“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৯

একটি নদীর জন্য

।। অভীক কুমার দে ।।
ময় শব্দটি এক অনুভূতিপ্রবণ অশরীরী অস্তিত্ব। সময়ের উপর কব্জা হয়, কিন্তু সময়কে স্পর্শ করা যায় না। বিকশিত হবার জন্য মূল্যবোধ প্রয়োজন। মূল্যবোধের কিছু উপকরণ সময়ের পিছে ছায়াবস্থান করে ও সময়ের মান নির্ণয় করে। সময়ের অশরীরী নদী থেকে ভেসে ওঠে মানবতা একতা। এই অনুভূতির ভেতর লুকিয়ে থাকে আন্তরিকতা- (ভয়)- প্রয়োজনীয়তা- প্রচেষ্টা- সফলতা ইত্যাদির অদৃশ্য উপস্থিতি এবং এক শক্তির সৃষ্টি হয়। এই শক্তি যে কোনও প্রাণীগোষ্ঠীকেই শক্তিশালী করে, ওরা তখন প্রতিবন্ধকতা বোঝে, প্রতিক্রিয়া জানে। যদিও পৃথিবীতে একমাত্র মানুষ ছাড়া অন্য সব প্রাণীগোষ্ঠী শুধুমাত্র ভিন্ন প্রাণীগোষ্ঠীর থেকে নিজেদের রক্ষা করার ও প্রতিকূল পরিবেশের মোকাবিলা করার জন্য এই শক্তি সঞ্চয় করে। একমাত্র মানুষই স্বগোষ্ঠীয় শত্রু--
একটি নদীর জন্য
একটি নদীর জন্য ঈশ্বর হতে পারে না মানুষ,
গা ভাসায় আর ভেসে যায় জলে।
কল্পচিত্রের মত আক্ষেপ ছোড়ে জীবন
মৃত্যুর আগে,
নিজের নদী চিনতে পারে না মানুষ।
আক্ষেপের পর নদীটি ভাগ হয়।
একটি ধারা চোখ থেকে ঝরে যায়,
একটি ধারা আগামীর পথে মানুষ খুঁজে বেড়ায়।
ধারাটি এগিয়ে যায় বহুদূর বিস্তার ছড়িয়ে মনের দিকে
যেখানে ঈশ্বর ঈশ্বরের চেনা এবং পিপিলিকাধিকার
ধারাটি একদিন বড় হবে, নদী হবে;
একটি নদীর জন্য ঈশ্বর হতে পারে না মানুষ।
এই অনুভূতিপ্রবণ সংকটে নীরবতা দুটি অর্থ বহন করে। লুটেরাদের আঘাত নীরবে সহ্য করা অথবা পাল্টা আক্রমণের জন্য সাময়িকভাবে নীরব থাকা। এই সময় একটি ধারালো শব্দ চুপ। মনের অন্ধকার ভেদ করে অন্দরমহল খুঁজে বের করতে পারে। তালে তাল ঠুকলে রাতের পর্দা সরে যাবে একসময়।


কোন মন্তব্য নেই: