“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৫

ভুল


(C)Image:ছবি
























 ।। সৌম্য শর্মা।।
কাজল- দীঘি চোখ ছিল তার, পদ্ম- পাতা মুখ
খিলখিলিয়ে হাসতো যখন, সে কী অপরূপ রূপ
শরীরময় বাঁক ছিলো তার, যেন দুরন্ত ঝর্ণা
নদীর মতোই বাড়ছিলো মেয়ে,হতে নারী অনন্যা

 গোল্লাছুটের খেলায় মেতে, মায়ের শাসন মানতো না
খোলা ঘাটে নাইতে  যেতো, নারী- পুরুষ জানতো না
মানুষ হবার পণ ছিলো তার, পড়তে যেতো বিদ্যালয়ে
সবার অভাব মিটিয়ে দেবে, জিদ ছিলো তার স্বভাবে
রাঙ্গামাটির পথ ধরে একদিন তাই পৌঁছে গেলো শহরে
দৃপ্ত পায়ে হেঁটে যেতো নির্জন সব রাস্তা ধরে
পাড়ার মোড়ের হায়নাগুলো পড়লো না তার নজরে

শরীরটা যে মাংস ছিলো, জানতো না সে এক্কেবারে
সে দিনও তার কাজ ছিলো, একা একাই হাঁটছিলো
হায়নাগুলো হঠাৎ এসে, জোর করেই বেঁধে নিলো
কাল রাত্রির শেষ ভোরে, ফেলে গেলো রাস্তার  কিনারে

মেয়েটা একসময়, খবর হয়ে আন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়ে
দাঁড়কাকেরা ভিড় করে, ছবি ছাপে সাক্ষাৎকারে
মন ভোলানো মিছিল হয় রাজধানীতে, নগরে
মেয়েটিই অভিযুক্ত হয়, সমাজের নাগপাশে
আপন ঘরেই সে পর হয়ে যায় অবশেষে

মেয়েটার প্রতিটা দিন হতে থাকে ভারী
শূন্য চোখে জানালায় দেখে, রক্তমাখা মেঘের সারি
ঝেঁপে আসা কষ্ট মেপে নিতে নিতে প্রতি পলে
মুক্তি খুঁজে নেয় ছাঁদ-পাখায় ঝুলে

কালও তার স্বপ্ন রঙ্গিন ছিলো, খোপায় গোঁজা ফুল ছিলো
মহাবিদ্যালয়ে পাঠ ছিলো, বুক ভরা শ্বাস ছিলো
মানুষ হবার সখ ছিলো, ভালোবাসার ইচ্ছে ছিলো
মেয়ে হওয়াই বুঝি   ভুল  ছিলো !!!





























কোন মন্তব্য নেই: