“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

প্রতিযোগী


 ।। শিবানী দে ।।
(C)Image:ছবি


















ফোনের ওপার থেকে যে কণ্ঠস্বর ভেসে এলো,
তাকে পরিচিত মনে হল না  
কিন্তু সে আমার নাম ধরে ডেকে অনেক কথা বলে যাচ্ছিল
তখন বুঝতে পারলাম, সে বহুবছরের অদেখা আমার ছোটবেলার বন্ধু, কিন্তু
তার এই মাঝবয়সী ভারি গলা  আমি চিনি না
সেও কি দ্বিধান্বিত ছিল ? বোঝা গেল না ।
সে যখন সেই সময়ের কিছু কিছু ঘটনার উল্লেখ করছিল,
আমার কাছে তা তেমন স্মরণীয় ছিল না ।
আবার আমি যখন কিছু কিছু স্মৃতি তুলে আনলাম,
তার কাছে সেগুলো ছিল গুরুত্বহীন, প্রায় ভুলে যাওয়া
আমাদের যৌথ স্মৃতির পাতা, মাঝখান দিয়ে ছিঁড়ে গেছে, জুড়ে  সম্পূর্ণ হলনা ।
যাক সেসব কথা’, সে বলল, ‘এখন তোর জীবন কীরকম, বর বাচ্চারা কী করছে ?’
আমি উত্তর দিলে সেও তার বর ছেলেমেয়ের কথা বলতে থাকল ।
বরের পাশে বর, ছেলের সঙ্গে ছেলে, মেয়ের সঙ্গে মেয়ের তুলনামূলক বিচার।
তার গলা বেশ খুশি খুশি, তৃপ্ত মনে হল,
জীবনে সে অর্থ প্রতিপত্তি সফলতা  কিছু বেশি পেয়েছে 
তারপর সে আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইল ।
আমার মনে হল, দেখা করতে সে নিয়ে আসবে জেতার পরিতৃপ্তি,
চোখে চোখ রেখে মেপে নেবার দৃষ্টি,
আমার মুখে কোথাও এককণা লুকোনো হতাশার  সন্ধান
আমি আমার প্রতিযোগীর সঙ্গে মিলতে চাইলাম না ।
শুধু যে বন্ধু হারিয়ে গেছে, তার সঙ্গে কাটানো দিনের কথা ভেবে
দুফোঁটা চোখের জল উষ্ণ শ্বাসে শুকিয়ে গেল ।



কোন মন্তব্য নেই: