“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ২৭ মে, ২০২২

অরোভিল ওভারভিউ

।। জাহিদ রুদ্র ।।

'উনিভার্সাল টাউন' হিসেবে কল্পনা করা, অরোভিল হল একটি টাউনশিপ যেখানে বিভিন্ন সংস্কৃতি ও রীতিনীতির অন্তর্গত সারা বিশ্ব থেকে আসা ব্যক্তিরা মিলেমিশে বসবাস করে। অরোভিল পন্ডিচেরি শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং তামিলনাড়ুতে অবস্থিত। মিররা আলফাসা যিনি অরবিন্দের অনুসারী ছিলেন ১৯৬৮ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং শ্রী অরবিন্দ সোসাইটিতে সবাই তাকে "মা" বলে ডাকতেন।

 

যারা তাদের জীবনের কোলাহল থেকে বিরত থাকতে চায় এবং কিছুটা শান্তি পেতে চায় তারা অরোভিলে যান। এই স্থানটি সকলকে উন্মুক্ত করে স্বাগত জানায় এবং এটি অনেক ছোট সংগঠনের আবাসস্থল। এই সংস্থাগুলি আপনাকে অভ্যন্তরীণ আত্মার যুদ্ধে লড়াই করতে এবং ধ্যান, যোগব্যায়াম ইত্যাদির সাহায্যে আপনাকে শান্তি প্রদান করতে সহায়তা করে।

 

এগুলি ছাড়াও মাতৃমন্দিরকে অরোভিলের প্রাণকেন্দ্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই স্থানটি আপনার জীবনযাপনের পদ্ধতি এবং জীবনের প্রতি উপলব্ধি পরিবর্তন করবে। প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরা মাতৃমন্দিরের চারপাশের সবুজ আপনাকে চাঙ্গা করে। আপনি এখানে অনুষ্ঠিত সেশনের অংশ হতে পারেন যা আপনাকে অরোভিলের উদ্দেশ্যগুলির সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে এবং আপনাকে জীবন সম্পর্কে আপনার উপলব্ধি প্রসারিত করতে সহায়তা করবে।

 

অরোভিলকে বলা হয় এক্সপেরিমেন্টাল গ্রাম। এই গ্রামে ৬০ টি দেশের প্রায় ৩০০০ মানুষ বাস করে। এই গ্রামে কোন ধর্ম নেই, গোত্র নেই, রেস নেই, রাজনীতি নেই, দেশ ও জাতীয়তা নেই। এই গ্রামের একমাত্র আদর্শ হিউম্যানিটি! মানুষ বড়-ছোট যে কাজই করুক তার বেতন একই, ১২০০০ টাকা। ডাক্তারের বেতনও ১২,০০০; চতুর্থ বর্গ থেকে শুরু করে আরও নিম্ন বর্গের বেতনও ১২,০০০। মানুষের বিলাসিতার জন্য অর্থ উপার্জনের প্রতিযোগিতা নেই, শান্তি ও সুরক্ষার এক আদর্শ জনপদ এই অরোভিল। গ্রামে কোন ধর্মীয় উপাসনালয় নেই।এই গ্রামের শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান সবই কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে। গ্রামটিতে জাতিসংঘ, ইউনেস্কো অনেক টেককেয়ার করে কারণ গ্রামটি এক্সপেরিমেন্টাল। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এই গ্রামে অপরাধ নেই, নেই মানে ০%, জিরো পার্সেন্ট। বাংলায় তেমন কোন প্রবন্ধ পাবেন না, তবে ইংরেজিতে Auroville লিখে সার্চ দিলে ইন্টারনেট ও ইউটিউবে অনেক রিসোর্স পাবেন।

শুধুমাত্র হিউম্যানিটির উপর বেস করে একটা গ্রাম কতটা সফল হতে পারে, পৃথিবীতে মানুষের টিকে থাকতে গেলে যে হিউম্যানিটি ও একতা ছাড়া কোন বিকল্প নেই তার একটা এক্সপেরিমেন্ট এই গ্রাম।

তথ্যসূত্রঃ
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Auroville
https://auroville.org/
https://www.holidify.com/places/auroville/


কোন মন্তব্য নেই: