।। শিবানী দে ।।
(C)Image:ছবি |
ফোনের ওপার থেকে যে কণ্ঠস্বর ভেসে এলো,
তাকে পরিচিত মনে হল না ।
কিন্তু সে আমার নাম ধরে ডেকে অনেক কথা
বলে যাচ্ছিল।
তখন বুঝতে পারলাম, সে বহুবছরের
অদেখা আমার ছোটবেলার বন্ধু, কিন্তু
তার এই মাঝবয়সী ভারি গলা আমি চিনি না ।
সেও কি দ্বিধান্বিত ছিল ? বোঝা গেল না ।
সে যখন সেই সময়ের কিছু কিছু ঘটনার
উল্লেখ করছিল,
আমার কাছে তা তেমন স্মরণীয় ছিল না ।
আবার আমি যখন কিছু কিছু স্মৃতি তুলে
আনলাম,
তার কাছে সেগুলো ছিল গুরুত্বহীন, প্রায় ভুলে যাওয়া ।
আমাদের যৌথ স্মৃতির পাতা, মাঝখান দিয়ে
ছিঁড়ে গেছে, জুড়ে সম্পূর্ণ হলনা ।
‘যাক সেসব কথা’,
সে বলল, ‘এখন তোর জীবন কীরকম, বর বাচ্চারা কী
করছে ?’
আমি উত্তর দিলে সেও তার বর ছেলেমেয়ের
কথা বলতে থাকল ।
বরের পাশে বর, ছেলের সঙ্গে ছেলে, মেয়ের সঙ্গে
মেয়ের তুলনামূলক বিচার।
তার গলা বেশ খুশি খুশি, তৃপ্ত মনে হল,
জীবনে সে অর্থ প্রতিপত্তি সফলতা কিছু বেশি পেয়েছে ।
তারপর সে আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইল ।
আমার মনে হল, দেখা করতে সে
নিয়ে আসবে জেতার পরিতৃপ্তি,
চোখে চোখ রেখে মেপে নেবার দৃষ্টি,
আমার মুখে কোথাও এককণা লুকোনো হতাশার সন্ধান ।
আমি আমার প্রতিযোগীর সঙ্গে মিলতে চাইলাম
না ।
শুধু যে বন্ধু হারিয়ে গেছে, তার সঙ্গে কাটানো
দিনের কথা ভেবে
দুফোঁটা চোখের জল উষ্ণ শ্বাসে শুকিয়ে
গেল ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন