“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

স্বাধীনতাও গোল্লা- ছুট

।। অভীককুমার দে।।
         
(C)Image:ছবি
   
গোমতী জেলার নেহেরু যুব কেন্দ্র অফিসের ছাদে নীলার গালে বিদায়ী চুমু এঁকে ভারতের পাঁচিল টপকে সূর্যটা পালিয়ে গেছে। নীলার গাল থেকে লাজুক লালচে আভা ছাদ বেয়ে নেমে অফিস চত্বরে, ঘাসের ডগায়। তারপর যতই সময় যায় ধীরে ধীরে নীলার মুখে বিয়োগ ব্যথা বাড়ে। সব লাল মুছে বুকের জমিতে হালকা কালো নেটশাড়ির মতোই মেঘ। মেঘের ওপারে নীলার চোখে চাঁদের বাড়ি আর তারার লুকোচুরি, তবু তার চোখে ঘুম নেই। অফিস ছাদের কাছাকাছি কুয়াশার ভিড়। চত্বরের হাসিও মুছে যাচ্ছে কুয়াশাবিলাপে ডুবে।
একটু পরে বিভিন্ন ক্লাব থেকে প্রায় দশ পনেরোজন
  মনোনীত ছেলে মেয়ে অফিস চত্বরে একত্রিত হলো। গাড়িও এসে গেছে। মেলাঘর এডভেঞ্চার ইন্সটিটিউটের উদ্দেশ্যে রওনা হল যুবভর্তি গাড়ি। দিনের শেষ আলো প্রায় ফুরিয়ে আসছে এসময়। দেখে মনে হয়, গাড়ি আর দিনের শেষ আলোটুকু আজকের মতো গোল্লাছুটের শেষ দৌড়ে। কেননা, সূর্যটাও এদিকেই গেছে।
           যেই এডভেঞ্চার ইন্সটিটিউটের মাঠে গাড়ি এসে দাঁড়িয়েছে, অন্ধকার থেকে তারকাঁটাবিদ্ধ মাটি যেন বলে উঠলো-- স্বাধীনতার জন্য লড়তে লড়তে সূর্যের গায়ে গ্রহণ লাগে।
  স্বাধীনতা পাবার আগেই নিরাপত্তাহীন মুক্তি জোটে। মুক্তির জন্য আবার লড়াই সূর্যের। হাজার হাজার সূর্যের কিরণ জমা হয়ে একটি একাত্তর। ইন্সটিটিউটের দে'য়াল, মাঠ এখনও সেই সব স্মৃতিচারণে মগ্ন। এক অদ্ভুত নীরবতা মেলাঘরের এই এলাকায়। এখানকার সবকিছুই এপার ওপারের ছাদে নীলা ও সূর্যের প্রেম আর বিয়োগের খেলা দেখে এবং বুঝতে পারে-- স্বাধীনতাও গোল্লা- ছুট।


কোন মন্তব্য নেই: