....চিরশ্রী দেবনাথ
হিজলের আলোছায়া মেলা আজ এই দ্বিপ্রহরে,
আমি জানি, তোমরা আমাকেই শুনতে এসেছ
আমার শ্যামল পায়ে মেলে দিতে
এসেছ
দীঘল ভাষণ।
ভুলে যাও কেন!
আমার ট্রেন চলে যাওয়া প্ল্যাটফর্ম, জুতো হারানো শৈশব শুয়ে আছে তোমারি
পকেটে দোমড়ানো কাগজকুচি হয়ে ...
একঝাঁক যুবতী মাছরাঙা যেভাবে
ফেলে গেছে আহত মাছেদের কামরাঙা
উঠোনে,
অন্ধকার নিভে যাওয়া ভোর রাতে
আমিই সেই অভিমান,
তোমাদের শিশুদের মুখ ভর্তি লালা,
লালায় লোলে আমি চুইয়ে চুইয়ে
ডুবিয়ে যাচ্ছি
মৌমাছি বসত,
এই যে কারুকাজ আঁকা একচিলতে
ছায়া ঘর
মাটি মাটি মিশে থাকা রান্না গন্ধ, ঘাম ত্বক,
তোমার প্রেমিকার নিটোল বাহু
ভেবে ...
স্পর্শ দিও কোন বেহাগ নিশীথে।
যদি ভাবো মা?
তবে কি সোহাগ একটু কম করো
......বলে মনে হয় না
তোমার?
যেন কিছু পশমিনা
দামী শাল মাঝে মাঝে,
ওম দেয় অকাল স্যাঁতসেঁতে
বর্ষায়।
লাল হলদে ঔষধি আদর, মুখ গম্ভীর দায়সারা সঙ্গ
ধনেখালি শাড়ি মেলা দোকানি শরত,
বোধনের তাড়াহুড়ো চণ্ডীপাঠ,
বছরে একবার বিজয়া প্রণাম,
কিছু বেসুরো ঢাকের আওয়াজে
বরাক থেকে উঠে আসা আরেকটি ছায়া
ছায়া নদী
ঘোলা জলে জুরীর
মেঘলা বিকেল...
কেন যেন দুর্বল হয়ে ছড়িয়ে পরে
আজকাল
আমার হলকা নিঃসঙ্গ শ্বাস, ছুঁয়ে থাকে এক
সোনালি খড়ের শীত মাঠ ...
আমাকে প্রেমিকা ভাবো...... পারো
না ভাবতে?
সকাল দুপুর রাত দেখবে কেমন
আচ্ছন্ন সময় দিই
কেমন ফাঁকহীন তেওড়া তাল.....
সোঁদাল গাছের ছায়ার মতো ডুবন্ত
বেঁচে থাকা
সময়ের ভগ্নাংশে উড়ে যাবে
ক্লান্তি, বিরক্তি,
অলস মোহ
পাগলের মতো লিখবে আমাকে বিহঙ্গ
কলমে,
.........তোমার তৈরি মাঠে,
আমার সঙ্গে খেলবে তোমার পুরুষ
আঙুল দিনরাত,
দুগ্ধ কলস সবুজ গাভীর চিকন লোমে উচ্ছ্বসিত ঋতুস্নান।
একবারও মনে হবে না,
বারান্দায় পরে থাকা একটি অকেজো
ইজি চেয়ার..
মনে হবে অবণ ঠাকুরের রূপককথা
কালো কালো গুচ্ছ গুচ্ছ প্রেম, জ্যোৎস্না ঝুলন, দোলনায় যুগল মেঘমল্লার
এভাবেই রাখো না আমায়, নাহয় বদলে দিলে সংজ্ঞা
বদলে দিলে শীতের পোশাকি উষ্ণতা,
বুক থেকে জোড় করে তুলে আনা বিবেক
..
তার চেয়ে সঙ্গিনীর কফি মগে দিও যৌথ চুমুক
ভেবে দেখো আমি তোমার
আসন্নপ্রসবা তরুণী গ্রাম
জন্ম নেবে না আমার কোন ভেজা
সন্তান,
আমি শুধু তোমার ...তোমার
....কাঙ্ক্ষিত...
ধানভারে নুয়ে পড়া পূর্ণগর্ভা
তরুণী প্রেমিকা.....
* * *
বরাক ...আসামের একটি নদী
জুরী....ত্রিপুরার একটি নদী
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন