“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

হে অগ্রজ

।। সুপ্রদীপ দত্তরায় ।।










হে অগ্রজ
তুমি তো চলে গেলে , 
কিছু কথা শুধু থেকে গেল বাকি।
যে পথে তোমার চলা, 
আঁকা বাঁকা ভঙ্গুর, সহজ তো নয় ;
 
তবুও চলেছিলে একা, স্থির নিশ্চিত
কিছু এক ভাবনা ছিল নিশ্চয়ই ।
যত কাঁটা বিঁধেছে পায়ে
 
অভিজ্ঞতার নিপুণ হাতে
 
রেখেছো সরায়ে , দুর ঠিকানায়
পাছে রক্ত ঝরে কারো কঠিন বালুকায় ।
কী চেয়েছিলে রাজন, সমাজের কাছে?
 
হ্যাঁ , রাজাই তো বটে । তোমার ব্যক্তিত্ব
 
তোমার নেতৃত্ব , দূরদর্শী চোখ,
 
অন্যায়ের প্রতিবাদে দৃঢ় রোখ --
তোমাকেই মানাতো সব ।
এই যে পৃথিবীটাকে দেখতে তুমি ,
এমন দৃষ্টি আর ছিল না যে কারো ।
যারা বুঝতে শিখেছে তোমায়,
 
পায়ে পা মিলিয়েছে তোমার ।
তোমার আদর্শ, তোমার সরলতা
 
তোমার জীবনের প্রতিটি পাতা,
 
শুধুই স্বচ্ছতা । মানুষকে কাছে টানার
 
সম্মোহনী শক্তি ছিল তোমার ।
আজ যাত্রার যেখানে যতি টানলে ,
 
আমি অবাক হয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে ।
ভাবি , কী অসীম ছিল তোমার জীবনীশক্তি ।
ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর সভা সমিতি, অনুষ্ঠানে
তোমার উপস্থিতি ছিল সভার অলঙ্কার ।
চাওয়া পাওয়ার অঙ্কটা তো শুভঙ্করী ধাঁধা
 
কী পেলে, কী পেলে না; সে তোমার জন্য নয় ।
তোমার স্থান ঊর্ধ্বে সবার।
শবযাত্রায় পায়ে পা, ঠেলে দিতে দিতে
 
একটা উপলব্ধি নাড়া দেয় বারবার ,
 
কারা এলো , কারা এলো না -- তুচ্ছ ব্যাপার
 
পাওয়া না পাওয়া তো সেই শকটেই শেষ
 
যে আদর্শের ঝাণ্ডা তুমি উড়িয়ে গেছো গুণী
যাতে মিশে আছে তোমার ঘাম, ক্লান্তি, ক্লেশ
তাকে মরম দেবো , উত্তাপ দেবো
দেবো স্বপ্ন দেখার স্বাধীন অধিকার,
 
হে অগ্রজ, এই আমার
  কঠিন অঙ্গীকার ।


কোন মন্তব্য নেই: