানুষের আধময়লা পোশাক পরা,
মুখটা লুকোনো ।
আমি ফিসফিস করে বললাম, 'আমার
কাছে এসো ।'
কিন্তু মা এলেন না । যে ভাবে একটা বাজপাখি
অনায়াসে ডানা মেলে আকাশে, মা ও তাঁর দুহাত ছড়িয়ে আকাশে উঠতে
থাকলেন । উঁচুতে, অনেক উঁচুতে তিনি উঠে গেলেন । মেঘের সীমানায়,
মেঘ ভেদ করে উঠলেন । যত উপরে উঠতে থাকলেন, ততই
যেন বয়স কমে যেতে থাকল, তাঁর চুল কালো, চামড়া
টানটান, পুরোনো কাপড় শুকনো পাতার মত ঝরে যেতে থাকল,
দেখা দিল বোতামঘরের মধ্যে পালকগুচ্ছ লাগানো নীল পোশাক, যা
আমার ছোটবেলায় মা পরতেন, যখন এই জগৎ ছিল কম বয়সী, আর অসম্ভব বলে কিছু ছিল না ।
মা উঠতে থাকলেন, শাশ্বত
যৌবনের পরিপূর্ণতায়, পরিবর্তনহীনা, হাস্যমুখী,
মদমত্তা, আপনভোলা, স্বর্গের
সীমা পর্যন্ত উঠলেন । 'মা, আমার
দিকে তাকাও'----আমি শূন্য স্নানঘরে ফিসফিস করে বলতে থাকলাম ।(চলবে)
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
*স্পার্টা : প্রাচীনকালের গ্রীক রাজ্য,
এর অধিবাসীরা শৌর্যবীর্যের জন্য বিখ্যাত ছিল ।
-
**ফুরট্রেকার : (dutch:
voortrekker) শব্দগত মানে হল, 'যারা
আগে যায়' । দক্ষিণ আফ্রিকার ডাচ্ ঔপনিবেশিকদের
বুওর(কৃষক) বলা হত, বিংশ শতাব্দীতে তারাই আফ্রিকানার্স ।
এই বুওরদের বেশ কিছু লোক ১৮৩৪ সালে ব্রিটিশ কেপ কলোনি ছেড়ে ভেতরের দিকে অরেঞ্জ
নদীর তীরবর্তী তৃণভূমি অঞ্চলে বসবাস করতে শুরু করে, এদেরই
ফুরট্রেকার বলা হত । পরের কুড়ি বছরে তারা নতুন কলোনি স্থাপন করে, যা
থেকে পরে দুটো স্বাধীন বুওর রাজ্য গড়ে ওঠে --- নাটাল কলোনিতে অরেঞ্জ ফ্রি স্টেট,
ও ট্রান্সভাল কলোনিতে দক্ষিণ আফ্রিকা রিপাব্লিক ।(পরবর্তী কালে এই
দুটো ও কেপ কলোনি মিলেই নতুন দক্ষিণ আফ্রিকা দেশ গড়ে ওঠে )। বুওররা মুলত কৃষিজীবী
ছিল, তাই জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে জমির টানাটানিতে তারা ব্রিটিশ কলোনি ছেড়ে
নতুন জমির সন্ধানে যাবার পরিকল্পনা করেছিল। অন্য কারণ ছিল, তখনকার
দাসপ্রথা-বিরোধী ব্রিটিশ নীতি এরা মেনে নিতে পারেনি, কারণ
কৃষি ক্ষেত্রে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন হত । তৎকালীন অন্যতম ব্রিটিশ নীতি ছিল
উপজাতীয়দের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখা, এটাও বুওরদের
স্বার্থের পরিপন্থী ছিল । ব্রিটিশ কলোনি
ছেড়ে উপজাতীয়দের জমি জোর করে দখল করে কলোনি স্থাপন করলে জমি ও দাস দুটোই পাবার
সম্ভাবনা ছিল । কাজেই স্বাভাবিকভাবে বুওরদের কলোনিরাজ্যে বর্ণভেদ নীতি কঠোরভাবে
প্রচলিত করা হয়েছিল ।
*** ক্যালভিন (John Calvin 1509---1564) প্রোটেস্টান্ট ধর্মসংস্কারের যুগের একজন প্রভাবশালি ফরাসি ধর্মযাজক ।১৫৩০ সালে রোমান ক্যাথলিক চার্চ ত্যাগ করেন । প্রোটেস্টান্টদের বিরুদ্ধে হিংসা উত্তাল হয়ে উঠলে তিনি সুইজারল্যান্ডে পালিয়ে যান ।
জন ক্যাল্ভিনের দর্শন হল ঈশ্বর সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান, সর্বত্র বিরাজমান । শাস্ত্রের শাসন সর্বোচ্চ ।ঈশ্বরের ইচ্ছাই সব । তিনি যার জন্য যেমন ভেবেছেন, তেমনি হবে,সেটাই তার নিয়তি । কিছু লোক চিরন্তন জীবন পাবে, কিছু লোক চিরন্তন নরকবাস করবে । সব মানুষ সমান নয়, মানুষের কোন স্বাধীন ইচ্ছে নেই ।
ক্যালভিনের এই দর্শন পশ্চিম ইউরোপের অনেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে, ডাচ মিশনারিদের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় আসে । ঔপনিবেশিকেরা এটাকে নিজেদের স্বার্থে বর্ণবিভাজনের সপক্ষে কাজে লাগায় ।
জন ক্যাল্ভিনের দর্শন হল ঈশ্বর সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান, সর্বত্র বিরাজমান । শাস্ত্রের শাসন সর্বোচ্চ ।ঈশ্বরের ইচ্ছাই সব । তিনি যার জন্য যেমন ভেবেছেন, তেমনি হবে,সেটাই তার নিয়তি । কিছু লোক চিরন্তন জীবন পাবে, কিছু লোক চিরন্তন নরকবাস করবে । সব মানুষ সমান নয়, মানুষের কোন স্বাধীন ইচ্ছে নেই ।
ক্যালভিনের এই দর্শন পশ্চিম ইউরোপের অনেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে, ডাচ মিশনারিদের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় আসে । ঔপনিবেশিকেরা এটাকে নিজেদের স্বার্থে বর্ণবিভাজনের সপক্ষে কাজে লাগায় ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন