“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

ম্যান্ডেলার সন্ততি


।। অশোকানন্দ রায়বর্ধন।।
মৃণালকান্তি দেবনাথ এই সময়ের শক্তিমান কবি ৷ তুলসী পাবলিশিং হাউস থেকে সদ্য বেরুলো তাঁর প্রথম কবিতার বই ম্যান্ডেলের সন্ততি ৷ এই প্রজন্মের এই কবির কাব্যভাষায় যেমন সময়ের ছাপ রয়েছে তেমনি বাংলাকাব্যের দীর্ঘপরিক্রমণের মানচিত্রটিও উঠে এসেছে নির্মানে ৷ 'ডোমনির ঘরফেরত পুরুষ হৃদয় জানে/ললিতা-বিশাখা ছিল ৷ ষোলশত গোপিনীও সত্য/ব্যালেন্স রাখতে পারলে সংসার সমৃদ্ধ হয় '৷ ( কৃষ্ণকথা) কিংবা 'নিমাই সন্ন্যাসেতে চলে গেলে/দল বেঁধে হা-হুতাশ, কান্নাকাটি হল খুব/ ফুল ফোটার সময়ে ফুলস্টপ দিয়ে রাতি পোহাইল' (ভোরবেলার কবিতা) অথবা 'সব অঙ্কে ভাগফল শূন্য জেনেও যাপনে চেয়েছি শান্তি/আর একবার লিখে যাই এই সত্য, আমি ছিলাম গোপীচন্দ্র/ আমি মৃণালকান্তি ৷(গোপীচন্দ্রের গান) এই রূপকাত্মক ভাষ্যেই অনুভব হয় কবির চলন বাংলাকাব্যের আব্রহ্মস্তম্ভপর্যন্ত ৷ আর সমুদ্যতসত্যের কাছেও কবি স্বচ্ছ ৷তিনি মূল্যায়ন করেন তাঁর যাপনের দ্বন্দ্বও ৷'যে সব আন্দোলনে নাম লিখিয়ে/মিছিলের সামনে হেঁটে একদা/যা কিছু নিপাত যাবার জন্যে/গলার শিরা ফুলিয়ে স্লোগান দিয়েছি/ সে সব আসলে ছিল আমার নিজের বিরুদ্ধেই' ( শিরোনামহীন) ৷এতো সব ভুল গমন নয়, কবি কবিতাকে নিয়ে সংসার পাততে চান ৷ 'তুমি যদি রেখে থাকো নির্ধারিত টব/আমিকিন্তু হতে পারি মাথুর- যুবক!/ছেঁড়া জিন্স যুবকেরা অনুরাগী জানি, /তবু তোমাকে নিয়ে লিখেছি পাগলামি (বাস্তবিক) ৷ প্রচ্ছদেও সম্ভবত কবির হার্দ্য প্রতিদ্বন্দ্বী পাঙ্কযুবকের ছেঁড়া জিন্স ৷

কোন মন্তব্য নেই: