“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

এসো চুমু খাই সংসদে বসে


কফালি চাঁদ আর বুনো আলু মেখে ভাত খেয়েছো কখনো! অথবা রাতের কুয়াশা গিলে নেশা  করেছো?
ভালবেসেছো রোদ্দুর কে? শীতে পিঠ খুলে দিতে আপত্তি নেই তোমার। গরম পড়লে প্যারিসের প্রসাধনী!


কাল রাতে তাই করেছি, মেঘেদের সাথে নেশায় বুদ হয়ে মুখস্থ করেছি ভালবাসার সংলাপ।
মহড়া করেছি বারবার ভালবাসার। ত্রিশ বছর পর নটি বিনোদিনী পালা শেষে বাড়ি ফেরার পথে, দত্তপুকুরের ঘাটে দাঁড়িয়ে ভেবেছি,
আজ ঢিল ছুড়ে দেব তোমার বাম বুকে। আহত শরীরে রক্ত ঝরে পড়লেই আমি ছুটে গিয়ে একটা বিক্রিয়া ঘটিয়ে দেব।
ব্ল্যাক হোলে ভালবাসা নামক একটা প্রোটন কণায় ছুঁড়ে দেব সূর্য রশ্মী। এরপর একটা বিস্ফোরণ!


দৈনিক পত্রিকার কার্বন গুলি কুয়াশায় ভিজিয়ে নেশায় বুদ আমি। পত্রিকা বেঁচে নেশা করি। নেশা বেঁচে পত্রিকা করি।
আজ চুমু খাওয়ার দিন।
আমার হাওয়াই চটিগুলি এলুমিনিয়ামের তারে জড়িয়ে সুর তোলে রাজপথে আমার সাথে হাটতে হাটতে।
আমার শ্বাস প্রশ্বাসে বেস গীটারের রিদম। শুনতে পাচ্ছো! আমার হৃৎপিণ্ডের
ওঠানামায় ড্রাম মেজরের জাতীয় সঙ্গীত। ডিলান বা কনার রেকর্ড নেই আমার দেরাজে। কি দিই তোমায় ভ্যালেন্টাইনের উপহারে!
আমার পাহাড়ের বুনোফুলে কোন গন্ধ নেই। নদীর জলকে দিতে পারি আরশি করে তোমায় উপহার। কিন্তু সেই আড়শি বড্ড ঘোলাটে। তোমার মুখ অস্পষ্ট দেখাবে।
আমি ভেবেছি আমার চোখের ছানি কোনদিন কাটবো না। প্রয়োজনে অন্ধ হব। আমার চোখে তোমার ঐ রুপের কাটাছেরা হয় প্রতিদিন। মনে রেখো আমি এই দুনিয়ার সবচেয়ে খারাপ মানুষটি একজন। ঘৃণা করো? আমার বয়েই গেছে।
করুণা করবে! প্রত্যাখান করবো। আমন্ত্রণ রইল, এসে দেখে যাও যারা ভাষা জানেনা, তাদের ভালবাসার কথা একবার শুনে যাও।
ম্যারলিন মনরোর পোস্টারে সেঁটেছি তোমার মুখ। শরীরটা তোমার নয়। যা দেখে আমার শরীর কোনভাবেই উত্তেজিত হয়নি কোনদিন।
প্রেম নামক ন্যাকা ন্যাকা কোন বিষয় নিয়ে তোমার সাথে কোন তর্ক করতে আমি নারাজ।


ভাবসঙ্গীত বাজবে না দৃশ্যপটে। এসো প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে চুমু খাবো, সংসদের ওয়েলে বসে। কোন বেওয়ারিশ শিশুকে কোলে তুলে নিয়ে ভিজে যাক তোমার ব্লাউজ! এসো, হাত ধর। সৃষ্টি যেভাবে চেয়েছিল নিজেকে স্পষ্ট করতে সেভাবে
আমার ভালবাসার বীজ বপন করে জানান দাও পৃথিবীকে, আজ শধু ভালবাসার দিন। আজ কনফেস করারও দিন। এসো চুমু খাই সূর্যের দিকে তাকিয়ে।

৫টি মন্তব্য:

Anup Sadi বলেছেন...

প্রেম ও ভালোবাসার সংগা বাংলা ভাষায় এখনো নির্দিষ্ট নয়। কবিতাটিতেও contradiction আছে। কবির নাম বোঝা গেল না।

সুশান্ত কর বলেছেন...

Anup Sadi, নিয়মিত ব্লগ ভ্রমণের জন্যে ধন্যবাদ। কবিতাটিতে প্রেমের সংজ্ঞা , কন্ট্রাডিকশন এই সব কথার দরকার আছে কি? প্রেমের অধপতিত চেহারাটিই তুলে ধরেছেন বলে, আমার কিন্তু কবিতাটি বেশ লাগল। 'কবির নাম বোঝা গেল না' বলে আপনি আমাদের বড় সাহায্য করলেন। সমস্যাটা নিয়ে আমরাও ভাবছিলাম। এখন দেখুনতো পোষ্টের ঠিক নিচে, মন্তব্যের ঠিক উপরে। লেখকের স্থান, নাম, সময় সব দেখাচ্ছে কি না? ব্যাপারগুলো আগে ইংরেজিতে ছিল। এবারে বাংলাতে করে দিলাম। এটা আমাদের আরো আগে করা উচিত ছিল।

ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় বলেছেন...

'কবিতাটি বেশ লাগলো'বললে একটু কম বলা হবে । আমি নির্ভেজাল কাব্য-পাঠক বলে অনেক কবিতাই পড়ি,পড়তে হয় । সমাজ-সময় সম্পর্কহীন ব্যক্তিক প্রেমের কবিতা বা কিছু 'শব্দের কঙ্কাল' কঙ্কাল পড় পড়োতে যখন ক্লান্ত হয়ে পড়ি তখন 'চুলের মুঠি ধরে টান মারা'র মত এরকম তীক্ষ্ণ কাব্য-উচ্চারণ একটা ঝাকুনি দিয়ে জানান দেয় 'দেখ হে, এটাই কবিতা' !প্রেমের অধঃপতিত চেহারাতাই শুধু তুলে ধরেননি কবি, প্রেম দিবসের নামে হ্যাংলা পনার প্রতিও তীক্ষ্ণ তির্যক আঘাত হেনেছেন । ধন্যবাদ কবিকে ।

Mitropokhyo বলেছেন...

Anup Sadi,ধন্যবাদ। আসলে প্রেম মানেই আজকের জেনারেশানের কাছে একটা খুব স্থুল বিষয়। আর এখানেই আমাদের প্রেম সম্পর্কিত যাবতীয় সংজ্ঞা পাল্টে যাচ্ছে দিনদিন। আমি কিন্তু এই গদ্য কবিতায় কোন সংজ্ঞা দিতে চাইনি। আমি চেয়েছি প্রেমের বা ভালবাসার সংজ্ঞা পাল্টে দিতে এই সময়ে দাঁড়িয়ে। কেন এতো রাখঢাক, সংসদের ওয়েলে বসে চুমু খেতেই পারি যদি সংসদটা আমার হয়। সুশান্ত'দা ধন্যবাদ। Anup Sadi আমি এজন্যই কৃতজ্ঞ থাকবো আপনি লেখাটি খুব ভালোবেসে পড়েছেন বলে। পাশে থাকবেন আশা করি।

Sabyasachi বলেছেন...

আমি তো বলবো, দুর্দান্ত...!!!
খুবই ভালো লাগলো ।