“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ৮ মে, ২০১৫

বৈশাখের পঁচিশে ...

(C)Image:ছবি
































 ।। মনোজিৎ দত্ত।।

বেড়ার ফাঁক দিয়ে সাতসকালেই
রোঁদের উঁকি-ঝুঁকি ... একটু বাড়াবাড়ি
ঘর ছেড়ে দু-কদম এগিয়ে পুকুরপাড়ে
সূর্যকে চুপি চুপি জিজ্ঞেস করলাম
আজ যেন খুব খুশী খুশী ...
সূর্যের ঝটপট উত্তর
বাঃরে ... আজ যে জন্মদিন
আজ যে পঁচিশে বৈশাখ ...
পুকুরের জলে যেন সমুদ্রের ঢেউ
সবাইও বাঁধন ছাড়া শাসন মানেনা কেউ
পুঁটি-কাতলা রুই, শিং-মাগুর-কই
সবাই নাচছে ... যেন তা তা থৈ থৈ
গাছে গাছে-ডালে ডালে ফুল আর ফুল
ঘরের সামনের করবি গাছটাকে বললাম
তোমরা যে সবাই আজ আহ্লাদে আটখানা
এত ফুল এত রঙ এত মুনশিয়ানা!
হলুদ করবী বলে ...
রঙ ছড়াবো যে ... আমরা খুশিতে ঝলমল
কী দিয়ে সাজাবে বলো ... তাঁর রাঙা চরণতল...
হঠাৎ ঝমঝম বৃষ্টি ... ডেকে বললাম
একি অনাসৃষ্টি! আজ নাইবা আসতে ...
বলে সে অভিমানে
তোমাদের আনন্দ-যজ্ঞে আমার বুঝি আসতে মানা
আমি যে ধুয়ে মুছে দেবো - ভুবন-জোড়া আসনখানা
বাতাসে যেন নবযৌবন...উচ্ছল উচ্ছ্বাস
তার মুখেও সেই খুশি
শাল-সেগুন-বট, আম-কাঁঠাল-জাম
বৃষ্টিতে স্নান সারা হলে ... সবারই এক কথা -
বাতাস যেন তাদের নুইয়ে দিয়ে যায় মাথা ...
উঠোনে হাজার পাখির কিচিরমিচির
বললো সবাই ... উল্লসিত মনে
আজ জোছনা রাতে সবাই যেও বনে ...
মুহূর্তেই সব ঝরঝরে-ঝকঝকে
আকাশে ব্যাপ্ত নীল ... ইঙ্গিতে ইশারায় বলছে
আমার দিকে তাকাও ... আমায় কেমন লাগছে?
... দূর থেকে কে যেন তখন গেয়ে উঠলো
ঐ নীল দিগন্তে সুরের আগুন লাগলো” ...
সন্ধ্যা হয়ে এল পশ্চিম আকাশে আবিরমালা
হলুদ ধানের ক্ষেত ... টুকটুকে সোনার থালা
হাত নাড়িয়ে সূর্যকে বিদায় জানাতেই
আকাশে তারারা মিটিমিটি হাসছে ...
গায়ে গায়ে লেগে আছে যেন নীল চাদরে চুমকিচ্ছটা
আকাশে বাতাসে এক অবাক লুকোচুরি
তারারাও বলছে হেসে ... আয় তবে সহচরি” ...


কোন মন্তব্য নেই: