“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

রবিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৮

মাটির আকাশ

।। অভীক কুমার দে ।।


বাঙালির মনে উৎসবের রঙ লাগতেই চারদিকে তিতলি আয়োজন। কাশফুলেরা রেশমি আঁচল উড়িয়ে দিয়েছে আকাশে। মাটির বৃষ্টিভেজা শরীর। মেঘমেয়ের নতুন শাড়ি মাতিয়ে তুলেছে মাটিমন, তাই বৃষ্টিতে ভিজে বুঁদ হয়ে আছে মা- টি।

এ সময় শীতের শিশুকাল গুটিগুটি পায়ে টলমলে কুয়াশার ঘরে বেড়ে ওঠার কথা, অথচ মেঘমেয়েরা আদুরে শীতকে মাটিতেই রাখতে রাজি নয়। কোলে থাকতে কার না ভালো লাগে, শীতেরও তাই।

শিউলির ঠোঁটে চুমু খেয়ে একাই ঘুমিয়ে পড়ে কুয়াশা। চোখের খাঁজে তন্দ্রা যখন পাপড়ি ঢেকে মঞ্চ গোছাতে আসে, ঠিক তখন কানে আসে মেঘমেয়ের হইচই হাসাহাসি, শীতের নরম হাত যেন জড়িয়ে ধরছে শরীর। ঘুম ভেঙে গেলে শরীরে লেগে থাকা শীতের ছোঁয়া বুঝতে পারে মা- টি, টের পায় কাছাকাছি কোথাও হামাগুড়ি দিচ্ছে শীত, এবার মাটিতে পা পড়বে, কাঁপা কাঁপা পায়ে দাঁড়াবে, পায়ে হেঁটেই ঢুকবে ঘরে।

তারপর মাটির আকাশে মেঘের কোনও কাজ নেই। দুর্গতিনাশিনীর দুগ্গাদালানে ধূপের ধোঁয়ায় কেটে যাবে মেঘের মায়া। তালে তাল খুঁজে নেবে মাঝরাত, ঘুম ঘুম মাতালপথে মাটির আকাশ, উজ্জ্বল বাতিগুলো ঘষাকাঁচের মতো কুয়াশায় ডুবে গেলে ঋতুকেই খুঁজে নেবে শীত।


কোন মন্তব্য নেই: