।। নীলদীপ চক্রবর্তী।।
এ বছরের গোড়ার দিকে ‘আলোকবর্ণা’ এবং শেষের দিকে ‘চন্দ্রাহত’ হাতে এসে পড়ল। দুটিই কবি দেবলীনা সেনগুপ্তের প্রথম এবং দ্বিতীয় কবিতার বই। দ্বিতীয় বই চন্দ্রাহত পড়তে পড়তে ভাবছিলাম জীবন দর্শন নিয়ে কবি যেভাবে নিজেকে উজাড় করেছেন বইটির প্রতি পৃষ্ঠায়, তাতে এই বই সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা যায় না, শুধু বিস্মিত হতে হয় । ভাবতে হয়, এ কোন ছায়াময় চরাচরে, কোন নিসর্গে দেবলিনা আমাদের সফরে নিয়ে যাচ্ছেন আর পথে ছোট বড় নূরী পাথরে হোঁচট খাবার সময় মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে এই মায়া-শব্দের কুয়াশা চাদরের ঠিক পেছনেই রয়েছে আমাদের চির পরিচিত কান্না হাসির সাধারণ জগতটি। ছোট ছোট পংক্তিতে দু তিনটি শব্দ ব্যবহারের কবির যে সিগ্নেচার স্টাইল, সেই মুনশিয়ানা যথাযথ রেখে তিনি ছুঁয়ে গেছেন বাস্তব এবং কল্পনার অসংখ্য অনুভুতি । বই এর শুরুতেই মানুষ হবার আহ্বান ছিল, মাঝখানে মানবিকতার গুণে সমৃদ্ধ হবার রসদ এবং শেষে প্রেম ও ক্ষমাহীন সত্তার যুপকাষ্ঠে বিলীন হবার তির্যক সংকেত এই কাব্যপুস্তিকাটিকে সাধারণ মানুষের জীবন দর্পণ করে তুলেছে ।
এ বছরের গোড়ার দিকে ‘আলোকবর্ণা’ এবং শেষের দিকে ‘চন্দ্রাহত’ হাতে এসে পড়ল। দুটিই কবি দেবলীনা সেনগুপ্তের প্রথম এবং দ্বিতীয় কবিতার বই। দ্বিতীয় বই চন্দ্রাহত পড়তে পড়তে ভাবছিলাম জীবন দর্শন নিয়ে কবি যেভাবে নিজেকে উজাড় করেছেন বইটির প্রতি পৃষ্ঠায়, তাতে এই বই সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা যায় না, শুধু বিস্মিত হতে হয় । ভাবতে হয়, এ কোন ছায়াময় চরাচরে, কোন নিসর্গে দেবলিনা আমাদের সফরে নিয়ে যাচ্ছেন আর পথে ছোট বড় নূরী পাথরে হোঁচট খাবার সময় মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে এই মায়া-শব্দের কুয়াশা চাদরের ঠিক পেছনেই রয়েছে আমাদের চির পরিচিত কান্না হাসির সাধারণ জগতটি। ছোট ছোট পংক্তিতে দু তিনটি শব্দ ব্যবহারের কবির যে সিগ্নেচার স্টাইল, সেই মুনশিয়ানা যথাযথ রেখে তিনি ছুঁয়ে গেছেন বাস্তব এবং কল্পনার অসংখ্য অনুভুতি । বই এর শুরুতেই মানুষ হবার আহ্বান ছিল, মাঝখানে মানবিকতার গুণে সমৃদ্ধ হবার রসদ এবং শেষে প্রেম ও ক্ষমাহীন সত্তার যুপকাষ্ঠে বিলীন হবার তির্যক সংকেত এই কাব্যপুস্তিকাটিকে সাধারণ মানুষের জীবন দর্পণ করে তুলেছে ।
স্বনামধন্য কবি সঞ্জয় চক্রবর্তীর ভূমিকা, ভিকি পাবব্লিসার্স কর্মীদের নিষ্ঠা ও সুন্দর
বাধাই চোখ ও মনের আনন্দ দিল । কবির সৃষ্টিশীল দীর্ঘজীবন কামনা করি।
****************
স্বদেশে স্বজাতির বিপন্নতা যখন কবিকে ভাবায় ও
কাঁদায় তখন যে সংকলন তৈরি হয় তার নাম ‘অশ্রুকথা মিশ্র আলাপে’ । তপন মহন্তের সাম্প্রতিকতম কবিতার
বইটির এই শিরোনাম । কবিতার আলংকারিক কল্পরাজ্যকে পেছনে রেখে কঠিন বাস্তবের রূঢ়তাই বার বার উপজিব্য হয়ে উঠেছে
তপনের কবিতার। ধর্ম, রাজনীতি, প্রেম এই সব চেনা বিষয় খুব সাধারণ ভাবে কিজানি
কি অসাধারণ ব্যঞ্জনা নিয়ে ফিরে ফিরে আসে এই বইটির পাতায় পাতায়, ভাবতে অবাক লাগে! কবি যে শুধু স্বপনচারিণী নন, বরং সচেতন শব্দজীবী, স্বজাতির পাশে নিজের কলমকে দাঁড় করিয়ে তিনি তাই
প্রমাণ করলেন এই কবিতার বইতে। চমত্কার ছাপা এবং বাধাই এর জন্য ভিকি পাবলিশার্সকে
সাধুবাদ । অভিনন্দন হে কবি!
