( আজ ২৬শে ফাল্গুন, ১৪১৯ তথা ১০ মার্চ, ২০১৩; শিব চতুর্দশী। শিব আমাদের কৃষি দেবতা। চারদিকে যখন ঔপনিবেশিক নাস্তিকতা এবং 'প্রগতিশীলতা'র ধূম উঠেছে, মনে হলো কেন না, একটি প্রাক-ঔপনিবেশিক আধুনিক কবিতা দিয়ে আমাদের পূর্বজদের অপূর্ব এই শিল্প কল্পনা যে দেবতাকে সৃজন করেছে, তাঁকে সম্মান জানানো যাক। নিচের কবিতাটি বুঝতেই পারছেন কবি কঙ্কনের চণ্ডী থেকে)
সৌজন্যঃ ছবি |
কি জানি তপের ফলে বর মিলেছে হর।
পাট –পড়শি নাহি আসে দেখি দিগম্বর।।১
বাপের সাপে পোয়ের ময়ূর সদা করে কেলি।
গণার মূষায় কাটে ঝুলি আমি খাই গালি।।
বাঘ বলদে দ্বন্দ্ব সদা নিবারিব কত।
অভাগীর কপাল দারুণ দৈবহত।।
ময়ূর-মুষায় দ্বন্দ্বাদ্বন্দ্বি সদাই কন্দল।
ঐ নিমিত্তে সদা গালি মোর কর্ম্মফল।।
দারুণ দৈবের ফলে হইনু দুঃখিনী।
ভিক্ষার তাতে দারুণ বিধি করিল গৃহিণী।।
উন্মত্ত ল্যাংটা হর চিতাধূলি গায়।
দাণ্ডাইতে শিবের জটা অবনী লোটায়।।
একত্রে শুইতে নারি সাপের নিশ্বাসে।
তার অধিক প্রাণ পোড়ে বাঘ-ছালের বাসে।।
পায়ে ধরি ধার করি শুধিতে কোন্দল।
পুনর্ব্বার উধার করিতে নাহি স্থল।।
উচিত কহিতে আমি সবাকার অরি।
দঃখ-যৌতুক দিয়া বাপ বিভা দিল গৌরী।।২
উরে ফণিপতি শোভে ললাটে দহন।
জটায় জাহ্নবী দেবী ধরেন পঞ্চানন।
কি কহিব সহচরি মনের বিরল কথা।
মিথ্যা নারী করিয়া মোরে সৃজিল বিধাতা।।
দোষ-ঘাটি নাহি কিছু পাপ-পরমাদ।
কি কারণে পদ্মা এত পাই অবসাদ।।
দোষ বিনে প্রভু মোরে বলে কটূত্তর।
একা বসি থাক শিব ছাড়ি যাব ঘর।।
এমন শুনিয়া পদ্মা দেবীরে
বুঝান।
অম্বিকা মঙ্গল কবি কঙ্কণে গান।।
--- ---- ---
পাঠান্তর
১) সই সাঙ্গাতি নাহি আস্যে দেখ্যা
দিগম্বর।।
২) দুঃখযুত জনে বাবা বিভা দিলা গৌরী।।
বা
নানা যৌতুক দিয়া বাপা বিভা দিলা গৌরী।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন