“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ২৫ মে, ২০১৩

আত্মপরিচয়

  ( আজ কাজি নজরুল ইসলামের জন্মদিনে কলকাতার নজরুল মঞ্চে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে  কাছাড়ের জাতক কবি রনজিৎ দাশের হাতে 'রবীন্দ্র পুরষ্কার -২০১৩'তুলে দেবেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দে'জ প্রকাশিত 'রনজিৎ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা'র জন্যে এই পুরষ্কার পাচ্ছেন কবি। কবির পরিচয় কবি ছাড়া আর কে ভালো দিতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত গুয়াহাটির কাগজ নাইন্থ কলামের 'দেশভাগ-দেশত্যাগ--প্রসঙ্গ উত্তর পূর্ব ভারত' তথা ১০ম সংখ্যাতে প্রকাশিত তাঁরই লেখা কবিতাতে তাই কবিকে আমাদের অভিনন্দন ---গৌতম ভট্টাচার্য  )
 
 
 
 
 
 
 
 
 
কটি ভাটিয়ালি গান থেকে আমার জন্ম

বহু যুগ আগে, পদ্মা নদীর বুকে, আমার এক পূর্বপুরুষ--
এক কৈবর্ত পুরুষ--এক বলিষ্ঠ ও উদাসীন ইলিশ-শিকারী মাঝি
শেষ রাতে, টিপ টিপ বৃষ্টির ভিতরে,
প্রবল ঘুর্ণিময় নদীজলে শক্ত হাতে বৈঠা টেনে টেনে
একটি ভাটিয়ালি গান গেয়েছিলেন--

সেই গান থেকে আমার জন্ম
আমার পিতৃ-পিতামহের
মাতৃ-মাতামহের জন্ম

আমার মায়ের মুখে শুনেছি সেই ভাটিয়ালি গান
আমার বাবার চোখে দেখেছি ভাটি-র নৌকা ভাসমান

এখনও বর্ষার রাতে, অঝোর বৃষ্টির মধ্যে, ঘন অন্ধকারে
আমাদের ফ্ল্যাট-বাড়ির সদর দরজায়
একটা ছই-তোলা ইলিশ-শিকারী নৌকো এসে দাঁড়ায়
আমি ঘুমের ভিতরে জেগে উঠে
সেই নৌকার কাছে দৌড়ে নেমে যাই
আমি সেই নৌকোর গাব-মাখা গায়ে
বালকের মতো হাত বোলাই
সেই নৌকোয় বসে থাকা আমার ঠাকুরদাকে
আমি পৌঁছে দিই ঠাকুরমার হাতে সাজা এক ছিলিম তামাক
তারপর আমি নৌকোয় উঠে,
ঠাকুরদাকে পিঠে নিয়ে আমাকে খুঁজতে-আসা
উত্তাল পদ্মা নদীর
কলকাতা-ডোবানো ঘুর্ণিজলে
বৈঠা টেনে, সারা রাত, ভাটিয়ালি গাই
 
 

1 টি মন্তব্য:

উড়নচণ্ডী আউলাবাউল বলেছেন...

কি দারুণ ... কি দারুণ ... কি দারুণ
সেই গান থেকে আমারও জন্ম ।