****************
বাংলা কবিতার
সুদীর্ঘ ইতিহাস, মহাকাব্য বা
পুরাণের গল্পগাথার সঙ্গে জড়িয়ে পাড়ি দিয়ে এসেছে বেশ কয়েকটি যুগ। সেইসঙ্গে
তাকে যুগ প্রয়োজন ও সামাজিক দায়বদ্ধতা মেনে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর নতুন আঙ্গিক,
সজ্জা, বিন্যাস ইত্যাদি
দিয়ে সাজিয়ে চলেছেন একনিষ্ঠ কাব্য-সাধকেরা। উত্তর পূর্বের যে কবিরা বাংলা
কবিতাকে আগামী পাঠকের জন্য কঠোর পরিশ্রমে লালিত করে চলেছেন কমলিকা মজুমদার তাঁদের মধ্যে অন্যতম!
২০১৬র ডিসেম্বরএ প্রকাশিত কমলিকার প্রথম কবিতার বই তিনি নিজে ডাকযোগে পাঠালেন, সেই সঙ্গে পেলাম একটি ছোটখাট
কবিতা-খনি!ইতিপূর্বে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ওর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু একটি সংকলনের অভাব আমরা অনুভব
করছিলাম। আধুনিক সময়ের এক জাগ্রত ও
সুচিমুখ উপস্থাপন কবির বই ‘কুয়াশায় ভেজা টাইমলাইন’ । অত্যন্ত যত্নে, নৈপুন্যে ও সংযমে এক একটি কবিতা দিয়ে তিনি এই
সময়ের বিভিন্ন স্তরে আঘাত হেনে গেছেন। ইংরেজি শব্দের সাহসী ব্যবহার তাঁর প্রথা
ভাঙার বোহেমিয়ানার প্রকাশ। নিকৃষ্ঠ সমাজনীতি, বিকৃত ধর্মব্যাখ্যা, শোষণ ও নারী এই সব বিষয়ের ওপর তীব্র কশাঘাত করা
তাঁর কবিতা কিন্তু সৌন্দর্য স্নিগ্ধতা বা শাশ্বত কাব্য থাকার অঙ্গীকার থেকে
বিচ্যুত হয়নি। ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থায কমলিকার মতো প্রতিবাদী কলম অনলস ভাবে এক
প্রকৃত কবির দায়ভর বয়ে চলেছে, ‘কুয়াশায় ভেজা টাইমলাইন’ পড়া শেষে স্তব্ধ হয়ে পাঠককে আমরা এই ভাবেই
ভাবাবে!
বরাবরের মতো ভিকি পাবলিশার্স এর মুদ্রণের প্রশংসা
না করে পারা যায় না। বইটির শুরুতে লেখকের নিজস্ব কথা, প্রাককথন বা ভূমিকা থাকলে অসংগত হত না। কমলিকা
আরো লিখুন, আপনার কবিতা-অস্ত্র ক্রমশ ধারালো
হোক!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন