“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

মঙ্গলবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৫

সেকাল


 
(C)Image:ছবি






















।। দেবলীনা সেনগুপ্ত।।

ককালে এমন হত।
রাতের চাদর সরিয়ে
দিনের আলো মুখ দেখানোর আগেই
আলতা পায়ের আলপনা
যাকে ঘিরে থাকত
ভেজা চুল থেকে ঝরে পড়া জলকণা,
পূজোদালান থেকে পৌঁছে যেত
রান্নাঘরের দাওয়ায়।
ভোরের বাতাস
রোদের সঙ্গে খুনসুটি করতে করতে
খিলখিল হেসে গড়িয়ে পড়ত
পেছনের উঠোনে ,বাগানে।
পেঁয়াজকলি , ধনেপাতা
বিলিতিবেগুন আর মটরশাকের
ছোট ছোট জমিদারিতে
লেগে যেত হৈ – হুলুস্থূল,
সুডোল হাতের নিটোল চুড়ির
গান শুনতে শুনতে
কে আগে প্রাণ দেবে, সে জল্পনায়।

তারপর
তার বেশ কিছুক্ষণ পর
খোকাখুকুর কচি মিঠে স্বরে
নামতা আর সহজপাঠের সুরে
মুখর যখন ঘরদালান,
স্নান সেরে সাদা ধুতি
আসন-পিঁড়ি হয়ে বসত
সেই সুখাসনে,
যার এক কোণায় নরম আদরে
কেউ লিখেছিল ‘সুখে থাকো’।
সমুখে একথালা জুঁইফুল ভাতের পাশে
সোনারং হাত বেড়ে দিত
পঞ্চব্যঞ্জনের অমৃত কবিতা
আর শেষ পাতে
একবাটি দুধে
সোহাগে গলে যেত খেজুর পাটালির কোমলতা।
সেকালে এমনি হত,
যেকালে জীবনে আর বেঁচে থাকায়
এত যুক্তাক্ষর ছিল না,
যেকালে চাওয়া ও পাওয়ায়
এত ফারাক ছিল না,
সেকালে এমনই হত...
এমনই হত সে সময়।

কোন মন্তব্য নেই: