“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

নিয়তির মিহিদানা

।। অভীককুমার দে।।

উপস্থাপন চলছিল,
উপ স্থাপন চলছে,
হয়তোবা এভাবেই, চলবে...
কিন্তু কোন সিদ্ধান্তের দিকে!

এক দর্শন।
দর্শক একক, মধ্যমণি।

একটি মঞ্চ,
দুদিকে দরজা
পর্দায়, অদৃশ্য থেকে ফুটে ওঠছে শরীর, যাবতীয় চরিত্র।
প্রবেশ পথের দরজা খুলে গেলে
দৃশ্য অথবা একটি দিন আঁধার শেষ, কালো দাগ পড়ে।

আঁধার থেকে উপস্থাপন চলছিল যেমন
তেমনি চলছে, যদিও প্রতিস্থাপন বলেন কেউ,
আমি বলি ভিন্নতার শিশু
দিনের আলো নিভে গেলেও খেলা ভোলে না,
কোনও বেসুরো চলন উঠে আসে শুধু
কড়া নাড়ে,
দৃশ্য বদল হলেই স্থানচ্যুত,
শরীর চ্যুতি ঘটে এবং
প্রস্থানের পথ খুঁজে হেঁটে যায় শরীর।

মধ্যমণি টের পায়--
প্রস্থানের পথেই হাঁটছে সব।
আগে- পরের শেকলসময়
পড়ে থাকে স্মৃতি কিংবা চ্যুতিরেখা,
বাকি সব কল্পনা
ভর শূন্য;
ভারি।

ভারি হতে থাকে শরীর
ভাবনায় মেঘের চাতাল
নরম বেড়া
ধোঁয়াশায় উপর খড়
ঝুরঝুরে চাল।
বৃষ্টি আসে
মাটি ভিজে
ভিজে মাটি মাটির পর !
কেবল সরে যায় আর সরে আসে,
এমন সরণ চিতা জ্বালে
চিতা জ্বলে বুকে।
সব জ্বলে ঘোলা রঙ
কিছু ধোঁয়া কিছু ধুলো জেগে
ঘুরতে থাকে আর ছুটতে থাকে।

কোথাও চোখ আছে
দেখছে সব চোখ
চোখের ভেতর উল্টে আছে ছবি।

যদিও চোখের চোখে উল্টো ছবি
ঝুলে আছে ঝুলতে থাকা দোলনায়, তবু
পাপড়ি বোঝে না,
লুকিয়ে রাখে,
গুছিয়ে রাখে গোপনীয়তা।
লাশের ভিড় বাড়ছে
নদী মরছে একটু একটু
একেকটি মঞ্চ ফাঁকা, একা...

একা তবুও একা নয়।
একের পিছে অনেক, শুধু একতা নেই।
এক সূর্য।
এমন অনেক সূর্য হারিয়ে গেছে,
হারিয়ে যায় প্রতি দিন
কত সুকান্ত নিঃশেষ রাস্তায়
কত প্রভাত খুলতে পারে না মুখ!

ফুলের ঘুম ভাঙার আগে উড়ে গেছে যে পাখি
সুবাস নিতে আসে কত লোক
এদের ভেতর সুভাষ নেই
সুভাষ গেছে
কোথাও নেই সুভাষ,
একটিও নেই,
একটিও নেই!
কারও সুভাষ নেই!

এসময় সুবাস ছাড়া কিছুই হয় না,
তখন দেখেও দেখেনি কেউ
এখন জেনেও না জানার অভিনয়
ঘরে ঘরে ষড়যন্ত্রে;
মৃত সব।

সবকিছুই টের পায় মধ্যমণি,
তাই একটি নদী জেগে ওঠে
পাড় ভাঙে বুকের ভেতর
দুভাগ হয়
দুদিক ভাসে
বোবা শব্দ ঝুলে থাকে তার কাঁটায়।

তারকাঁটা আকাশ দেখছে
এদিকের শূন্যতায় থরথর থর মরু,
বুকের ওদিকে জলচঞ্চলতা,
নিচের জল আরও গড়ায় নিচে।
একদিকে পরিচালক অন্যদিকে মধ্যমণি
মাঝে মঞ্চ, অগণিত মঞ্চ
মঞ্চের ভেতর মঞ্চ,
অভিনয়ের অভিনয় এবং বিনিময়।

এ সময় বিকৃত সুখের,
এতে- ওতে গলা কাটা প্রেম।
কেউ খেলছে,
কেউ দেখছে,
চেয়ে দেখি-- হাতে হাত,
হাতের তালুতে বারুদের আলপনা,
মৃত্যু পার্বন।

কিংবদন্তি উইপোকা তুলে রাখে নিয়তির মিহিদানা।

কোন মন্তব্য নেই: