“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২০

আম্ফান

 
(C)Image:ছবি

 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
।। সুপ্রদীপ দত্তরায় ।।


সাফাই বিভাগের একজন কর্তাব্যক্তি
এক অতিথির সাথে প্রাতঃভ্রমনে --
যেদিকেই যান মোড়ে মোড়ে আবর্জনা স্তূপ
এক মেঘ কুন্ঠা নিয়ে উনি বিড়বিড় করে বললেন,
"এত চেষ্টা করি তবু --"
আমি তখন ঠিক পাশেই দাঁড়িয়ে,
বললাম, এ লজ্জা আপনার নয় সাহেব,
                                     আমাদের।
আপনার তবু বোধটুকু আছে
                    আমাদের তাতেও তলানি।

মলের সামনে প্রায় উলঙ্গ মহিলাটি বসে
ভিড় ঠাসা কামাতুর চোখেও 
                                 ‌আশ্চর্য নির্লিপ্ততা
অযত্নে অবক্ষয়ের এক প্রতিমূর্তি
কারো মেয়ে সে, বোন কিংবা হয়তো কারো মা।
মলের ঠিক সামনেই সিঁড়িতে বসা।
হাটের মতো খোলা দুটো বুক --
এখন সেখানে জৈষ্ঠ্যের খরা,
কোন এককালে সেও স্রোতস্বিনী ছিল
কাল গেলেও কালিমা থেকে গেছে।
সাবানহীন একখন্ড কটিবন্ধন
এককালে শাড়ি কিংবা গামছা ছিল হয়তো
সুযোগের ফায়দা নিয়ে সেও প্রতিবাদী,
এতটুকু অসতর্কতায় ঝড়ের ঝাপটা আনে।
একদল নতুন তরুণ মজা নিচ্ছিলেন
অথচ মহিলাটি আশ্চর্য রকম নির্বিকার।
আমার সাথে চোখাচোখি হতেই কেন জানিনা
লজ্জা কূন্ঠার চাদর চাপিয়ে দিলে গায়ে।
আমি নিমেষে চোখ নামিয়ে বললাম
এ লজ্জা তোমার নয়, আমাদের।
তুমি তবু শরীরে উলঙ্গ মা, আমরা যে মনে!

সকালে কাগজ খুলেই শিউরে উঠল বুক
নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছিল না কিছুতেই।
খবরের কাগজে আস্থা রাখিনা কোনকালেই
ওদের উদর জুড়ে ভেজাল চাল 
                      আর সারের ফুলকপি ।
তবু যদি তার খানিকটাও সত্যি হয়
ঈশানের মেঘ শুধু তোমার জন্য নয় "গোমস্"
আম্ফান সবার জন্যেই আসছে।

কোন মন্তব্য নেই: