“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

সোশ্যাল মিডিয়ায় সৃজন বিস্ফোরণে আতংকিতদের প্রতি


।।পার্থ প্রতিম  আচার্য।।

দিনকালের গতি দেখে মনে হচ্ছে একাংশ স্বঘোষিত পণ্ডিতদের ,সবার নয়, (জেন্ডার নির্বিশেষে) টিকিতে টান পড়েছে । অনেক কালের সযত্নে লালিত নকাব খসার ভয়। এই ভীতুরা সমাজ বিজ্ঞানের অ আ ক খ শেখেন নি বরং ওটাতে নাক সিটকেছেন চিরকাল- দরকার ও পড়েনি। এমনি করে যায় যদি দিন যাক না”- সাজুগুজু তে মঞ্চ শোভিত করে, দুচারটে বাজারু শ্লোগান গুঁজে দিয়ে ,কিম্বা কয়েকটা অশ্লীল গাল লেখায় ঢুকিয়ে , মনের গহিন থেকে গহিনতর প্রকোষ্ঠে অভিসার নিয়ে বেশ সুখেই ছিলেন তেনারা। কিন্তু উৎপাদনের সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়ার ব্যাপক বিকাশে এরা দিশেহারা করুণা হয় যখন দেখি ভবিষ্যৎ না দেখতে পাওয়া এইসব বুদ্ধিজীবীদের আর্তবিলাপ – “গেলো গেলো সব গেলো /ফেইসবুক খেয়ে নিলো
হায়রে,শিল্পের একচ্ছত্র এইসব অধিপতিরা কতো সুন্দর নিজেদের সংসার চালিয়ে যাচ্ছিলেন ,আমার লেখা তুমি পড়বে/মন্দ নয় ভাল বলবো /তোমার বেলাও তাই হবে /কোন বেটা কি কবে?
এবার সাধারণ ছাপোষা বলে যাদের চিরকাল নাক সিটকেছেন তারাও আজ ফেইস বুকে কথা বলছে ! কি কাণ্ড, কাণ্ড! মূর্খের দল আবার কথা বলতে পারে নাকি?কথা বলার ও শোনানর একচ্ছত্র ঠিকেদার তো আমরা । অর্বাচীনের দল কমল বনে মত্ত হস্তির মতো কোত্থেকে ওড়ে এসে জুড়ে বসছে , গ্রুপ বানাচ্ছে ,  তর্ক করছে , কবিতা লিখছে, লিখছে মন খুলে যা আসছে সভ্য সংস্কৃতির বারোটা বাজাচ্ছেসুতরাং জোট বাঁধো , তৈরি হও শ্যাওলা পড়া দুর্গ রক্ষা করতে হবে।কলম তোল ,গাল পারো জনমুখি নকাবটা খসে পড়লে পড়ুক। আত্মরক্ষার প্রশ্ন।

             হে লোলচর্ম পুরাতন- জানেন কি আপনাদের ইচ্ছেতে সমাজের একটা পাতাও নড়েনা ইতিহাস আর সমাজ বিজ্ঞানের পুঁথিগুলু ঘরে সাজিয়ে না রেখে একটু অধ্যয়ন করুন ঐ বিজ্ঞানের অনিবার্য নিয়মেই আজ শত ফুল ফুটছে এতো গাত্রদাহ কেন ?
                ভাষণ, সংগীতে আর লেখায় তো সবারে করি আহ্বানবলে গলা ফাটান ।‘সবাই’ টা আপনাদের কাছে কারা বলুন তো? আমি,সে ও সখা”?
           ছাড়ুন ইতিহাসের আস্তাকুড় থেকে যদি বাঁচতে চান তবে নতুন কে বরন করুন । ফেইসবুক কে এত হিংসা আর ঈর্ষা কেন? ওখান থেকে জনতার ভাবনা গুলু বুঝুন- আপনারা যাদের কথা বেচে আপনারা হয়েছেন- তারা মুখ খুলছে- রিক্স্ওয়ালা থেকে ছাপোষা গৃহ বঁধু , ছাত্র থেকে শিক্ষক । তবে নাক সিটকানোটাও একটা উত্তরাধিকার , এমনকি সোভিয়েত বিপ্লবের সময় ও বুদ্ধি বেচনেওয়ালারা এমনই করেছিল (ওটা ছিল সচেতন সামাজিক বিপ্লব আর এতো ইতিহাসের অমোঘ বিবর্তন মাত্র )পরে এরাই নিজেদের ছোটলোকদের সাথে মিলিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল ।ইতিহাসের গতিপথে বাধ্য হয়ে বাতিল হওয়ার আগে ভাবুন।দয়া করে সামাজিক গতিশীলতাকে বুঝুন না হলে ঠাই কিন্তু সেই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে 

পুনশ্চ আমি থাকি আর আর না থাকি মিলিয়ে নেবেন কোন আরও উন্নত সামাজিক মাধ্যম যদি উদ্ভাবন না হয় আগামী দশ বছরে ই বুক, ব্লগ আর সামাজিক মিডিয়াই হতে চলেছে নতুন সৃষ্টির স্থান ।

১৭/২/২০১৭




কোন মন্তব্য নেই: